কফি ভালোবাসেন নিশ্চয়ই! তবে একই স্টাইলে ব্ল্যাক ও মিল্ক কফি খেয়ে বিরক্ত? একটু ভিন্ন স্বাদের কফি খুঁজছেন? তাহলে আজকের টিপসসহ এই ফেনাওয়ালা কফি অবশ্যই একদিন বানান। এটা বানাতে কফি মেশিনের কোন দরকার নেই। কফি মেশিন ছাড়া, ক্যাফে স্টাইলে বানানো কফি মাত্র কয়েক মিনিটে আপনার কফি কাপে ঢেলে নিন।
কফির উপর ফেনা তৈরির প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ, এবং ঘরেই সহজ উপায়ে তৈরি করা যায়। এই কফি তৈরি করতে যেসব উপকরণ দরকার হয় তা খুবই সাধারণ। প্রতিটি বাড়ির রান্নাঘরে সাধারণত পাওয়া যায়। তাহলে চলুন কথা বেশি না বাড়িয়ে বানিয়ে নেওয়া যাক, ফেনাওয়ালা কফি।
ক. মেশিন ছাড়া ফেনাওয়ালা কফি তৈরির উপকরণঃ
- ইনস্ট্যান্ট কফি পাউডার ২ টেবিল চামচ
- গরম দুধ ১ কাপ
- চিনি ২ টেবিল চামচ
- গরমজল ২ টেবিল চামচ
খ. ফেনাওয়ালা কফি তৈরির পদ্ধতিঃ
একটি মাঝারি আকারের বাটি নিন। তাতে কফি পাউডার, চিনি ও গরমজল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এখানে সমান পরিমাণ কফি, চিনি এবং জল ব্যবহার করবেন। এর ফলে মিশ্রণটি সঠিক ফেনা তৈরি করতে পারবে। এরপর একটি হ্যান্ড বিটার বা বৈদ্যুতিক বিটার দিয়ে মিশ্রণটি ভালো করে বিট করতে শুরু করুন।
বিট করা চালিয়ে যান যতক্ষণ না এটি একদম মসৃণ, ঘন এবং ফেনাযুক্ত হয়। এর জন্য সাধারণত ৩-৫ মিনিট সময় লাগতে পারে। তবে বৈদ্যুতিক বিটার ব্যবহারে সময় কম লাগবে। যাদের বৈদ্যুতিক বিটার নেই, তারা একটি চামচ দিয়েও বিট করতে পারেন, তবে এটি সময়সাপেক্ষ। আর সাথে ধৈর্যের প্রয়োজন। আগে ভাগেই বলে রাখলাম।
যখন মিশ্রণটি ফেনাযুক্ত এবং হালকা ব্রাউন রঙ ধারণ করবে, তখনই ফেনা তৈরির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এখন আপনার ফেনাওয়ালা কফির মূল উপাদান তৈরি।
একটি কাপ নিন এবং তাতে গরম দুধ ঢালুন। কেউ যদি ঠাণ্ডা কফি পছন্দ করেন, তাহলে বরফের কয়েকটি কিউব যোগ করতে পারেন। এরপর তৈরি করা ফেনাযুক্ত কফি মিশ্রণটি দুধের উপর আস্তে আস্তে চামচ দিয়ে ঢালুন। দেখবেন কফির ফেনা দুধের উপর সুন্দরভাবে ভেসে থাকবে, যা দেখতে বেশ চমৎকার লাগবে।
চাইলে কফির উপর সামান্য কোকো পাউডার বা চকোলেট গুঁড়ো ছিটিয়ে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন। এটি কফির স্বাদকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
১. বিশেষ টিপঃ এক চিমটে লবণের কামাল
এক চিমটি লবণ ফেনাওয়ালা কফির ফ্রুথিনেস এবং স্বাদ বাড়াতে বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। লবণের সূক্ষ্ম সংযোজন শুধুমাত্র সামগ্রিক স্বাদকে শুধু বাড়িয়ে দেয় না বরং আরও উপভোগ্য কফি পান করার সুযোগ ঘটায়।
কফিতে লবণের প্রবর্তন একটি গেম-চেঞ্জার, কারণ এটি শুধুমাত্র কফি বিনের প্রাকৃতিক স্বাদই বের করে না বরং পানীয়ের মিষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে। যার ফলে প্রতিটি চুমুকে আলাদা মজা এনে দেয়।
২. পরিবেশনঃ
ফেনাওয়ালা কফি সাধারণত কাপের উপর ফেনার স্তর সহ পরিবেশন করা হয়। কফির ফেনা ও দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে পান করতে পারেন অথবা চামচ দিয়ে ফেনা এবং দুধ মিশিয়ে নিতে পারেন। কেউ চাইলে এই কফির সঙ্গে কিছু হালকা স্ন্যাকস বা কুকিজ পরিবেশন করতে পারেন।
৩. উপকারিতাঃ
ফেনাওয়ালা কফি শুধু দেখতে সুন্দরই নয়, এটি তৈরি করতে গেলে মানসিক স্বস্তিও পাওয়া যায়। এই কফি তৈরির প্রক্রিয়াটি এক ধরণের শিল্প, যেখানে আপনি নিজে হাতে কিছু সৃজনশীলতা প্রয়োগ করতে পারেন। এছাড়া, কফির ফেনার ঘনত্ব এবং মিষ্টতা কফির স্বাদে নতুন এক মাত্রা যোগ করে।
৪. সতর্কতাঃ
যদিও কফি অনেকের প্রিয় পানীয়, তবুও অতিরিক্ত কফি পান করা স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে যারা উচ্চ রক্তচাপ বা অনিদ্রা সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য বেশি কফি পান না করাই ভালো। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কফি পান করাই শ্রেয়।
৫. শেষ কথাঃ
ফেনাওয়ালা কফি ঘরেই খুব সহজে তৈরি করা যায়। এর জন্য বিশেষ কোনো উপকরণের প্রয়োজন নেই। যারা কফির নতুন নতুন রেসিপি ট্রাই করতে ভালোবাসেন, তারা অবশ্যই এই ফেনাওয়ালা কফি তৈরি করে দেখতে পারেন। একবার চেষ্টা করলেই দেখবেন এটি আপনার প্রিয় কফির তালিকায় স্থান করে নেবে।