skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

পাতলা চাল না মোটা চাল কোনটি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো!

পাতলা চাল মোটা চাল

ভাত বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতির একটি অপরিহার্য অংশ। আমাদের পাতে প্রতিদিনই ভাত না থাকলে চলে না। ভাত যা মূলত চাল থেকে প্রস্তুত হয়। চালের বিভিন্ন ধরন রয়েছে, তার মধ্যে পাতলা চাল এবং মোটা চাল অন্যতম। অনেকেই এই দুই প্রকার চালের মধ্যে বিভ্রান্ত হন এবং প্রশ্ন তোলেন। কোন চাল স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী? এ প্রসঙ্গে আমরা পাতলা এবং মোটা চালের পুষ্টিগুণ, স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও ক্যালোরি প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

চালের ধরণঃ পাতলা ও মোটা

চালকে মূলত তার আকার ও প্রস্থের ভিত্তিতে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। পাতলা চাল এবং মোটা চাল। পাতলা চাল সাধারণত অনেকটা লম্বা ও সরু হয়। যেমন বাসমতি চাল। অন্যদিকে, মোটা চাল অনেকটাই গোল ও চওড়া হয়, যেমন সিদ্ধ চাল বা আতপ চাল।

এই চালের প্রকারভেদ শুধু দেখতে ভিন্ন নয়। এর পুষ্টিগুণেও ভিন্নতা রয়েছে। তাই এর প্রতিটির স্বাস্থ্যগত প্রভাবও আলাদা। পাতলা চাল ও মোটা চালের মধ্যে কোনটি বেশি উপকারী, সেটি নির্ভর করে ব্যক্তির স্বাস্থ্যগত চাহিদা ও খাদ্যাভ্যাসের ওপর।

পাতলা চালের পুষ্টিগুণঃ

  • পাতলা চাল, যেমন বাসমতি বা চিনিগুঁড়া চাল, মূলত কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) সম্পন্ন হওয়ায় রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। ফলে এই চাল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছুটা নিরাপদ মনে করা হয়।
  • এছাড়া পাতলা চালের মধ্যে ক্যালোরির পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে কম থাকে। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাদের জন্য পাতলা চাল একটি ভালো বিকল্প। পাতলা চালের ভাত হালকা হওয়ায় সহজপাচ্য এবং পেটের উপর বাড়তি চাপ ফেলে না।
  • পাতলা চালের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফসফরাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। এগুলো শরীরের বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

মোটা চালের পুষ্টিগুণঃ

  • মোটা চাল, বিশেষ করে সিদ্ধ চাল, বাংলায় খুব জনপ্রিয়। এটি বিশেষভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয় যাতে এর খোসা আলাদা করার সময়ও ভিটামিন ও মিনারেলগুলি চালের মধ্যে রয়ে যায়। ফলে সিদ্ধ মোটা চাল পুষ্টিগুণের দিক থেকে তুলনামূলকভাবে ভালো।
  • মোটা চালে আঁশ বা ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে। যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। আঁশযুক্ত খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সহায়ক এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এছাড়া মোটা চাল খাওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে। ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্যও এটি সহায়ক হতে পারে।
  • মোটা চালের আরেকটি বড় সুবিধা হলো এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, এবং জিঙ্ক থাকে। এই পুষ্টি উপাদানগুলি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হাড়ের স্বাস্থ্যকে মজবুত করে।

গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও রক্তে শর্করার প্রভাবঃ

গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) একটি খাবারের সেই মান, যা জানায় কীভাবে সেই খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়। কম GI যুক্ত খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ে। ফলে দীর্ঘক্ষণ শক্তি বজায় থাকে। পাতলা চালের GI সাধারণত কম, যেমন বাসমতি চালের GI প্রায় ৫০-৫৮। তাই যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন বা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান। তাদের জন্য পাতলা চাল তুলনামূলকভাবে নিরাপদ।

অন্যদিকে, মোটা চালের GI সাধারণত বেশি থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায়। বিশেষ করে পরিশোধিত মোটা চাল বা পলিশড চালে GI উচ্চ হয়। তাই যারা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাদের মোটা চাল খাওয়ার সময় সতর্ক হওয়া উচিত।

প্রক্রিয়াকরণ ও পুষ্টির প্রভাবঃ

চালের প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি এর পুষ্টিগুণের উপর অনেক প্রভাব ফেলে। পরিশোধিত সাদা চালের ক্ষেত্রে চালের বাইরের স্তর সরিয়ে দেওয়া হয়। যা চালের আঁশ ও পুষ্টি উপাদান হারিয়ে ফেলে। পাতলা বা মোটা চালের ক্ষেত্রে, যদি তা বেশি পরিশোধিত হয়, তবে এর পুষ্টিগুণ কমে যায়।

অন্যদিকে, সেদ্ধ বা আধা সিদ্ধ চালের ক্ষেত্রে চালের বাইরের স্তর প্রায় অক্ষত থাকে। ফলে পুষ্টিগুণও বজায় থাকে। মোটা সেদ্ধ চালের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি প্রযোজ্য।

কোন চাল বেশি স্বাস্থ্যকর?

স্বাস্থ্যগত দিক থেকে দেখলে, মোটা চালের আঁশযুক্ত গঠন হজমে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। যারা দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে চান এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগছেন। তাদের জন্য মোটা চাল একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।

অন্যদিকে, যারা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বা ওজন কমানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন, তাদের জন্য পাতলা চাল উপকারী হতে পারে, বিশেষ করে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের কারণে। পাতলা চালের ভাত দ্রুত হজম হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

শেষকথাঃ

তবে, সঠিক পরিমাণে এবং সঠিক প্রক্রিয়ায় চাল খাওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রচুর পরিমাণে ভাত খাওয়া যেকোনো ধরনের চালের ক্ষেত্রেই ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। তাই চালের পরিমাণ এবং সাথে সুষম খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা প্রয়োজন।

পাতলা এবং মোটা চালের মধ্যে কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর তা এক কথায় বলা মুশকিল। কারণ এটি সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা এবং চাহিদার উপর নির্ভর করে। মোটা চালে আঁশ বেশি থাকায় অন্ত্রের জন্য উপকারী, আর পাতলা চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তুলনামূলকভাবে ভালো।

সুতরাং, চাল বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের শারীরিক প্রয়োজন ও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

Recommended For You

Visual Stories

Article Tags:
Article Categories:
Lifestyle

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

মুখরোচক ফ্রাইড রাইসের ৯ টি রেসিপি বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী সকালের জলখাবার বাঙালির ১০ টি আচার যা জিভে জল আনে নিমেষে! মধ্যপ্রাচ্যে খুবই বিখ্যাত এই ৯ টি বাঙালির খাবার অযোধ্যার বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী ১০ টি খাবার!