skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

ঘরে বানানো আচার ভিনিগার ছাড়া অনেক মাস ভাল রাখার টিপস

নানা রকমের আচারের বোতল

ডাল-ভাতের সঙ্গে একটুখানি ঝাল-ঝাল মশলা আমের আচার হলেই কি জমে যায় আপনার লাঞ্চ কিংবা ডিনার? অনেকে আচার কিনে খেলেও এখনও কিন্তু অনেকেই বাড়িতে নিজের পছন্দের আম বা লঙ্কার আচার বানিয়ে নিতেই পছন্দ করে থাকেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, আচার কীভাবে অনেকদিন ধরে ভাল রাখবেন সেটা তাঁরা বুঝে উঠতে পারেন না।

অনেকেই হাতের কাছে সহজলভ্য ভিনিগার দিয়ে আচার বানাতে পছন্দ করেন। অথচ দীর্ঘদিন ধরে ভিনিগার যদি খাদ্য বা অন্য কোনও উপাদানের মাধ্যমে আপনার শরীরে প্রবেশ করে, তাহলে তার বেশ কিছু ক্ষতিকর প্রভাব থেকেই যায়। তাই আজকে ঘরে বানানো আচার কীভাবে ভিনিগার ছাড়াও অন্যান্য উপায়ে ভাল রাখবেন, তা নিয়ে আমরা আলোচনা করব।

ভিনিগারের বিপদ-আপদঃ

ভিনিগারে প্রায় ৪% অ্যাসেটিক অ্যাসিড থাকে। আমরা জানি, আচার যখন বানানো হয়, তখন ভিনিগার ও নুন দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে তার মধ্যে আচারের উপাদানগুলি, যেমন আম, লঙ্কা, লেবু ইত্যাদিকে রাখা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই ভিনিগার মিশ্রিত নুন খেলে তা শরীরে সোডিয়ামের মাত্রাকে স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়িয়ে তোলে, ফলে রক্ত ঘন হতে শুরু করে এবং তা উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ফলে আপনি যদি বাড়িতে আম,লেবু, বা লঙ্কার আচার বানান, তাহলে ভিনিগার ছাড়া অন্য কোনও প্রাকৃতিক অম্লজাতীয় কোনও উপাদান দিয়েই আচার তৈরি করা উচিত।

omemade Indian Chilli Pickle

১. পরিষ্কার পাত্রে আচার রাখুনঃ

  • বাড়িতে বানানো আচার দীর্ঘদিন ধরে ভাল রাখার এটা কিন্তু অন্যতম শর্ত। কোন পাত্রে আপনি আচার বানিয়ে রাখছেন, সেটি যথেষ্ট পরিষ্কার কিনা, এগুলিও কিন্তু আচার দীর্ঘদিন ধরে ভাল রাখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি বিষয়। সাধারণত প্লাস্টিকের কৌটোর চেয়ে কাঁচের কৌটোতেই আচার বেশিদিন ভাল থাকে। কৌটোয় রাখার আগে দেখে নেবেন, পাত্রটি যেন একেবারে শুকনো থাকে। এর মধ্যে বিন্দুমাত্র জল থাকলেই কিন্তু দ্রুত আচার খারাপ হয়ে যেতে পারে।

২. প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করুনঃ

  • আচার তৈরি করার সময় ভিনিগারের বদলে পাতিলেবুর রস, তেঁতুল, আমচুর পাওডার ইত্যাদি অম্লজাতীয় উপাদান ব্যবহার করুন। এগুলি প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ার ফলে শরীরের পক্ষেও ক্ষতিকারক নয়, এবং আপনার আচারকে দীর্ঘদিন ভাল রাখতে এগুলির জুড়ি নেই। এছাড়া বেশি করে হলুদগুঁড়ো, নুন দিয়ে মাখিয়ে আচারের উপাদানগুলিকে কড়া রোদে ভাল করে জারাতে দিন। এই প্রক্রিয়া আচারের উপাদানগুলিকে দ্রুত শুষ্ক করতে সাহায্য করে, ফলে এর মধ্যে থাকা বাড়তি আর্দ্রতা দূর হয়, যা আচার দীর্ঘদিন ধরে ভাল রাখার পক্ষে সহায়ক।
  • এছাড়া নুন খুব ভাল প্রাকৃতিক সংরক্ষক হিসেবে কাজ করে এবং আচারের স্বাদ ও গন্ধ অটুট রাখে। ইচ্ছে হলে মেথি গুঁড়ো, হিং ইত্যাদিও প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভ হিসেবে আচারে ব্যবহার করতে পারেন।
  • মনে রাখবেন, আচার বানানোর সময় চিনি দিলেও সেটি সামান্য পরিমান দেওয়াই বাঞ্ছনীয়। এরপর লেবুর রস বা আমচুর পাওডার ও বেশি করে তেল দিয়ে এয়ারটাইট কাঁচের জারে ভরে রাখলেই বহুদিন পর্যন্ত আপনি সেটিকে ব্যবহার করতে পারবেন।

৩.আচারের উপরে তেলঃ

  • খেয়াল রাখবেন, তেল যেন আচারের উপরে ভাসে, অর্থাৎ কৌটোর উপর যেন তেলের একটি আস্তরণ থাকে। এর ফলে বাইরে থেকে কোনওরকম জলীয় বাষ্প ও অক্সিজেন আচারের কৌটোর মধ্যে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে কোনওরকম ব্যাকটেরিয়া আপনার প্রিয় আচারের কৌটোর মধ্যে বাসা বাঁধলেও অক্সিজেনের অভাবে অচিরেই তার মৃত্যু ঘটে।
  • কোনও কারণে আপনার আচারে থাকা বাড়তি তেল যদি শেষ হয়ে যায়, তাহলে পরিমানমতো তেল গরম করে, সেটিকে ঠান্ডা করে পরে আচারে মিশিয়ে নিতে পারেন। এছাড়া আচারে থাকা মশলাও ব্যাকটেরিয়া ও নানারকম জীবাণুর হাত থেকে আপনার বানানো আচারকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

৪.আর্দ্রতা থাক দূরেঃ

  • কৌটো থেকে আচার নেওয়ার সময় ভুলেও ভিজে চামচ ব্যবহার করবেন না। সাধারণত বর্ষাকালে দেখা যায়, বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় আচার বাইরে রাখলে সহজে নষ্ট হয়ে যায়। বিশেষ করে কুল বা আমের মিষ্টি আচার আরও বেশি দ্রুত নষ্ট হয়। তাই এই সময় আচারের কৌটোটি ফ্রিজে রাখতে পারেন।
  • এছাড়া মাঝে মাঝে, অন্তত সপ্তাহে এক কি দু’দিন যদি আচারের কৌটো কড়া রোদে দিতে ঘণ্টাখানেক রেখে দিতে পারেন, তাহলে তা কৌটোর মধ্যে ছত্রাক জন্মানোকে প্রতিরোধ করে।
  • উপরে বলা সাধারণ নিয়মগুলি মেনে চললেই আপনি কিন্তু বহুদিন পর্যন্ত আপনার আচারকে ভাল রাখতে পারবেন। আর ভিনিগারের বদলে এবার থেকে পাতিলেবুর রস, তেঁতুল, আমচুর ইত্যাদি ব্যবহার করুন, তাহলে আপনার শরীর ভাল থাকবে তো বটেই, সেই সঙ্গে আচারও ভাল থাকবে!
Article Tags:
·
Article Categories:
Tips & Hacks

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *