skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

চিচিঙ্গা ধুন্দল ও ঝিঙা চেনার সহজ উপায়

চিচিঙ্গা ধুন্দল ও ঝিঙা

আমাদের রান্নায় অনেক ধরনের সবজি ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে চিচিঙ্গা, ধুন্দল, এবং ঝিঙা বেশ জনপ্রিয়। যদিও এই তিনটি সবজি দেখতে প্রায় একই রকম, তবে তাদের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে যা সঠিকভাবে জানা থাকলে সহজেই তাদের আলাদা করা যায়। কিনতে গিয়ে চিনতে অসুবিধা হয় না। এই নিবন্ধে আমরা চিচিঙ্গা, ধুন্দল এবং ঝিঙা চেনার সহজ উপায় লিখলাম। যাতে এই তিনটি সবজি কিনতে গিয়ে ভুল না হয়।

১. চিচিঙ্গা (Snake Gourd)

চিচিঙ্গা একটি লম্বা এবং সরু সবজি যা দেখতে সর্পের মতো হওয়ার কারণে ইংরেজিতে একে “Snake Gourd” বলা হয়। এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের এক বিশেষ সবজি, যা বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করা হয়। চিচিঙ্গা সাধারণত তরকারি, ভাজি, বা স্যুপে ব্যবহৃত হয়।

চিচিঙ্গা

চিচিঙ্গার বৈশিষ্ট্যঃ

আকৃতি ও আকারঃ

চিচিঙ্গার আকৃতি লম্বা এবং সরু। এটি সাধারণত ৩০ থেকে ৭০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে, যদিও কিছু চিচিঙ্গা আরও বড় হয়। এর সর্পাকৃতির জন্য এটি সহজেই আলাদা করা যায়।

রংঃ

চিচিঙ্গার খোসা সাধারণত সবুজ হয়। তবে তাতে সাদা বা হালকা সবুজ দাগ দেখা যায়। কখনও কখনও এর উপর কিছু সাদা রেখাও থাকতে পারে। যা দেখতে কিছুটা আকর্ষণীয় মনে হয়।

পৃষ্ঠের অবস্থাঃ

চিচিঙ্গার পৃষ্ঠ মসৃণ এবং কিছুটা মোলায়েম হয়। এটি খোসা ছাড়ানো ছাড়াই রান্না করা যায়। কারণ এর খোসা নরম এবং খাওয়ার উপযোগী।

খোসার দৃঢ়তাঃ

তাজা চিচিঙ্গার খোসা কড়কড়ে হয় এবং সহজে চাপ দিলে মচমচে অনুভূত হয়। পুরনো চিচিঙ্গার খোসা কিছুটা নরম হয়ে যায়। যা চেনার একটি উপায়।

স্বাদ ও ব্যবহারঃ

চিচিঙ্গার স্বাদ মিষ্টি ও হালকা। এটি সহজে হজম হয় এবং রূপকভাবে শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে বলে ধারণা করা হয়। তাই এটি গ্রীষ্মকালে জনপ্রিয়। তরকারি, ভাজি এবং ভর্তা হিসেবে এটি বেশ পরিচিত। চিচিঙ্গা দিয়ে সুস্বাদু ভর্তা বা ভাজা তৈরি করা যায়।

চিচিঙ্গার উপকারিতাঃ

চিচিঙ্গায় অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকে, যেমন ভিটামিন এ, সি, এবং ক্যালসিয়াম। এটি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ সরবরাহ করে। এটি হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীরকে শীতল রাখতে কার্যকরী।

২. ধুন্দল (Sponge Gourd)

ধুন্দল, যা “Sponge Gourd” নামেও পরিচিত। সবজি হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এর মসৃণ পৃষ্ঠ এবং নরম খোসা দ্বারা এটি সহজেই চেনা যায়। ধুন্দল দেখতে কিছুটা ঝিঙার মতো হলেও এর মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে।

ধুন্দল

ধুন্দলের বৈশিষ্ট্যঃ

আকৃতি ও আকারঃ

ধুন্দল সাধারণত লম্বা এবং গোলাকার হয়। ঝিঙার তুলনায় এটি কিছুটা মোটা এবং আকৃতিতে তুলনামূলক ছোট। এটি প্রায় ১৫-৩০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। কিছুটা ওজনদার হয়।

রংঃ

ধুন্দলের রং গাঢ় সবুজ হয়। কখনও কখনও এর উপর হালকা দাগ বা চিহ্ন দেখা যায়।

পৃষ্ঠের অবস্থাঃ

ধুন্দলের খোসা মসৃণ এবং তুলনামূলকভাবে নরম। পুরনো ধুন্দলের খোসা কিছুটা শক্ত হয়ে যেতে পারে। তবে তাজা ধুন্দলের পৃষ্ঠ খুবই মোলায়েম ও স্পর্শকাতর হয়।

