skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

মেটালের বাসনে রান্না করেন? কোন কোন বাসন রান্নার জন্য নিরাপদ নয় জানুন।

মেটালের বাসন

হাঁড়ি, কড়াই, বা পাতিল শুধুমাত্র যে খাবার রান্নার কাজই করে তা কিন্তু না। বরং এগুলো স্বাস্থ্যের উপরেও প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে। মাটির বাসন রান্নার জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ, কিন্তু মেটালের বাসনে রান্না করার আগে চিন্তাভাবনা করা উচিত।

সব মেটাল রান্নার জন্য নিরাপদ না। কাজেই কোন কোন মেটালের বাসন রান্নার জন্য অনিরাপদ তা জেনে রাখা জরুরি।

১. চকচকে কোটিংযুক্ত বাসনঃ

যদি বাসনে চকচকে কোটিং দেওয়া থাকে তাহলে তা রান্নার কাজে ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ রান্না করার সময়ে এই কোটিং খাবারের সাথে মিশে ফুড পয়জনিং তৈরি করে। যেমন কিছু কিছু তামা বা পিতলের বাসনে আলাদা মেটালের কোটিং দেওয়া থাকে যাতে তামা বা পিতল খাবারের সাথে বিক্রিয়া করতে না পারে। দীর্ঘদিন ব্যবহারে এই কোটিং আলগা হয়ে যায়। ফলে কোটিং তো খাবারে ডিসলভ হয়ই, বেস মেটালও বিক্রিয়া করে বিষ ক্রিয়ার সৃষ্টি করে। তাই চকচকে কোটিং দেওয়া বাসন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

২. ননস্টিক কুকওয়্যারঃ

ননস্টিক কুকওয়্যার গুলোতে বেশির ভাগ সময়ে টেফলনের কোটিং দেওয়া থাকে। উচ্চতাপে রান্না করলে টেফলন তুষারকণার মতো উঠে আসে এবং খাবারের সাথে মিশে যায়। আবার উচ্চতাপের সাথে টেফলন বিক্রিয়া করে বিষাক্ত ধোঁয়ার সৃষ্টি করে। যদিও বর্তমানে টেফলনের ব্যবহার নিষিদ্ধ, তবুও চট করে বোঝা যায় না কোন ননস্টিক প্যানে টেফলন আছে কোনটাতে নেই। তাই ননস্টিক প্যানের ব্যবহার যতোটা সম্ভব কম করতে হবে। যদি করতেই হয়, তাহলে হাই হিটে রান্না করা যাবে না। লো অথবা মিডিয়াম হিটে রান্না করতে হবে প্লাস্টিক বা কাঠের খুন্তি দিয়ে।

৩. তামাঃ

তামার গ্লাস বা বাটি থেকে জল পান করা নিরাপদ। কিন্তু তামার বাসনে রান্না করা বিপদজনক হতে পারে। তামা বা কপার খাবার অনেকক্ষণ গরম রাখতে সাহায্য করে। এর জনপ্রিয়তা বেশি। রান্না করা খাবার তামার হাঁড়িতে ঢেলে রাখলে কোন সমস্যা হবে না। তবে তামার কড়াই বা হাঁড়িতে টক ও নোনতা খাবার রান্না করাও যাবে না আবার রাখাও যাবে না। কারণ নোনতা খাবারের আয়োডিন ও টক খাবারের অ্যাসিড তামার সাথে বিক্রিয়া করে। ফলে বমি, ডায়রিয়া, এবং পেটব্যথা হয়। ননস্টিক প্যানের মতো তামার ক্ষেত্রেও হাই হিট বিপদজনক। তামার হাঁড়িতে টক ও নোনতা খাবার বাদে অন্য যেকোন খাবার লো হিটে রান্না করা যাবে।

