আজকের রেসিপি আমি বানাতে শিখেছি আমার ৭৫বছর বয়সী কাকাবাবুর থেকে। বিশ্বাস করবেন না এত বয়েসে এসেও এত ভালো তিনি মুড়িঘণ্ট বানান, যে বড় বড় রাঁধুনিও হার মানবে। জানিনা ওনার মত বানাতে পেরেছি কিনা, তাও ট্রাই করলাম। আপনারাও একদিন বানিয়ে ট্রাই করুন। খেয়ে জানাবেন আজকের রেসিপি কেমন লাগলো খেতে।
উপকরণঃ
- কাতলা মাছের মাথা একটা
- গোবিন্দ ভোগ চাল ছোট কাপের এক কাপ
- আলু মাঝারি সাইজের ৩টে (ডুমো ডুমো করে কাটা)
- পেঁয়াজ পেস্ট ৩টে মিডিয়াম সাইজের
- তিন চামচ আদা পেস্ট
- হাফ চামচ রসুন পেস্ট
- দারচিনির ছোট টুকরো ৫-৬টা
- ছোট এলাচ ৫টা
- বড় কালো এলাচ ১টা
- লবঙ্গ ৪টে
- তেজপাতা ২টো
- দেড় চামচ হলুদ গুঁড়ো
- এক চামচ লঙ্কার গুঁড়ো
- জিরে গুঁড়ো দেড় চামচ
- ধনে গুঁড়ো এক চামচ
- কাশ্মীরি লাল মিরচ হাফ চামচ
- সরষের তেল ১৫০ গ্রাম
- ঘি এক চা চামচ
- গরমমসলা হাফ চামচ
- নুন স্বাদ অনুযায়ী
মুড়িঘণ্ট বানানোর রেসিপিঃ
মুড়িঘণ্ট বানাতে গেলে সবার প্রথমে যেটা করবেন তা হল গোবিন্দ ভোগ চাল ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার জলে ভিজিয়ে রাখবেন। তারপর কাতলা মাছের মাথা ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ৮ টুকরো মত করে নেবেন। তিনটে আলু ডুমো ডুমো করে কেটে নেবেন।
কড়াই গ্যাসে বসিয়ে তা হাল্কা গরম করে নেবেন প্রথমে, তারপর তাতে দিয়ে দেবেন ১৫০ গ্রাম সরষের তেল। তেল ভালো করে গরম হতে দেবেন। তেল থেকে ধোঁয়া উঠতে শুরু করলে তাতে আলুর টুকরো ভাজার জন্য দিয়ে দিন। লাল করে ভেজে নিয়ে তুলে রাখুন। এবার কাতলা মাছের টুকরোগুলো ভাজুন। বেশ কড়া করে মাছের টুকরোগুলো ভেজে নিতে হবে। ভাজা হয়ে গেলে মাছের টুকরো একটি পাত্রে তুলে রেখে দিন।
এবার ওই তেলে দারচিনির ছোট টুকরো ৫-৬টা, ছোট এলাচ ৫টা, বড় এলাচ একটা, দুটো তেজপাতা ও ৪টে লবঙ্গ দিয়ে দিন। এলাচগুলো ফাটিয়ে দেবেন। হাল্কা ভেজে নিয়ে এতে দিয়ে দেবেন পেঁয়াজ, আদা, রসুনের পেস্ট। এগুলো দিয়ে ভালো করে কসাবেন, যতক্ষণ না মসলার কাঁচা গন্ধ চলে যাচ্ছে। এটা ভাজতে ভাজতে, একটি বাটিতে জল নিয়ে দেড় চামচ হলুদ গুঁড়ো, এক চামচ লঙ্কার গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো দেড় চামচ, ধনে গুঁড়ো এক চামচ, ও কাশ্মীরি লাল মিরচ হাফ চামচ মিশিয়ে গুলে নিন। ভাজাটা হয়ে এলে তাতে এটা দিয়ে নেড়ে নিন ভালো করে। এক থেকে দুই মিনিট রান্না করার পর এতে ভিজিয়ে রাখা চাল জল ঝরিয়ে নিয়ে দিয়ে দিন। চালটা ততক্ষণ রান্না করুন যতক্ষণ না চাল ভাজা ভাজা হচ্ছে। ৫ থেকে ৬ মিনিট সময় মত রাখলেই এটা হয়ে যাবে। এবার এতে ভেজে রাখা মাছের টুকরো দিয়ে সবটা মিশিয়ে নিন। স্বাদ অনুযায়ী নুন দিয়ে দিন এবার। তারপর এতে জল দিন প্রায় ৩ থেকে ৪ গ্লাস মত। জল ততটা দিন যাতে সবকটা জিনিস জলে ডুবে যায়।
জল দেওয়ার পর জল ভালো করে ফুটতে শুরু করলে ভেজে রাখা আলু দিয়ে দিন। মাঝে মাঝে দেখতে থাকবেন চাল সেদ্ধ হল কিনা। আর মাছের টুকরোগুলো খুন্তি দিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে আরেকটু গুঁড়ো করে দিন। এতে এর টেস্ট খাওয়ার সময় ব্যাপক লাগবে। চাল সেদ্ধ হয়ে গেলেই গ্যাসের আঁচ বাড়িয়ে অতিরিক্ত জল থাকলে তা মাখা মাখা করে নেবেন। হয়ে গেলে এক চা চামচ ঘি, আর হাফ চামচ গরমমসলা উপর থেকে ছড়িয়ে দিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে রেখে দিন ৫ মিনিট মত। তৈরি হয়ে গেলো কাতলা মাছের মাথা দিয়ে সুস্বাদু মুড়িঘণ্ট। গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।
বিশেষ টিপসঃ
মুড়িঘণ্ট একদম শুকনো শুকনো খেতে ভালো লাগে না। একটু মাখা মাখা বেশি ভালো লাগে খেতে যাতে হাল্কা গ্রেভি থাকে। তাই চাল সেদ্ধ করার পর যদি জল বেশি শুকিয়ে যায় তাহলে হাফ গ্লাস জল গরম করে নিয়ে এতে দিয়ে দিন। গ্রেভি মাখা মাখা করে দিন তারপর।