খোসার দৃঢ়তাঃ

তাজা ধুন্দল চাপ দিলে সহজেই মুচড়ে যেতে পারে। এর খোসা খুবই নরম, যা রান্নার সময় দ্রুত নরম হয়ে যায়।

স্বাদ ও ব্যবহারঃ

ধুন্দল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের তরকারি তৈরি করা হয়। এর মাংসল ভেতর অংশ নরম এবং মিষ্টি স্বাদের হয়। এটি তরকারি, ভাজা, এবং দোপেঁয়াজা রান্নায় ব্যবহৃত হয়। ধুন্দল রান্নার পর খুব নরম হয়ে যায় এবং সহজে খাওয়া যায়।

ধুন্দলের উপকারিতাঃ

ধুন্দলে প্রচুর জল এবং ফাইবার থাকে, যা হজমে সহায়ক। এটি শরীরের ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং প্রাকৃতিকভাবে ডায়েটারি ফাইবার সরবরাহ করে।

৩. ঝিঙা (Ridge Gourd)

ঝিঙা আমাদের খাদ্য তালিকায় একটি পরিচিত সবজি। এটি মূলত এর খাঁজকাটা পৃষ্ঠের জন্য সহজেই চেনা যায়। ঝিঙা সবজিটি বিভিন্ন খাবারে ব্যবহৃত হয়, যেমন তরকারি, ভাজা, ভর্তা। ঝিঙের ভর্তা খেতে খুবই টেস্টি হয়।

ঝিঙা

ঝিঙার বৈশিষ্ট্যঃ

আকৃতি ও আকারঃ

ঝিঙার আকৃতি সাধারণত লম্বা এবং খাঁজকাটা হয়। এটি প্রায় ২০-৩০ সেন্টিমিটার লম্বা হতে পারে। ঝিঙার গায়ে খাঁজ বা রেখা থাকে যা এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

রংঃ

ঝিঙার রং সাধারণত হালকা সবুজ হয়। তাজা ঝিঙায় উজ্জ্বল সবুজ রং থাকে, যা পুরনো হলে কিছুটা ফ্যাকাশে হয়ে যায়।

পৃষ্ঠের অবস্থাঃ

ঝিঙার পৃষ্ঠ বেশ রুক্ষ এবং এতে খাঁজ বা দাগ দেখা যায়। এটি ধুন্দল এবং চিচিঙ্গার চেয়ে পৃষ্ঠে বেশি খাঁজযুক্ত ও কঠিন।

খোসার দৃঢ়তাঃ

ঝিঙার খোসা চাপ দিলে শক্ত থাকে এবং সহজে মুচড়ায় না। পুরনো ঝিঙার খোসা বেশ কঠিন হয়ে যায়, তাই তাজা ঝিঙা কিনলে এটি নরম খোসা দেখে কিনতে হবে।

স্বাদ ও ব্যবহারঃ

ঝিঙার স্বাদ তুলনামূলক হালকা এবং মিষ্টি। এটি তরকারি, ভাজি, বা স্যুপে ব্যবহার করা হয়। ঝিঙা রান্নার সময় দ্রুত নরম হয়ে যায় এবং এর স্বাদ কিছুটা মিষ্টি ধরনের হয়।

ঝিঙার উপকারিতাঃ

ঝিঙায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, এবং ম্যাগনেশিয়াম থাকে। এটি চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
এটি শরীরের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে এবং রক্ত পরিশুদ্ধ রাখতে কার্যকরী। চিচিঙ্গা, ধুন্দল ও ঝিঙা চেনার কিছু

অতিরিক্ত পরামর্শঃ

চিচিঙ্গা, ধুন্দল এবং ঝিঙা দেখতে প্রায় একই রকম হলেও তাদের খোসার গঠন, আকৃতি, এবং রান্নার ধরন দ্বারা সহজেই আলাদা করা যায়। চিচিঙ্গার লম্বা ও সরু গঠন এবং সাপের মতো আকৃতি, ধুন্দলের মসৃণ ও মোটা গঠন, এবং ঝিঙার খাঁজকাটা রুক্ষ পৃষ্ঠ দেখে সহজেই তাদের চেনা সম্ভব।

তাজা সবজি নির্বাচন করার সময় তাদের খোসার দৃঢ়তা পরীক্ষা করুন। তাজা সবজি সাধারণত মসৃণ, উজ্জ্বল রঙের এবং খোসা কড়কড়ে হয়। যদি সবজির খোসা নরম হয়ে যায় বা এর রং ফ্যাকাশে হয়, তবে তা পুরনো হতে পারে।

Recommended For You

Visual Stories

Article Tags:
Article Categories:
Fun-Facts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

মুখরোচক ফ্রাইড রাইসের ৯ টি রেসিপি বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী সকালের জলখাবার বাঙালির ১০ টি আচার যা জিভে জল আনে নিমেষে! মধ্যপ্রাচ্যে খুবই বিখ্যাত এই ৯ টি বাঙালির খাবার অযোধ্যার বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী ১০ টি খাবার!