হোক বাঙালি খাবার বা বিদেশি কুইজিন, নুন ছাড়া সব খাবারই মাটি। এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস অথচ এর মাপ ঠিক রাখতেই হয় গলদঘর্ম অবস্থা। এক্সপার্ট রাঁধুনিরা তো চোখ বুজেই বলে দিতে পারেন কোথায় কতটা নুন লাগবে। কিন্তু কাঁচা রাঁধুনিরা? ‘কি আর কিভাবে রান্না করবো’র বদলে ‘রান্নার সময় নুনের মাপ কিভাবে করবো’ – এই প্রশ্নটাই তারা বেশি করে থাকেন। তাই আজকের আয়োজনে থাকছে নুনের নোনতা ধাঁধার সমাধান।
রান্নার সময় নুনের মাপ কিভাবে করবো?
রান্নার সময় নুনের মাপ করার তিনটি উপায় বলে দিচ্ছি। কাজে লাগিয়ে দেখুন, আশা করি ফল পাবেন।
- যদি প্রথম বার রান্না করতে যান, তাহলে আগে তরকারির পরিমাণটা দেখুন। পরিমাণ বুঝে এক চিমটি বা আধা চা চামচ নুন দিয়ে তরকারি কিছুক্ষণ নাড়ুন। ঝোল চেখে যদি ভালো লাগে, তাহলে ঐটুকু নুন ঠিক আছে। ঝোল খেতে ভালো না লাগলে আরেকটু নুন দিয়ে দিবেন।
- খেয়াল রাখবেন যেন প্রথমেই অনেকটা নুন দেয়া না হয়। প্রথমে খুব অল্প করে দেবেন, প্রয়োজনে পরে নুন বাড়িয়ে দিবেন। তবে নুন যদি বেশি পড়েই যায় তাহলে আলু কেটে তরকারিতে দিয়ে দিবেন। বাড়তি নুন অ্যাবজর্ব হয়ে যাবে। কয়েকবার এভাবে আন্দাজ করে রান্না করলে নুনের মাপ করা শিখে যাবেন।
- ঝোল চেখে দেখার পাশাপাশি ঘ্রাণটাও খেয়াল করুন। ঘ্রাণ সুন্দর আসলে বুঝে যাবেন নুন ঠিক আছে। নুনের পরিমাণ ঠিক না থাকলে সুন্দর ঘ্রাণ আসে না।
- রান্নার মাঝখানে যখন ধোঁয়া উঠতে শুরু করবে তখন হাতের মুঠোয় ধোঁয়া নিবেন। যদি হাত শুকনো থাকে তাহলে বুঝবেন নুন ঠিক আছে। কিন্তু হাতে ভেজা ভাব থাকলে বুঝতে হবে নুনের পরিমাণ বেশি বা কম হয়েছে।
রান্নায় নুনের সাধারণ মাপঃ
অনেক সময় রেসিপিতে লেখা থাকে ‘নুন আন্দাজমতো’। ব্যাপারটা বেশ গোলমেলে লাগে। বিশেষ করে নতুন রাঁধুনি যারা তাদের তো আন্দাজই থাকে না নুনের আন্দাজ সম্পর্কে। তখন অনুমান করে নুন দিতে গিয়ে তরকারি হয়ে যায় নুনে পোড়া। তাই খাবার নুনে পোড়া করতে না চাইলে নুনের সাধারণ মাপ সম্পর্কে জেনে নিন।
- প্রতি ৪ কাপ স্যুপ, সস, স্টক, গ্রেভির জন্য ১ চা চামচ।
- প্রতি কেজি হাড় ছাড়া মাংসের জন্য ১ থেকে ২ চা চামচ।
- পাস্তা সেদ্ধ করার ক্ষেত্রে প্রতি ৪ কাপ জলের জন্য ১ চা চামচ।
- ডো-এর ক্ষেত্রে প্রতি ৪ কাপ ময়দার জন্য ১ চা চামচ।
- তবে পিজ্জার ডো হলে প্রতি ২ কাপ ময়দার জন্য ১ চা চামচ নুন লাগবে।
- সবজি সেদ্ধ করার সময় প্রতি ৩ কাপ জল বা আধা কিলো সবজির জন্য ১ চা চামচ। তবে সবজির পরিমাণ অনুযায়ী জলের পরিমাণ কমবেশি হতে পারে। তখন নুনের পরিমাণও কমবেশি করা যাবে।
এই মাপ কোন ফিক্সড কিছু না। খাবারের স্বাদ অনুযায়ী এই মাপের হেরফের হতে পারে। যেমন হাড় ছাড়া মাংসের জন্য ১-২ চা চামচ নুন লাগছে, কিন্তু হাড়সহ মাংসের জন্য ২ চা চামচের বেশি লাগছে এমন। আবার স্যুপের জন্য ১ চা চামচ নুন লাগলেও রেসিপির ধরণের জন্য পরিবর্তন হতে পারে। আবার স্যুপ পাউডার দিয়ে রান্না করলে প্যাকেটে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী নুন দেয়া লাগতে পারে।
সাধারণ নুন ব্যবহার করার চাইতে কোষার সল্ট বা সি সল্ট ব্যবহার করা লাভজনক। এই নুনগুলো রান্নায় খুব সহজে মিশে যায়। আবার কোষার সল্টের দানা বড় হওয়ায় দরকার পড়লে কয়েকটা দানা কমবেশি করে ব্যবহার করা যায়। সাধারণ নুনে এই সুবিধাগুলো পাওয়া যায় না। ১ চা চামচ কোষার সল্ট ২ চা চামচ সাধারণ নুনের সমান। ২ চামচ নুন মাঝে মাঝে বেশি মনে হতে পারে। তখন আন্দাজ করে দেড় চামচ বা সোয়া চামচ নুন নেয়া একটু কঠিন। তার বদলে সোজা ১ চামচ কোষার বা সি সল্ট দিলেই কাজ হয়ে যায়।
আরো দেখতে চাই
Thank you 🙂 Facebook page follow korun. Apni shob info pete thaakben.