skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

ব্লেন্ডার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম ও ব্লেন্ডার দিয়ে কি কি করা যায় জেনে নিন

ব্লেন্ডারে জল ঢালছে

রান্নাঘরে একটি ব্লেন্ডার মেশিন থাকলে মসলা পেষা, জুস বানানো ইত্যাদি কাজ সহজে করা যায়। ব্লেন্ডারের কল্যাণে ভারি বাটনা বাটার কাজ থেকে রেহাই মিলে বলে পিঠ, হাঁটু, হাতে ব্যথা হয় না। তবে ব্লেন্ডার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম না জানলে অল্পদিনেই নতুন ব্লেন্ডার নষ্ট হয়ে যায়। আজকে আপনাদের জানাবো ব্লেন্ডার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম এবং ব্লেন্ডার দিয়ে কি কি করা যায় এবং কি কি করা যায় না সে সম্পর্কে। 

ব্লেন্ডার ব্যবহারের নিয়মঃ

নতুন কেনা ব্লেন্ডার অনেকদিন পর্যন্ত নতুন আর ধারালো রাখতে চাইলে এই নিয়মগুলো অনুসরণ করুন। 

১. ব্লেন্ডারের ভিতর পরিষ্কার রাখুনঃ

নতুন অবস্থায় কিনে আনার পরে ব্লেন্ডারের ভিতরের দিকটা ভালো করে পরিষ্কার করে নেবেন। কারণ সেখানে রাসায়নিক দ্রব্য ও ধুলাবালি জমে থাকতে পারে। আবার অনেকদিন অব্যবহৃত থাকার পরে যখন ব্লেন্ডার ব্যবহার করবেন তখন বাইরের সাথে ভিতরটা ভালো করে পরিষ্কার করবেন। ব্লেডটি যদি ডিটাচ্যাবেল হয় তাহলে ব্লেডটি খুলে ভিতরের অংশ কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করুন। ব্যবহার চলাকালীন সময়ে কয়দিন পর পর পরিষ্কার করলে ব্লেন্ডার অনেকদিন ভালো থাকে। 

২. সঠিকভাবে প্লাগ লাগিয়ে নিনঃ

ব্লেন্ডারের সাথে থাকা প্লাগটি সঠিকভাবে প্লাগ ইন করবেন। ভুল আউটলেটে প্লাগ ইন করতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আবার বহুদিন অব্যবহৃত থাকলে চেক করে নেবেন প্লাগের তারে চিড় ধরেছে কিনা বা ফেটে গিয়েছে কিনা। 

৩. ঢাকনা ব্যবহারে সাবধানঃ 

ব্লেন্ডারের ঢাকনা কাচের হলে সাবধানে হ্যান্ডেল করতে হবে। যখন ব্লেন্ডার ব্যবহার করবেন, তখন জারের সাখে ঢাকনা ভালো করে লাগিয়ে নেবেন। নয়তো চালু করার পরে ঢাকনা ছিটকে পড়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে ঢাকনা এক হাত দিয়ে চেপে রাখতে পারেন। তাহলে আর ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে না। 

৪. উপকরণ বাছাই করুনঃ

যেসব উপকরণ ব্লেন্ডারে ঢালতে যাচ্ছেন তা যেন ছোট ছোট করে কাটা থাকে। বড় সাইজের উপকরণ ব্লেন্ড করতে গেলে মেশিনের উপর চাপ পড়ে। শক্ত ও নরম উপকরণ একসাথে ব্লেন্ড করতে চাইলে আগে নরম উপকরণগুলো ব্লেন্ড করে নেবেন। তারপরে শক্ত উপকরণগুলো দেবেন। এতে ব্লেন্ডিং ভালো হবে। যেমন স্মুদি বানাতে গেলে আগে জল, দুধ বা দই দিয়ে ব্লেন্ড করে নেবেন। তারপরে একটু একটু করে ফল, সবজি দিয়ে ব্লেন্ড করবেন। সবশেষে বরফের টুকরা দিয়ে আবার ব্লেন্ড করবেন। একবারে সব ঢেলে ব্লেন্ড করলে মিক্সচারটা মসৃণ হবে না। 

