পিকনিক মানেই আনন্দের ঘনঘটা। জানি শীতকাল নয়, কিন্তু কাজের চাপে আর সময়ের অভাবে পরিবারের সাথে একটা দিন ভালো করে কাটানো হয় না অনেকেরই। নিজেদের জন্য ছোট্ট করে একটা পিকনিক প্ল্যান করলেই বা কি ক্ষতি। এই গরমে বাইরে না গিয়ে ঘরেই একটা ছোট্ট পিকনিক করার প্ল্যান বানান।
পিকনিক মানেই খাওয়া দাওয়া। তবে রান্নার ঝামেলায় সারাটা সময় না কাটিয়ে বানিয়ে ফেলুন কিছু মজাদার খাবার। তাই আজকে প্রেজেন্ট করছি ৩টি সহজ, মজাদার পিকনিক রেসিপি যা খেতে ভালোবাসবে সব্বাই।
১. চিকেন অ্যাভোকাডো স্যান্ডউইচঃ
কি কি লাগবেঃ

- মুরগীর বুকের মাংস – বড় ২ টুকরা
- ময়দা – ১০০ গ্রাম
- ডিম (ফেটানো) – ১টি
- আমন্ড কুচি – ৩ টেবিল চামচ
- তিলের বীজ – ১ টেবিল চামচ
- ভেজিটেবল অয়েল – ৩ টেবিল চামচ
- অ্যাভোকাডো – ছোট ২টি
- লেবুর রস – অর্ধেকটা
- কাঁচা দুধ – সামান্য
- বান – ৪টি
- লবণ – এক চিমটি
- লেটুস পাতা
কিভাবে বানাবেনঃ
প্রথমে একটি বোর্ডে মুরগীর টুকরাগুলো রেখে বেকিং শীট দিয়ে ঢেকে দিন। তারপর বেলন দিয়ে জোরে জোরে পিটিয়ে চ্যাপ্টা করুন। খেয়াল রাখবেন মাংসের থিকনেস যেন সমান থাকে। কোথাও মোটা রয়েছে কোথাও বেশি পাতলা রয়েছে এরকম হলে চলবে না।
এবারে পাতলা মাংসগুলো আড়াআড়িভাবে কেটে ফেলুন। একটি বাটিতে ময়দা নিন। অপর একটি বাটিতে ডিম ও দুধ গুলে নিন। মুরগীর টুকরাগুলো প্রথমে ময়দায় গড়িয়ে তারপর ডিম-দুধের মিশ্রণে গড়িয়ে নিন।
ময়দা যেটুকু বাকি থাকবে তাতে বাদাম কুচি ও তিল মিশিয়ে ফেলুন। তারপর মাংস আবার এতে গড়িয়ে নিন। বড় একটি ফ্রাইপ্যান নিয়ে তাতে মোট তেলের অর্ধেকটা ঢালুন। মিডিয়াম হিটে মাংস ৪-৫ মিনিট ভাজুন, যতক্ষণ না পর্যন্ত সোনালী এবং মচমচে হচ্ছে।
পুনরায় টুকরাগুলো উল্টানোর সময়ে বাকি তেলটুকু দিয়ে দিবেন। নামানোর আগে মাংসের সবচাইতে মোটা দিকটা একটু কেটে দেখবেন ভাজা ঠিকমতো হয়েছে কিনা। নাহলে আরো কিছুক্ষণ ভাজতে হবে।
ভাজা হয়ে গেলে চুলা অফ করে মাংস ৫ মিনিট ঠান্ডা হতে দিন। অ্যাভোকাডো খোসা ছাড়িয়ে মাঝখানে কেটে দুই ভাগ করে নিন। তারপর ফলের মাংসল অংশ একটি বাটিতে নিয়ে তার সাথে লেবুর রস এবং লবণ দিয়ে চটকে নিন।
একটা বান নিয়ে তাতে প্রথমে অ্যাভোকাডোর মিশ্রণ বিছিয়ে দিন। তারপর লেটুস পাতা দিয়ে মাংসের টুকরা দিন। সবশেষে আরেকটি বান উপরে দিয়ে দিন। এরপরে স্যান্ডউইচ মাঝ বরাবর কেটে ফেলুন। হয়ে গেল মজাদার চিকেন-অ্যাভোকাডো স্যান্ডউইচ।
প্রস্তুতি সময় – ৩০ মিনিট
রান্নার সময় – ১০ মিনিট
পরিবেশন সংখ্যা – ৪ জন
