জিলিপির প্যাঁচ নিয়ে কথা কিন্তু আমরা কমবেশি বলেই থাকি। কারোর মন যদি সিদাসাদা না হয় আমরা তা তুলনা করে বলি ‘ ওর মন একদম জিলিপির প্যাঁচের মত ‘। কিন্তু জিলিপিতে কেন প্যাঁচ থাকে সেটা সত্যি ভাবা হয় না। প্যাঁচালো না হয়ে অন্যরকম হতে পারতো! জিলিপিতে প্যাঁচ কেন থাকে এর উত্তর কিন্তু খুবই সহজ। চলুন আজ তা জেনে নেওয়া যাক।
জিলিপির জন্মকথা:
জিলিপি নিয়ে আমাদের এত প্রেম কিন্তু অনেকেই জানেন না যে, এটা ভারতের তৈরি খাবার নয়। প্রথম জিলিপির আবিষ্কার হয়েছিল প্রায় ৬০০ বছর আগে। তবে, ‘অক্সফোর্ড কম্পানিয়ন টু ফুড’ বইয়ের লেখা অনুযায়ী জানা যায় যে, ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মোহাম্মদ বিন হাসান আল বাগদাদির লেখা একটি বইয়ে জিলিপির বর্ণনা দেওয়া রয়েছে।
আবার, খাদ্য বিষয়ক কিছু গবেষকদের মতে, মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময়কালে ‘জাহাঙ্গিরা’ নামে প্রথম জিলিপি তৈরি করা হয়। তবে এটা ঠিকই যে, জিলিপি ভারতে এত জনপ্রিয় মিষ্টি হলেও এটি পশ্চিম এশিয়া থেকেই এই দেশে এসেছে।
কারণ মধ্যপ্রাচ্যের (খাদ্যবিষয়ক) গবেষক ক্লডিয়া রডেনের কোথায়, ত্রয়োদশ শতাব্দীর আগেই মিশরের ইহুদিরা তাঁদের হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে ‘জালাবিয়া’ নামক মিষ্টি বানাতেন, যা বর্তমান জিলিপির আদি রূপ বলে মনে করা হয়। ভারতে ১৪০০-১৫০০ খ্রিস্টাব্দে ‘কুণ্ডলিকা’ বা ‘জলবল্লিকা’ নামে জিলিপির প্রচলন ছিল তাও অনেকে বলেছেন।
কেন জিলিপিতে প্যাঁচ থাকে:
আসলে কোন নিয়ম মানতে এতে প্যাঁচ দেওয়া হয় না। জিলিপি ময়দা দিয়ে বানানো হয়, তাই ভাজার সময় যাতে ভেঙে গিয়ে নষ্ট না হয় তাই এই প্যাঁচ দেওয়া। বিশেষ আকৃতির জন্য এটি দেখতে লোভনীয় হয়ে ওঠে সেই জন্য প্যাঁচ দেওয়া হয়। তাছাড়া গোলাকার আড়াই প্যাঁচ দিয়ে বানানোর ফলে এক ব্যাচে কড়াইয়ে একসাথে অনেক জিলিপি ভাজা সম্ভব হয়। লম্বা আকার দিলে জায়গা বেশি লাগতো আর ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতো।
জিলিপির জন্মকথা নিয়ে নানা আলোচনা থাকলেও এর আকার নিয়ে কোথাও বিশেষ কোন তথ্য নেই। এই প্যাঁচ নিয়ে প্যাঁচালো ভাবনার ইতি এখানেই টানলাম। আপনাদের যদি অন্য কোন কারণ মনে হয় বা প্যাঁচ নিয়ে প্যাঁচালো ভাবনার দিক দেখাতে মন যায়, কমেন্টে জানান।