৫. ব্লেন্ডারের শব্দ কমাতে ম্যাট ব্যবহার করুনঃ

ব্লেন্ডারের ঘড়ঘড় শব্দ যথেষ্ট বিরক্তিকর। এ থেকে বাঁচতে ব্লেন্ডারের নিচে সিলিকন ম্যাট ব্যবহার করুন। তাতে শব্দ ও ভাইব্রেশন দুটোই কম হবে।

৬. কম স্পীডে ব্লেন্ডার চালু করুনঃ

প্রথমেই হাই স্পীডে ব্লেন্ডার চালু করবেন না। শুরুতে লো স্পীডে ব্যবহার করবেন, পরে আস্তে আস্তে প্রয়োজন বুঝে স্পীড বাড়াবেন। এতে ব্লেন্ডার অনেকদিন ভালো থাকবে।

৭. প্রয়োজন বুঝে ব্যবহার করুনঃ

জুস তৈরি বা মসলা পেষার জন্য প্লাস্টিকের ব্লেন্ডার ব্যবহার করবেন। মাংসের কিমা, রাইস ফ্লাওয়ার বানানোর জন্য স্টিলের ব্লেন্ডার ব্যবহার করবেন। 

৮. ব্লেন্ড করে পরিষ্কার করুনঃ

বাইরের দিকটা ভেজা কাপড় দিয়ে ঘষতে পারবেন। কিন্তু ভিতরের দিকটা পরিষ্কার করার জন্য ভিতরেই ক্লিনার দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ডারের জার অর্ধেক জলপূর্ণ করে তাতে পরিমাণ মতো লিকুইড ডিশ ওয়াশিং সোপ ঢেলে দিন। তারপরে ৩০ সেকেন্ড ব্লেন্ড করুন। ভিতরের অংশ নিমেষেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। আপনাকে মাজুনি দিয়ে ভিতরটা আর ঘষতে হবে না। সাবান জল ফেলে পুনরায় শুধু জল ঢেলে ব্লেন্ড করুন। এতে সাবানের ফেনা চলে যাবে।

৯. ব্লেডের ধার ঠিক রাখুনঃ

ব্যবহার করতে করতে ব্লেডের ধার ভোঁতা হয়ে গেলে ডিমের খোসা ব্যবহার করুন। ৫-৬ টি ভাঙা ডিমের খোসা আর অল্প জল ব্লেন্ডারে দিয়ে ৩০ সেকেন্ড ব্লেন্ড করুন। এতে ব্লেডের ধার বেড়ে যাবে। 

১০. নষ্ট অংশটি পাল্টে ফেলুনঃ 

ব্লেন্ডারের যেই পার্টটি নষ্ট হয়ে গেছে শুধু সেই পার্টটি ফেলে দিয়ে নতুন করে কিনুন। ব্লেন্ডারের বিভিন্ন পার্ট আলাদা কিনতে পাওয়া যায়। এতে করে একটি পার্ট নষ্ট হলে পুরো মেশিন পাল্টাতে হবে না। 

