আজকাল আমাদের রান্নাকে সহজ করতে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেট-জাতক দ্রব্য বেড়িয়েছে। বিভিন্ন ধরনের মসলা এখন আমরা কিনেই ব্যবহার করে থাকি। তার মধ্যে একটি হলো গার্লিক বা রসুনের পাউডার। কিন্তু কিনে আনা এই রসুনের পাউডার কি আদৌও আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হয়। এতো কিছু চিন্তা না করে কিছু সহজ পদক্ষেপ গ্রহন করে ঘরেই তৈরি করে নিন রসুনের পাউডার।
রসুনের পাউডার বানানোর ধাপ বা প্রক্রিয়াঃ
- ১. শুরুতেই একটি পাত্র নিন। তাতে পরিমাণ মতো রসুনের কোয়া নিয়ে নিন।
- ২. এখন কাজ হলো রসুনের কোয়াগুলো ছাড়িয়ে নেওয়া। এই কাজটি যদিও একটু ঝামেলাকর। তবে এই কাজটি করার জন্য বেশ কিছু উপায় রয়েছে। যেখান থেকে আপনি আপনার সুবিধা মতো পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন। যেমন প্রথমে কোয়াগুলো ছাড়িয়ে নিয়ে তা একটি পাত্রে রেখে পরিমাণ মতো জল দিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে এক থেকে দুই ঘন্টার মতো। এরপর হাত দিয়ে ডলা দিয়ে বা চামচ দিয়ে অথবা বটি দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে পারেন। তবে হাতের নখ দিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে এই কাজটি কখনোই করতে যাবেন না। আর নয়তো পরে নখে অনেক ব্যাথা হবে।
- আবার চাইলে একটি ছুরি নিয়ে তা দিয়ে যাতা দিয়েও করা যায়। আর নয়তো একটি মুখ বন্ধ বয়াম নিন। তার মধ্যে রসুনের ছুটিয়ে রাখা কোয়াগুলো দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিন। এরপর জোরে জোরে ঝাকিয়ে নিন বেশ অনেকক্ষন ধরে। দেখবেন খোসাগুলো আলাদা হয়ে গিয়েছে।
- ৩. তারপর অন্য একটি পাত্রে কোয়াগুলো নিয়ে জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন।
- ৪. ধোয়া হয়ে গেলে ছুরি বা বটি নিন (যেটা আপনার সুবিধা)। রসুনের কোয়াগুলোকে পাতলা পাতলা করে কেটে নিন। চেষ্টা করবেন পাতলা পাতলা করে কুচি করতে। নয়তো মোটা মোটা হলে তা শুকাতে অনেক বেশি সময় নেবে। তাই পাতলা করে কুচি করবেন। সেই সাথে সবগুলো কোয়া যেন একই পুরুত্বের তা খেয়াল রাখতে হবে। তবে কোয়াগুলোকে একেবারে কিমা বানিয়ে ফেলবেন না।
- ৫. এরপর বড় একটি পরিষ্কার পাত্র নিন। তার উপর দিয়ে বেকিং পেপার বা পরিষ্কার কাগজ বিছিয়ে দিন। রসুনের কুচি করে রাখা কোয়াগুলো তার উপর দিয়ে বিছিয়ে দিন। গাদাগাদি করে দেবেন না। কিছুটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে শুকাতে সময় কম লাগবে আর শুকাবেও খুব ভালো করে।
- ৬. এরপর হলো শুকানোর পালা। পাত্রটি দুই থেকে তিন দিন রোদে দিয়ে শুকিয়ে নেবেন। খেয়াল রাখবেন যাতে একদম মচমচা হয়। নয়তো পাউডার ভালো হবে না। তাই ভালো করে শুকাতে হবে। আবার আপনি চাইলে এই শুকানোর কাজটি ওভেনে দিয়েও করতে পারেন। ওভেনে দিয়ে অল্প হিটে রেখে দিয়ে মচমচা করে নিতে পারেন। ওভেনে করলে শুকানোর কাজটি রোদের তুলনায় দ্রুত হবে। আবার চুলার নিচে দিয়েও শুকিয়ে নেওয়া যাবে।
- ৭. মচমচে হয়ে শুকিয়ে গেলে একটি পাত্রে ঢেলে নিন। এখন সে পাউডার হওয়ার জন্য প্রস্তুত। একটি ব্লেন্ডার জগ নিন। তাতে কিছুটা শুকনো রসুন দিয়ে ভালো করে মিহি করে নিন। সবগুলো একসাথে দিবেন না। একসাথে দিলে তা ভালোমতো পাউডার হতে পারে না। কিছুটা দানা দানা রয়ে যায়। তাই অল্প অল্প করে দিয়ে পাউডার করে নিবেন। এতে করে সুন্দর একটা পাউডার হবে। এভাবে আদার পাউডারও বানানো যায়।
- ৮. সবগুলো পাউডার হয়ে গেলে একটি মুখবন্ধ জার বা বয়াম নিন। এতে পাউডার গুলো ঢেলে দিন এবং মুখটা ভালো করে বন্ধ করে দিন। তৈরি হয়ে গেল আপনার রসুন বা গার্লিক পাউডার।
বিশেষ টিপসঃ
ঘরে বানানো এই পাউডার আপনি অনেকদিন সংরক্ষণ করতে পারবেন। এবং যে রান্নায় রসুন পেস্ট দিতে হয় সেক্ষেত্রে এই পাউডারের সাথে কিছুটা জল মিক্স করে নিলেই রসুন পেস্ট তৈরি হয়ে যাবে।
বিশেষ সর্তকতাঃ
রসুনর পাউডারে যাতে বাতাস ঢুকে নষ্ট হতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তাই ব্যবহারের পর মুখ ভালোমতো বন্ধ করে দিতে হবে।