‘মেছো’ আর ‘ভেতো’ এই দুটি শব্দ প্রতিটি বাঙালির সাথে কমবেশি মানায়। মাছ ভাত ছাড়া কি আর বাঙালিদের দিন কাটে? একদমই না। আর যদি খাওয়ার পাতে গরম গরম ভাতের সাথে মাছের তেল চচ্চড়ি থাকে তাহলে এক থালা ভাত সাবাড় নিমেষে। আজ মাছের তেল চচ্চড়ি বানানোর এমন একটি রেসিপি শেয়ার করছি যা একবার বানিয়ে খেলে বারবার বানাতে মন চাইবে। আর হ্যাঁ আমি যেভাবে বানাই তা আমার মায়ের রেসিপি। খুব জলদি এটা তৈরি হয়ে যায়।
উপকরণঃ
- মাছের তেল ৫০০ গ্রাম
- বেগুন মাঝারী সাইজের ছোট টুকরো করা
- আলু একটা বড় সাইজের ছোট টুকরো করা
- একটা ছোট সাইজের টম্যাটো টুকরো করা
- বড় সাইজের একটা পেঁয়াজ কুচি করা
- একটা গোটা রসুন পেস্ট করা (১০-১২ পিস কোয়া)
- তিনটে কাঁচা লঙ্কা পেস্ট করা
- হলুদ গুঁড়ো হাফ চামচ
- লঙ্কা গুঁড়ো এক চামচ
- নুন স্বাদ অনুযায়ী
- সরষের তেল ৬ চা চামচ
- একটা এলাচ ও একটা দারচিনি পেস্ট করা
মাছের তেল চচ্চড়ি বানানোর পদ্ধতিঃ
মাছের তেল ভালো করে ধুয়ে নিয়ে যতটা পারেন জল ঝরিয়ে একটি বাটিতে নিন। এবার সামান্য নুন ও সামান্য লঙ্কার গুঁড়ো এতে মাখিয়ে রাখুন ৫ মিনিট। গ্যাসে কড়াই বসিয়ে আগে হাল্কা গরম করে নিন। কড়াই গরম হলে তাতে সরষের তেল ৬ চা চামচ মত দিন। তেল থেকে ধোঁয়া উঠতে শুরু করলে মাছের তেল তাতে দিয়ে ঢেকে দিন। আঁচ মিডিয়াম রাখবেন। ৩ মিনিট মত ঢেকে রান্না করার পর ঢাকনা সরিয়ে এতে পেঁয়াজ কুচি দিন। গ্যাসের আঁচ সামান্য বাড়িয়ে দুমিনিট রান্না করার পর, এতে এক এক করে কেটে রাখা আলু, বেগুন, টম্যাটো দিয়ে দিন। নেড়েচেড়ে নিন ভালো করে। তারপর এতে দিয়ে দিন রসুনের পেস্ট, কাঁচা লঙ্কার পেস্ট আর এলাচ ও দারচিনির পেস্ট।
সবকটা পেস্ট দিয়ে দেওয়ার পর কম আঁচে ৫ থেকে ৬ মিনিট মত কষাতে থাকুন। তারপর হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কার গুঁড়ো ও স্বাদ অনুযায়ী নুন দিয়ে দিন। মিশিয়ে দিন ভালো করে। হলুদের কাঁচা গন্ধ চলে গেলে কড়াই ঢেকে দিন। আঁচ কমিয়ে রেখে ঘড়ি ধরে ১০ মিনিট রান্না হতে দিন। ঢাকনা খুলে দেখে নিন আলু বেগুন সব ভালো করে সেদ্ধ হয়েছে কিনা। দেখবেন পারফেক্ট সেদ্ধ হয়ে গিয়েছে এই সময়ের মধ্যেই। আর কি! রেডি তো ঝাল ঝাল মাছের তেলের চচ্চড়ি! গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।
তাহলে পেটুকগণ পড়ে নিলেন আজকের মাছের তেলের চচ্চড়ি রেসিপি। মাত্র ২০ থেকে ২৫ মিনিটে রেডি এই সুস্বাদু খাবার। যারা এটা আগে বানিয়ে খাননি তাদের বলছি জাস্ট একবার ট্রাই করুন, মুখে লেগে থাকবে এর টেস্ট।
বিশেষ টিপসঃ
মাছের তেল অনেক সময় রান্নার পর অল্প তেঁতো লাগে খেতে। তাই এটা ধুয়ে নেওয়ার পর জল ঝরিয়ে নুন মাখিয়ে কিছুক্ষণ রাখবেন। এরফলে তেঁতো ভাব কেটে যাবে।
মাছের তেল বানিয়ে ফ্রিজে রেখে খেতে চাইলে ভালো করে এয়ার টাইট কন্টেনারে ভরে রাখবেন। খাওয়ার আগে পরিমান মত নিয়ে গরম করে খাবেন।
মাছের তেলের গন্ধ অনেকে ভালো পান না। তারা এভাবে রান্না করে খান অতটা গন্ধ লাগবে না। আর খাওয়ার সময় অল্প গন্ধরাজ লেবু দিয়ে ভাত মাখিয়ে নেবেন এর সাথে, দুর্দান্ত টেস্ট হবে খেতে।