ব্লেন্ডার দিয়ে কি কি করা যায়ঃ

  • বিভিন্ন লিকুইড খাবার, যেমন জুস, স্মুদি, কোল্ড কফি, মিল্ক শেক, লস্যি, স্যুপ ইত্যাদি বানাতে পারবেন।
  • গোটা মসলা গুঁড়ো করতে ও পিষতে পারবেন। এছাড়াও মসলার মিক্সচার বানাতে পারবেন।
  • মাংস কিমা করতে পারবেন। 
  • সস বানাতে পারবেন। 
  • পরিমাণ মতো ময়দা, ডিম, দুধ/জল, এবং ভ্যানিলা এসেন্স দিয়ে প্যান কেকের ব্যাটার তৈরি করতে পারবেন।
  • বাজারে রেডিমেইড চালের গুঁড়ো, ওটস পাউডার, আইসিং সুগার কিনতে পাওয়া যায়। চাইলে ঘরে বসে ব্লেন্ডারে এসব জিনিস বানাতে পারবেন কয়েক মিনিটে। 
  • যারা ফ্লাফি এগ খেতে পছন্দ করেন তারা ব্লেন্ডারে ডিম ভালো করে ফেটিয়ে নিতে পারেন। তাহলে হাতে ডিম ফেটানোর ঝামেলা করতে হবে না। 
  • খাদ্য বর্জ্য ব্লেন্ড করে জৈবসার বা কম্পোস্ট তৈরি করতে পারবেন। ফলের খোসা, ডিমের খোসা, এবং সবজির খোসা একসাথে ব্লেন্ড করলেই তৈরি হয়ে যাবে এই সার। 

ব্লেন্ডার দিয়ে কি কি করা যাবে নাঃ

  • অতিরিক্ত গরম কোন খাবার ব্লেন্ড করা যাবে না। কারণ গরম জিনিস ব্লেন্ডারে ঢাললে ব্লেন্ড করলে ভেতরের তাপমাত্রা ও চাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। ফলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি থাকে। তাই গরম খাবার যতোটা সম্ভব ঠান্ডা করে ব্লেন্ড করা উচিত।
  • সেদ্ধ আলু ব্লেন্ড করা যাবে না। কারণ কাঁচা আলুর চাইতে সেদ্ধ আলুতে বেশি স্টার্চ থাকে। ব্লেন্ডার এই স্টার্চ ভেদ করতে পারে না। এতে ব্লেন্ডারের ব্লেডেও চাপ পড়ে আর বিদ্যুতও বেশি খরচ হয়। তাই আলু ব্লেন্ড করতে চাইলে কাঁচা অবস্থাতেই করতে হবে। 
  • শুকনো ফল বা রোদে শুকানো সবজি ব্লেন্ড করা যাবে না। এগুলো শক্ত থাকে তাই ব্লেন্ডারের ধারালো ব্লেড তাড়াতাড়ি ক্ষয়ে যাবে। তাই শুকনো ফল বা সবজি ব্লেন্ড করতে চাইলে আগে ভিজিয়ে নেওয়া ভালো। তবে ভালো মানের দামী ব্লেন্ডার হলে না ভিজিয়ে ব্লেন্ড করতে পারবেন।
  • কফির বীজ ব্লেন্ড করা যাবে না। কফির বীজের জন্য আলাদা মেশিন বা গ্রাইন্ডার আছে। ব্লেন্ডারে এই বীজ ঢাললে মেশিনের অপচয় হবে সাথে কফির স্বাদ ও গন্ধ নষ্ট হয়ে যাবে।
  • অতিরিক্ত হিমায়িত খাবার বা বরফ ব্লেন্ড করা যাবে না। এগুলো ব্লেড ভেঙে ফেলতে পারে। তাই হিমায়িত খাবার ফ্রিজ থেকে নামিয়ে অন্তত ১৫-২০ মিনিট বাইরে রেখে নরমাল করে নিবেন। তারপর ব্লেন্ডারে দিবেন। বরফ কুচি করতে চাইলে সেই মোতাবেক মেশিন ব্যবহার করুন।
  • শক্ত মসলা সরাসরি ব্লেন্ডারে দেওয়া যাবে না। এতে ব্লেডের উপর চাপ পড়বে, ব্লেড ভেঙে যাবে। তাই শক্ত মসলা ছোট ছোট টুকরা কেটে নিতে হবে। তাহলে ব্লেন্ডারের উপর চাপ পড়বে না। আর মসলা ব্লেন্ডও হবে সুন্দরভাবে।
Article Tags:
Article Categories:
Food-kitchen-insights

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *