বিদায় নিয়েছেন উমা কৈলাসের পথে। তবে বাঙালীর ঘরে ঘরে মা লক্ষ্মীর আসার সময় হল। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। মা লক্ষ্মীর আরাধনায় নানা রকমের খাবারের সম্ভারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল খিচুড়ি। আজ তাই লক্ষ্মী পুজো স্পেশাল একপাকে ভোগের খিচুড়ি বানানোর রেসিপি নিয়ে চলে এলাম। অনেকেরই জানা আবার অনেকেরই অজানা। বিশেষ করে বাড়ির নতুন বউদের যদি এবছর মা লক্ষ্মীর ভোগের খিচুড়ি বানানোর দায়িত্ব পড়ে, তাহলে এই লেখা খুব কাজে আসবে তাদের। স্টেপ বাই স্টেপ দেখে নিন একপাকে ভোগের খিচুড়ি কিভাবে বানাবেন। খুবই সহজ এই পদ্ধতিতে বানালে।
ক. লক্ষ্মী পুজো স্পেশাল একপাকে ভোগের খিচুড়ির উপকরণঃ
- সোনামুগ ডাল ৫০০ গ্রাম
- গোবিন্দ ভোগ চাল ৫০০ গ্রাম
- সরষের তেল ১৫০ গ্রাম
- ঘি ৫০ গ্রাম (রান্নার সময়)
- ঘি দুই চা চামচ (রান্নার পর)
- নারকেল কুচি এক কাপ
- তেজপাতা ৫-৬টা
- ফাটিয়ে নেওয়া শুকনো লঙ্কা ৭-৮টা
- এক চা চামচ গোটা জিরে
- আদা বাটা ২ চা চামচ
- হলুদ গুঁড়ো এক চা চামচ
- জিরে গুঁড়ো ১.১/২ চা চামচ
- লাল লঙ্কার গুঁড়ো ২ চামচ
- কাঁচা লঙ্কা ৪-৫ টা চিরে নেওয়া
- নুন স্বাদ অনুযায়ী
- চিনি ১/২ চামচ
- গরমমসলা এক চা চামচ
- জল দেড় লিটার
খ. একপাকে ভোগের খিচুড়ি বানানোর পদ্ধতিঃ
কড়াই হালকা গরম হলে তাতে সোনামুগ ডাল ৫০০ গ্রাম দিয়ে দিন। শুকনো খোলায় (কড়াইয়ে) ভালো করে ডালটা ভেজে নেবেন। তবে খুব বেশি লাল করে ভাজবেন না। ২-৩ মিনিট সময় ধরে ভাজবেন, ক্রমাগত নাড়তে থাকবেন। যেহেতু একপাকের খিচুড়ি তাই ডাল আর চাল একসাথে সেদ্ধ করতে হবে। বেশি ডাল ভেজে ফেললে ডাল সেদ্ধ হবে না। ডাল ভাজা হয়ে গেলে এটা নামিয়ে ভালো করে দুই থেকে তিনবার জলে ধুয়ে নেবেন।
এবার কড়াইয়ে সরষের তেল ১৫০ গ্রাম ও ঘি ৫০ গ্রাম দিয়ে দিন। আগেই বলে রাখি বড় আকারের কড়াই নেবেন। বা যে পাত্রে বানাবেন তা যেন বড় আকারের হয়। তেল ভালো করে গরম হয়ে গেলে আঁচ কমিয়ে এতে তেজপাতা ৫-৬টা, ফাটিয়ে নেওয়া শুকনো লঙ্কা ৭-৮টা ও এক চা চামচ গোটা জিরে দিন। এক মিনিট ভাজার পর এক কাপ নারকেল কুচি যোগ করুন। ২-৩ মিনিট ভাজার পর আদা বাটা ২ চা চামচ দিন। কাঁচা আদার গন্ধ না যাওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।
আদা কষানোর পর এতে দিয়ে দিন আগে থেকে ভেজে ধুয়ে রাখা ডাল। মসলার সাথে ৩-৪ মিনিট ভালো করে ডালটা ভেজে নিন। তারপর এতে দিয়ে দিন ভালো করে ধুয়ে রাখা ৫০০ গ্রাম গোবিন্দ ভোগ চাল। এটা দেওয়ার পর ৩-৪ মিনিট ভালো করে কষিয়ে নিন মসলার সাথে। তারপর এতে হলুদ গুঁড়ো এক চা চামচ, জিরে গুঁড়ো ১.১/২ চা চামচ, লাল লঙ্কার গুঁড়ো ২ চামচ দিন। ভালো করে চাল ডালের সাথে গুঁড়ো মসলা মিশিয়ে নেওয়া হলে দেড় লিটার জল দিন। জল ফুটতে শুরু করলে এতে স্বাদ অনুযায়ী নুন ও ১/২ চামচ চিনি দিন। সাথে কাঁচা লঙ্কা ৪-৫ টা চিরে দিন। ভালো করে সেদ্ধ করুন। সেদ্ধ হয়ে গেলে হালকা পাতলা অবস্থায় খিচুড়ি রাখবেন। উপর থেকে গরমমসলা এক চা চামচ ও ঘি দুই চা চামচ ছড়িয়ে মিশিয়ে দিয়ে ঢাকা দিন। গ্যাস অগ করুন। আলাদা পাত্রে ঢেলে মা লক্ষ্মীকে একপাকে বানানো ভোগের খিচুড়ি নিবেদন করুন।
গ. খিচুড়ি বানানোর বিশেষ টিপসঃ
- খিচুড়ি বানাতে যে পরিমান ডাল নেবেন সেই একই পরিমান চাল নেবেন।
- খিচুড়ি বানানো হলে তা সামান্য পাতলা রাখবেন। প্রথমেই টাইট করে বানাবেন না।
- একপাকের খিচুড়িতে আলাদা করে ফোঁড়ন দেওয়া হয় না। একবারেই সব রান্না করা হয়।