২. কোকোনাট চিকেন নুডলস সালাদঃ
কি কি লাগবেঃ
- মুরগীর বুকের মাংস – বড় ১ টুকরা বা ছোট ২ টুকরা
- নারিকেলের দুধ – ৪০০ মিলি
- আদা – ৩ স্লাইস
- লেমন গ্রাস – ১ গোছা
- এগ নুডলস – ১৫০ গ্রাম
- পিনাট বাটার – ২ টেবিল চামচ
- বরবটি সিদ্ধ ১ ইঞ্চি করে কাটা – এক মুঠো
- চেরি টমেটো – ১২টি
- কচি পালং শাকের পাতা – ২ মুঠো
- লবণ – এক চিমটি
কিভাবে বানাবেনঃ
একটি সসপ্যানে নারিকেলের দুধ, মাংস, লেমন গ্রাস, এবং আদা একসাথে জ্বাল দিন। এতে লবণ যোগ করুন এবং আঁচ কমিয়ে ১০-১৫ মিনিট রাখুন। চিকেন সিদ্ধ হলে চুলা বন্ধ করে ঠান্ডা হতে দিন।
এগ নুডলস রান্না করে ফেলুন প্যাকেটের নির্দেশনা অনুযায়ী। জ্বাল দেয়া দুধ থেকে মাংস আলাদা করে ঝুরি করতে থাকুন। তারপর এই দুধে পিনাট বাটার মিশিয়ে ঘন গ্রেভি তৈরি করুন। রান্না করা নুডলস ৪টা জার বা বাক্সে সমানভাবে ভাগ করে ফেলুন।
চেরি টমেটোগুলো কেটে দু’ভাগ করে নিন। নুডলসের উপর প্রথমে নারিকেল দুধের গ্রেভি, বরবটি, টমেটো, ঝুরি করা মাংস, এবং পালং শাক পাতা দিয়ে দিন। জারগুলো ঢাকনা আটকে ফ্রিজে রেখে দিন যতক্ষণ না পর্যন্ত পিকনিকে রওনা হচ্ছেন। সরাসরি জার থেকে অথবা বাটিতে ঢেলে পরিবেশন করুন কোকোনাট চিকেন নুডলস সালাদ।
প্রস্তুতি সময় – ৩০ মিনিট
রান্নার সময় – ১৫ মিনিট
পরিবেশন সংখ্যা – ৪ জন
৩. কারি চিকেন সালাদঃ
কি কি লাগবেঃ

- হাড় ছাড়া মুরগীর বুকের মাংস – দেড় কেজি
- লো ফ্যাট সাওয়ার ক্রিম – ১ কাপের চার ভাগের এক ভাগ
- মেয়োনিজ – ২ টেবিল চামচ
- লেবুর খোসা ঝুরি – ১ চা চামচ
- লেবুর রস – ২ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজ (মিহি করে কাটা) – ২টি
- ধনেপাতা কুচি – ১ কাপের চার ভাগের এক ভাগ
- কিসমিস – আধা কাপ
- কারি পাউডার – ১ টেবিল চামচ
- কোষার সল্ট – পরিমাণমতো
- গোলমরিচের গুঁড়া – পরিমাণমতো
কিভাবে বানাবেনঃ
একটি মিডিয়াম সাইজের সসপ্যানের অর্ধেক জল পূর্ণ করে ফোটান। এতে ১ চা চামচ কোষার সল্ট আর মুরগীর মাংস দিয়ে দিন। আঁচ কমিয়ে ১২-১৫ মিনিট সিদ্ধ করুন। মাংস ঠান্ডা করে ছোট ছোট টুকরা করে কাটুন অথবা ছিঁড়ে নিন।
অন্য একটি বাটিতে সাওয়ার ক্রিম, মেয়োনিজ, লেবুর খোসা ঝুরি, লেবুর রস, এবং কারি পাউডার একসাথে ফেটিয়ে নিন। তারপর লবণ আর গোলমরিচের গুঁড়া দিয়ে সিজন করুন। সবশেষে পেঁয়াজ কুচি, ধনেপাতা কুচি, মাংস, এবং কিসমিস দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিন। আপনার কারি চিকেন সালাদ তৈরি।
প্রস্তুতি সময় – ২০ মিনিট
তৈরির সময় – ১০ মিনিট
পরিবেশন সংখ্যা – ৪ জন