skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

সারাবছর গুড় সংরক্ষণ করার সহজ ঘরোয়া উপায়

গুঁড়

শীত পড়েছে। আর শীতকাল মানেই পাড়ার অলিতে-গলিতে গজিয়ে উঠতে শুরু করে মোয়ার দোকান। সেইসব ছোটখাটো দোকানে তো বটেই, বড়-বড় মিষ্টির দোকানেরও এইসময় প্রধান আকর্ষণ খেজুর গুড়ের মিষ্টি। ভোজনরসিক বাঙালিও এইসময় মুখিয়ে থাকে খেজুর গুড়ের জন্য। গুড় দিয়ে মিষ্টি থেকে শুরু করে পায়েস, পিঠে… বাঙালি হেঁসেলে শীতকাল জুড়েই চলতে থাকে আয়োজন। তবে দুঃখের বিষয়, শীতকালে খেজুর গুড়ের এহেন ক্রেজ থাকলেও এই গুড় গরম পড়লেই নষ্ট হয়ে যায়। তবে আজকাল নানা পদ্ধতিতে অনেকেই দীর্ঘসময় ধরে গুড় সংরক্ষণ করে সারাবছর ধরে ব্যবহার করেন।

গুড়

আখের গুড় বনাম খেজুর গুড়ঃ

বাঙালিদের কাছে গুড় বলতে মূলত খেজুর গুড় ও আখের গুড়ের ব্যবহারই প্রচলিত। এর মধ্যে আখের গুড় মোটামুটি সারাবছরই পাওয়া যায়। তাছাড়া এই গুড় অপেক্ষাকৃত ঘন বলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত ঠিক থাকে। তুলনায় খেজুর গুড় কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। শীতকাল ছাড়া এই গুড় পাওয়া যায় না, আর সামান্য গরম পড়লেই খেজুর গুড় নষ্ট হয়ে যায়। ঘরোয়া উপায়ে দীর্ঘদিন গুড় কীভাবে সংরক্ষণ করবেন, আজকের আলোচনায় রইল তার সন্ধান।

১. গুড় রোদে দিনঃ

সাধারণত দোকান থেকে কিনে আনার পর আমরা খেজুর গুড় ফ্রিজে রেখে দিই। একভাবে ফ্রিজে দীর্ঘদিন পড়ে থাকলে গুড় কিন্তু অনেকসময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই এবার থেকে গুড় কিনে এনে কাঁচের কৌটো বা জারে রাখুন। ফ্রিজে রাখার ফাঁকে-ফাঁকে কিছুদিন অন্তর-অন্তর এই গুড় রোদে দিন। দেখবেন, এভাবে গুড় অনেকদিন পর্যন্ত ভাল ও ফাঙ্গাসমুক্ত থাকবে।

২. জ্বাল দিয়ে ভালো রাখুনঃ

রোদে দেওয়ার পাশাপাশি যদি সম্ভব হয়, তাহলে কিছুদিন ছাড়া-ছাড়া গুড় জ্বাল দিতেও পারেন। একটি পাত্রে গুড়টি ঢেলে নিয়ে গ্যাসে ঢিমে আঁচে বসিয়ে দিন। এবার যতক্ষণ না বুদবুদ দেখা যায়, ততক্ষণ জ্বাল দিন। নামিয়ে ঠান্ডা করে ঘরের তাপমাত্রায় এলে আবার প্লাস্টিকের কৌটোয় করে ফ্রিজে ঢুকিয়ে দিতে পারেন। এভাবেও কিন্তু গুড় দীর্ঘদিন ভালো থাকে।

৩. পরিষ্কার পাত্রে সংরক্ষণঃ

অনেকসময় ব্যস্ততার কারণে গুড় রোদে দেওয়া বা জ্বাল দেওয়া সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে আপনি একটি পরিষ্কার কাচের জারেও খেজুর গুড় রেখে দিতে পারেন। তবে কৌটোয় গুড় ঢালার আগে দেখবেন, পাত্রটি যেন একেবারে শুকনো থাকে। এছাড়া চিনামাটি বা সেরামিকের পাত্রেও কিন্তু খেজুর গুড় বেশ কিছুদিন ভালো থাকে।

৪. ফাঙ্গাস হলে?

বাড়িতে পাটালি থাকলে তা যদি দীর্ঘদিন এমনি পড়ে থাকে, তাহলে ছাতা বা ফাঙ্গাস গজিয়ে যায়। এক্ষেত্রে একটি জিপলক ব্যাগে পাটালি ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। খেয়াল রাখবেন, ব্যাগ যেন একেবারেই এয়ারটাইট হয়। এটি আপনি প্রায় সারাবছরই ব্যবহার করতে পারবেন। অনেকসময় কাপড় দিয়ে মুড়েও পাটালি সংরক্ষণ করা হয়। এতেও কিন্তু দীর্ঘদিন পাটালি গুড় টাটকা থাকবে।

৫. হাওয়া বাতাস? খবরদার!

গুড়ই হোক বা পাটালি, খেয়াল রাখবেন, কোনওভাবেই যেন বাড়তি হাওয়া তাতে না লাগে। আগেই বলেছি এয়ারটাইট পাত্রে পাটালি সংরক্ষণ করুন। ব্যবহার করতে হলে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই নিয়ে আবার জিপলক ব্যাগ বন্ধ করে দিন। নয়তো পাটালি গুড় সাদা-সাদা হয়ে যেতে পারে। যদি এমন হয়ে যায়, তাহলে পাটালির টুকরোটি ধুয়ে নিয়ে শুকিয়ে আবার জিপলক ব্যাগে রেখে দেবেন, দেখবেন ভাল থাকবে। গুড়ের ক্ষেত্রেও কিন্তু এটি প্রযোজ্য। ভিজে চামচ একেবারেই গুড়ের কৌটোয় ব্যবহার করবেন না। দরকার হলে একটাই চামচ কৌটোর মধ্যে রেখে দিন। সেটি করেই প্রয়োজনমতো গুড় নিয়ে নিন। এতে গুড়ে সহজে ফাঙ্গাসও হবে না।

৬. খুব পাতলা গুড়?

গুড় যদি খুব পাতলা হয়, তাহলে সেটি তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। তাই যদি আপনি সেটি দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে চান, তাহলে জ্বাল দিয়ে খানিকটা ঘন করে নিন। এই উপায়ে কিছুটা হলেও বেশিদিন গুড় ভাল থাকবে।

পাটালি নষ্ট হলে কি করবেন?

যদি দেখেন দীর্ঘদিন রাখার পর পাটালি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তাহলে নষ্ট হয়ে যাওয়া বা ফাঙ্গাসযুক্ত অংশটি বাদ দিয়ে বাকি পাটালি পরিষ্কার করে ধুয়ে অল্প জল দিয়ে জ্বাল দিয়ে নিতে পারেন। এইভাবে পাটালি তরল করে আরও কিছুদিন ব্যবহার করতে পারবেন।

তবে নানারকম উপায়ে খেজুর গুড় সংরক্ষণ করা গেলেও দীর্ঘদিন রাখলে গুড়ের স্বাদ কিন্তু শীতের পর টাটকা থাকবে না। সেক্ষেত্রে হয়তো স্বাদের সঙ্গে সামান্য আপোষ করতে হলেও হতে পারে। তাই গুড়ের মজা নিতে হলে শীতকালই কিন্তু সেরা সময়। তাই মন খুলে খেজুর গুড় খান।

Article Categories:
Tips & Hacks

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *