skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

রান্নাঘর পুনর্নির্মাণের সময় এই ৩০ টি ভুল এড়িয়ে চলুন

রান্নাঘর পুনর্নির্মাণে ভুল

রান্নাঘর পুনর্নির্মাণ করার প্ল্যান করছেন? আগাম শুভেচ্ছা। সাথে কিছু পরামর্শ দিয়ে দিলাম। আমি কয়েকমাস আগে রান্নাঘর পুনর্নির্মাণ করেছি। করতে গিয়ে প্রথমদিকে কিছু ভুল হয়েছিল। আসলে রান্নাঘর পুনর্নির্মাণ একটি জটিল প্রক্রিয়া এবং এটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে হলে যথেষ্ট মনোযোগ ও পরিকল্পনা প্রয়োজন।

রান্নাঘর বাড়ির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যেখানে পরিবারের সকলে প্রতিদিনের খাবার প্রস্তুত এবং খাওয়া হয়ে থাকে। তাই এটি পুনর্নির্মাণ করার সময় বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। এখানে আমি আমার করা কিছু ভুলের পাশাপাশি আরও কয়েকটি জিনিস লিখলাম। রান্নাঘর পুনর্নির্মাণের সময় ৩০টি প্রধান ভুল নিয়ে আলোচনা করলাম। যা এড়িয়ে চলা উচিত।

১. সঠিক পরিকল্পনার অভাবঃ

রান্নাঘর পুনর্নির্মাণে প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল সঠিক পরিকল্পনা। অনেক সময় তাড়াহুড়ো করে কাজ শুরু করে দিলে অনেক ভুল হয়ে যায়। যা আমার নিজের ক্ষেত্রেই হয়েছিল। আগে থেকে সঠিকভাবে ডিজাইন এবং বাজেট তৈরি না করলে, পুনর্নির্মাণের মাঝপথে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

২. বাজেটের বাইরে খরচ করাঃ

অতিরিক্ত খরচ না করার জন্য আগে থেকেই একটি নির্দিষ্ট বাজেট ঠিক করে রাখা উচিত। অনেকেই পুনর্নির্মাণের সময় ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে বাজেটের বাইরে চলে যান। যা ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তাই আগে থেকেই ঠিক করে নিন কি কি বদলাবেন ও কতটা খরচ করবেন। ফলে কাজের সময় বাধা আসবে না।

৩. পর্যাপ্ত স্টোরেজ না রাখাঃ

রান্নাঘরে পর্যাপ্ত স্টোরেজের ব্যবস্থা না রাখলে, সেখানে বিভিন্ন জিনিসপত্র রাখার জায়গার সমস্যা তৈরি হয়। আলমারি, ক্যাবিনেট, এবং শেলফের সঠিক ব্যবহার না হলে রান্নাঘর অগোছালো হয়ে পড়ে। তাই এই বিষয়ে প্রথম থেকেই সচেতন থাকুন। নিজে আগে থেকে রিসার্চ করে রাখুন। যাতে স্টোরেজের ব্যবস্থা করার সময় কোন প্রকার ভুল না হয়।

৪. পর্যাপ্ত আলো না রাখাঃ

কিচেন বা রান্নাঘরে পর্যাপ্ত আলো না থাকলে, কাজ করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে খাবার প্রস্তুত করার সময়, আলো না থাকলে সঠিকভাবে কাজ করা যায় না। রান্নাঘরের প্রতিটি অংশে যথাযথ আলোর ব্যবস্থা করা জরুরি। তাই পরিকল্পনায় আলোর ব্যবস্থা নিয়ে প্ল্যান বানিয়ে রাখুন।

৫. বায়ুচলাচলের অভাবঃ

রান্নাঘরে বায়ুচলাচলের অভাব থাকলে, ঘরে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। এতে রান্নাঘর দুর্গন্ধময় হয়ে ওঠে। এক্সস্ট ফ্যান বা চিমনি বসানোর মাধ্যমে এই সমস্যা সহজেই সমাধান করা যায়। তাই এই দুটোর যেকোনো একটি বসানোর ব্যবস্থা রাখুন। পারলে দুটোই করতে পারেন। পরে করতে চাইলে এগুলো লাগানোর জায়গা, কানেকশান কাজ করার সময়েই বানিয়ে রাখবেন।

৬. সঠিক উপকরণ নির্বাচন না করাঃ

রান্নাঘর পুনর্নির্মাণের সময়, উপকরণ নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সস্তা বা নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করলে, সেটি দীর্ঘস্থায়ী হয় না। পুনর্নির্মাণের পর আবারো মেরামতের প্রয়োজন হতে পারে। তাই একবারে কম দামের জিনিস সব না কিনে, সময় নিয়ে ভালো জিনিস কেনার দিকে বিনিয়োগ করুন।

৭. কর্মক্ষেত্রের সঠিক আকার না রাখাঃ

রান্নাঘরের কর্মক্ষেত্র সঠিকভাবে ডিজাইন করা না হলে, রান্না করার সময় কাজ করা বেশ কষ্টকর হয়। কর্মক্ষেত্র পর্যাপ্ত প্রশস্ত না হলে, রান্নার সময় বিভিন্ন কাজ করা যায় না। সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই রান্নাঘরের যাবতীয় কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা অবশ্যই রাখুন।

৮. অপর্যাপ্ত সংরক্ষণ ব্যবস্থা রাখাঃ

জিনিসপত্র সংরক্ষণের জন্য রান্নাঘরে ক্যাবিনেট ও ড্রয়ারের সঠিক ব্যবহার জরুরি। অনেক সময় পর্যাপ্ত ক্যাবিনেট না থাকলে, রান্নাঘর অপরিষ্কার এবং এলোমেলো মনে হয়।

৯. নিরাপত্তার বিষয় ভুলে যাওয়াঃ

নিরাপত্তা একটি প্রধান বিষয়, রান্নাঘর পুনর্নির্মাণের সময় মাথায় রাখুন। ইলেকট্রিক সংযোগ এবং গ্যাস লাইন সঠিকভাবে বসানো না হলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই বিষয়গুলো খুবই মনোযোগ সহকারে দেখা উচিত।

১০. আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার না করাঃ

বর্তমানে রান্নাঘরে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সাধারণ হয়ে গেছে। অনেকেই রান্নাঘর পুনর্নির্মাণের সময় এই বিষয়টি উপেক্ষা করেন। স্মার্ট হোম প্রযুক্তি বা মডুলার কিচেনের ব্যবহার রান্নাঘরকে আরও কার্যকরী করে তুলতে পারে। তাই এই দিকে বিশেষ খেয়াল রাখবেন।

১১. ফ্লোরিংয়ের ভুল পছন্দঃ

রান্নাঘরের ফ্লোরিং সঠিকভাবে নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় ভুল ফ্লোরিং নির্বাচন করলে, তা দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রান্নাঘরের ফ্লোরিং টেকসই এবং সহজে পরিষ্কার করা যায় এমন হওয়া উচিত।

১২. সঠিক রঙের পছন্দ না করাঃ

রান্নাঘরের রং নির্বাচন করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এমন রং বেছে নেওয়া উচিত যা ময়লা বা দাগ সহজে বোঝা যায় না। যা ঘরের আলোর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।

১৩. অপেশাদার ডিজাইনার ব্যবহার করাঃ

অনেকেই পেশাদার ডিজাইনার ব্যবহার না করে নিজেরাই রান্নাঘর ডিজাইন করতে যান। এটি বড় ধরনের ভুল হতে পারে, কারণ পেশাদাররা জানেন কীভাবে একটি রান্নাঘর কার্যকরী এবং সৌন্দর্যময় করা যায়। অনেকেই ভাবেন এটা অনেক ব্যয় সাপেক্ষ। সেক্ষেত্রে বলে রাখি, আজকাল অনেক এমন পেশাদার ডিজাইনার আছেন, যারা আপনাকে সঠিক প্ল্যান বানিয়ে দিতে পারেন। আপনি বাকি কাজ নিজেও করতে পারেন।

১৪. সঠিক কিচেন আইল্যান্ড না বসানোঃ

কিচেন আইল্যান্ড একটি কার্যকরী উপাদান। কিন্তু এর সঠিক আকার এবং স্থান নির্বাচন না করলে রান্নাঘরের জায়গা কমে যায় এবং চলাফেরায় সমস্যা হয়। তাই খুব মন দিয়ে এই বিষয়ের দেখভাল করুন।

১৫. অতিরিক্ত ক্যাবিনেট বসানোঃ

অনেক সময় অতিরিক্ত ক্যাবিনেট বসানোর ফলে রান্নাঘর সংকীর্ণ এবং অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। ক্যাবিনেটের সংখ্যা ও আকার সঠিকভাবে নির্বাচন করা উচিত। যাতে পর্যাপ্ত জায়গা থাকে।

১৬. সঠিক আসবাব না নির্বাচন করাঃ

রান্নাঘরের জন্য উপযোগী আসবাব নির্বাচন করা প্রয়োজন। অনেকেই ভুল আসবাব পছন্দ করে। যা রান্নাঘরে ফিট হয় না বা কার্যকরী হয় না।

১৭. সঠিক কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স না বেছে নেওয়াঃ

রান্নাঘরের অ্যাপ্লায়েন্স যেমন ওভেন, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি সঠিক আকার এবং ফাংশন অনুযায়ী বেছে নেওয়া উচিত। ভুল অ্যাপ্লায়েন্স বেছে নিলে রান্নাঘরের কাজ আরও কঠিন হয়ে ওঠে।

১৮. অতিরিক্ত শেলফ রাখাঃ

অনেক সময় অতিরিক্ত শেলফ বসানোর ফলে রান্নাঘর অগোছালো এবং অপরিপাটি মনে হয়। সঠিকভাবে শেলফ ব্যবহার করা উচিত। যাতে কাজের সময় তা সহজেই ব্যবহার করা যায়।

১৯. জলরোধী ব্যবস্থা না রাখাঃ

রান্নাঘরের জন্য জলরোধী ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। রান্নার সময় জল ফেলার সমস্যা হয় এবং তা রান্নাঘরের ফ্লোরিং বা অন্যান্য অংশে ক্ষতি করতে পারে।

২০. সঠিক স্থানে সিঙ্ক না বসানোঃ

সিঙ্কের সঠিক অবস্থান ঠিক করা রান্নাঘরের কার্যকরীতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক স্থানে সিঙ্ক না বসালে, জল ব্যবহারে অসুবিধা হয়। রান্নার কাজও ব্যাহত হয়।

২১. একাধিক স্টাইলের সংমিশ্রণঃ

রান্নাঘরের ডিজাইনে বিভিন্ন স্টাইল একত্রিত করা হলে দেখতে ভালো লাগে না। এটি অগোছালো এবং অসঙ্গতিপূর্ণ মনে হয়। একটি নির্দিষ্ট থিম বা স্টাইল নির্বাচন করা উচিত।

২২. রান্নাঘরের লেআউটের অগ্রাধিকার না দেওয়াঃ

কিচেনের লেআউট পরিকল্পনা না করলে কাজ করার সময় অসুবিধা হতে পারে। কাজের প্রক্রিয়া অনুযায়ী লেআউট তৈরি করা উচিত। আগে থেকে এটা করে রাখুন। তাতে অনেক সুবিধা হবে।

২৩. সঠিক উচ্চতার কাউন্টারটপ নির্বাচন না করাঃ

কাউন্টারটপের উচ্চতা আপনার উচ্চতার সাথে মানানসই হওয়া উচিত। উচ্চতা সঠিকভাবে নির্ধারণ না করলে রান্নার সময় সমস্যা হয়। তাই পুনর্নির্মাণ করার সময় সঠিক উচ্চতার কাউন্টারটপ নির্বাচন করুন।

২৪. রান্নাঘরের সজ্জায় অতিরিক্ত ফোকাসঃ

রান্নাঘরের সজ্জায় অতিরিক্ত মনোযোগ দিলে কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। সজ্জার পাশাপাশি কার্যকারিতার দিকেও নজর দেওয়া উচিত। যতটা মানানসই লাগে বাকি সবকিছুর সাথে ততটা সাজান। অতিরিক্ত সজ্জা সবসময় দেখতে ভালো লাগে না।

২৫. বারান্দা বা জানালার অভাবঃ

রান্নাঘরে জানালা বা বারান্দার অভাব থাকলে প্রাকৃতিক আলো এবং বায়ুচলাচলের অভাব হয়। এটি রান্নাঘরকে অন্ধকার এবং অস্বস্তিকর করে তোলে। ছোট জানলা থাকলে তা খোলার অবস্থায় রাখুন। বন্ধ ঘর বিশেষ করে রান্নাঘর একদমই ভালো না।

২৬. সঠিক টাইলস নির্বাচন না করাঃ

রান্নাঘরের টাইলস নির্বাচনে ভুল হলে, তা জল প্রতিরোধী বা টেকসই হয় না। সঠিক টাইলস বেছে নেওয়া জরুরি।

২৭. সঠিক গ্যাস এবং ইলেকট্রিক সংযোগের অভাবঃ

গ্যাস এবং ইলেকট্রিক সংযোগ সঠিকভাবে না করা হলে এটি বিপজ্জনক হতে পারে। পেশাদারদের মাধ্যমে সঠিক সংযোগ নিশ্চিত করা উচিত। তাছাড়া এগুলো রান্নাঘরের সাথে মানানসই ভাবে রাখার ব্যবস্থা করা উচিত।

২৮. প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লায়েন্সের অভাবঃ

রান্নাঘরে কিছু অপরিহার্য অ্যাপ্লায়েন্স যেমন মিক্সার, ব্লেন্ডার ইত্যাদি না থাকলে কাজ করতে সমস্যা হয়। এটি রান্নার সময় কষ্ট দেয়। তাই এগুলো রাখার কথা আগে থেকেই প্ল্যানে রাখুন। বাজেটের পরে সমস্যা হবে না।

২৯. রান্নাঘরের গায়ে মাত্র একটি পোর্টেবল সিঙ্ক রাখাঃ

অনেকেই এটি আজকাল করে থাকেন। পরে গিয়ে হয়রানি হয়। রান্নাঘরে শুধুমাত্র একটি পোর্টেবল সিঙ্ক থাকলে, এটি অনেক সময় ঝামেলার সৃষ্টি করে। সঠিক স্থানে স্থায়ী সিঙ্ক থাকা উচিত।

৩০. দরজা এবং জানালার সঠিক স্থান নির্ধারণ না করাঃ

রান্নাঘরের দরজা এবং জানালার সঠিক স্থান নির্ধারণ করুন। না করলে প্রবেশ এবং বের হওয়ার সময় সমস্যা হয়। ডিজাইন করার সময় এই বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।

রান্নাঘর পুনর্নির্মাণ একটি বড় বিনিয়োগ। এটি সঠিকভাবে করতে হলে অনেক বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। উপরোক্ত ৩০টি ভুল এড়িয়ে চলুন। এটি করলে, রান্নাঘর পুনর্নির্মাণের পর একটি সুন্দর, কার্যকরী এবং দীর্ঘস্থায়ী রান্নাঘর পেতে পারেন।

Recommended For You

Visual Stories

Article Tags:
·
Article Categories:
Food-kitchen-insights

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

মুখরোচক ফ্রাইড রাইসের ৯ টি রেসিপি বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী সকালের জলখাবার বাঙালির ১০ টি আচার যা জিভে জল আনে নিমেষে! মধ্যপ্রাচ্যে খুবই বিখ্যাত এই ৯ টি বাঙালির খাবার অযোধ্যার বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী ১০ টি খাবার!