৩. অ্যালুমিনিয়ামঃ

সহজে ক্লিন করা যায় বলে ননস্টিক, স্ক্র্যাচ-রেজিস্টেন্ট অ্যানোডাইজড অ্যালুমিনিয়াম বাসনের কদর বেশি। এতে খাবার পরিবেশন করলে দেখতেও ভালো লাগে। কিন্তু অ্যালুমিনিয়ামের বাসনে রান্না করলে খুব তাড়াতাড়ি গরম হয়ে যায়৷ যা থেকে হাতে ফোস্কা পড়তে পারে। আবার এই ধাতু টমেটো, ভিনেগারের মতো অ্যাসিডিক খাবারের সাথে বিক্রিয়া করে। ফলে এতে রান্না করা খাবার পেটে গেলে পেটব্যথার উদ্রেক করে এবং শরীরে টক্সিনের উৎপাদন করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, অ্যালুমিনিয়ামের কুকওয়্যার আলজেইমার্স রোগের একটি কারণ হতে পারে। যেসব অ্যালুমিনিয়াম বাসনের কোটিং ভাল থাকে না সেসব বাসন গ্যাসের তাপে সহজে গলে যায়।

৪. সিরামিক কুকওয়্যারঃ

এই ধরণের কুকওয়্যারে সীসা থাকে যা অ্যাসিডিক খাবার বা ভিনেগার মিশ্রিত খাবারে মিশে গিয়ে স্বাস্থ্যহানি ঘটায়। তবে নন-অ্যাসিডিক খাবার বা দুধের সাথে সীসা খুব বেশি বিক্রিয়া করে না। আবার সিরামিকের বাসনে গরম লিকুইড খাবার যেমন চা, কফি, স্যুপ রাখা বিপদজনক। এতে সীসা বেশি মিশে যায়। কিন্তু ঠান্ডা লিকুইড বা কোমল পানীয় রাখলে তুলনামূলক ভাবে কম সীসা মিশে। অ্যান্টিক, ক্রাফট, বা সৌখিন ধরণের সিরামিক কুকওয়্যারে সীসার পরিমাণ অনেক বেশি থাকে।

৫. পিতলঃ

পুরনো আমলের মানুষ পিতলের বাসনে রান্না করতেন। তারা বিশ্বাস করতেন পিতলের বাসনে রান্না স্বাস্থ্যের পক্ষে মঙ্গলজনক। আধুনিক যুগে যাদের ট্র্যাডিশনাল পদ্ধতিতে রান্না করার ঝোঁক আছে তারা পিতলের বাসন ব্যবহার করে থাকেন। হেভিওয়েট ফুড, যেমন মাংস, বিরিয়ানি ইত্যাদি সুসিদ্ধ এবং সুস্বাদু করতে অনেকক্ষণ ধরে রান্না করা লাগে। যা পিতলের বাসন দিয়ে করা সম্ভব হয়। কিন্তু পিতলে রান্না যে স্বাস্থ্যের জন্য প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিকর এটা হয়তো অনেকেই এখনো জানেন না। উচ্চ তাপমাত্রায় নোনতা এবং অ্যাসিডিক খাবারের সাথে পিতল বিক্রিয়া করে ফুড পয়জনিংয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আবার পিতল অনেক ভারী তাই খাবারভর্তি পিতলের হাঁড়ি উঠাতে গেলে হাড়ে চাপ পড়তে পারে। তাই রান্নার কাজে পিতলের বাসন ব্যবহার করা উচিত না। তবে পিতলের থালা-গ্লাসে খেলে কোন সমস্যা হবে না।

৬. স্টেইনলেস স্টিলঃ

প্রকৃতপক্ষে স্টেইনলেস স্টিল হচ্ছে খাবার রান্না করার জন্য নিরাপদ। এটি অ্যাসিডিক খাবারের সাথে বিক্রিয়া করে না। কিন্তু স্টেইনলেস স্টিলও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই স্টিল তৈরি হয় ক্রোমিয়াম, নিকেল, কার্বন, এবং সিলিকনের সংমিশ্রণে। ধাতব সংমিশ্রণ যদি ভালোমানের না হয় তাহলে এই উপাদানগুলো রান্নার সময়ে খাবারে মিশে যায়। তাই স্টেইনলেস স্টিলের বাসন কেনার আগে এর কোয়ালিটি এবং ডিউর‌্যাবিলিটি ভালো করে দেখে নিতে হবে।

Article Tags:
Article Categories:
Food-kitchen-insights

Comments

  • তাহলে কোন পাত্রে সবধরনের রান্না করা যাবে?

    Enamul August 27, 2023 12:27 pm Reply
    • মাটির বাসন, স্টিলের বাসন।

      currynaari August 27, 2023 2:59 pm Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *