আমরা রান্না করার সময় অনেক ধরনের মসলার ব্যবহার করে থাকি। কিছু মসলা গুড়া করে, কিছু পেস্ট করে, আবার কিছু আস্ত মসলা দেই রান্না করার সময়। এমনি এক মসলার উপাদান হলো আদা বা জিঞ্জার। আদাকে রান্নায় দুই ভাবে ব্যবহার করা যায় যেমন পেস্ট করে বা বেটে আর একটি হলো পাউডার করে। অনেকেই আদা পাউডার কিভাবে করতে হয় তা জানেন না। আজ তাই চলে এসেছি আদাকে কিভাবে পাউডার করতে হয় সে রেসিপি নিয়ে।
আদার পাউডার বা জিঞ্জার পাউডার বানানোর উপায়ঃ
রোজ রোজ বাটার ঝামেলা থেকে বাঁচতে একদিন অনেকগুলো আদা গুঁড়া করে রেখে দিতে পারেন। এভাবে আদা নষ্টও হবে না আর রান্নাও সহজ হবে, সেই সাথে স্বাদের ও গন্ধের কোন পরিবর্তন হবে না। চলুন তাহলে ধাপে ধাপে জেনে নেই কিভাবে সহজ উপায়ে আদার পাউডার তৈরি করা যায়।
১. প্রথমে কিছু ফ্রেশ আদা নিয়ে নিন। আদাগুলো ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
২. চামচ, ছুরি বা বটি যেকোন একটি দিয়ে আদাগুলো খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। তবে হাতের নখ কিন্তু ব্যবহার করে এই কাজটি করতে যাবেন না। এতে পরে নখ অনেক ব্যাথা করবে এবং হাত জ্বলতেও পারে যেহেতু আদা একটু ঝাঝালো হয়। খোসা ছাড়ানোর সময় খুব সর্তকতার সাথে কাজটি করবেন। কারন অনেক সময় আদার রস বেরিয়ে যায় এবং তা চোখে মুখে লাগলে জ্বলতে পারে।
৩.আদা খোসা ছাড়ানোর পর আর তা ধুতে যাবেন না। খোসা ছাড়ানোর পর আদা ধোয়া হলে এর ঝাঝ কমে যায়। তাই আগেই পরিষ্কার করে নিবেন।
৪. এরপর ছুরি বা বটি নিন। আদাগুলো কেটে নিন। আদার টুকরা গুলো যতটা পারা যায় পাতলা করে কুচি কুচি করে কেটে নিবেন। চেষ্টা করবেন যাতে আদার টুকরাগুলো এক সমান হয় বা একই পুরুত্বের হয়। এতে করে সবগুলো আদা একই সময় এক সাথে শুকিয়ে যাবে। কিছু মোটা আবার কিছু পাতলা করে টুকরা করলে তা নিয়ে পরের ধাপটি করা সহজ হবে না। কারন কিছু টুকরা জলদি শুকাবে কিন্তু কতগুলো আবার কাঁচা কাঁচা থেকে যাবে। তাই কাটার সময় সাবধানে কাটতে হবে।
৫. সবগুলো আদা কাটা হয়ে গেলে একটি বড় পাত্র নিন। তার উপর একটি বেকিং পেপার বা কিচেন টিস্যু অথবা ফ্রেশ কোন কাগজ বিছিয়ে দিতে হবে। এরপর টুকরা গুলো সুন্দর করে একটি একটি করে বিছিয়ে দিন পাত্রের মধ্যে। সবগুলো একসাথে গাদাগাদি করে রাখতে যাবেন না। এতে করে শুকাতে বেশি সময় নিবে। আবার ভালোমত সবগুলো শুকাতেও পারবে না। তাই কিছুটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিতে চেষ্টা করবেন।
৬. তারপর আদাগুলো রোদে শুকাতে দিন। তিন থেকে চার দিন পর্যন্ত সময় নিয়ে ভালো করে আদার টুকরাগুলো রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। এমন মচমচে করে শুকাতে হবে যাতে ঝনঝন শব্দ পাওয়া যায় নাড়াচাড়া করলে। প্রয়োজন হলে আরো বেশি সময় নিয়ে শুকিয়ে নিতে হবে।
৭. পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে তা অন্য একটি পাত্রে তুলে নিন। এরপর একটি ব্লেন্ডার নিন। ব্লেন্ডারের যে জগে শুকনো উপকরন গুঁড়া করে তার মধ্যে শুকনো আদাগুলো দিয়ে দিতে হবে। এরপর অল্প অল্প করে দিয়ে ব্লেন্ড করে একদম মিহি গুঁড়া করে নিতে হবে। একবারে সব দিয়ে দিলে সহজে মিহি গুঁড়া
হতে চায় না। আবার সময়ও বেশি লাগে। তাই চেষ্টা করবেন সবসময় অল্প অল্প করে দিয়ে গুঁড়া করে নিতে।
৮. একটি জার বা বয়াম নিন। তা ভালো করে ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে। এরপর সর্ম্পূণ শুকিয়ে নিতে হবে যাতে কোন পানি না থাকে।
৯. সবগুলো আদা মিহি করে গুঁড়া করা হয়ে গেলে শুকিয়ে নেয়া জারটিতে ঢেলে দিন। এবং জারের মুখ ভালো করে বন্ধ করে দিতে হবে। যাতে বাতাস ঢুকতে না পারে। বাতাস ঢুকলে আদার পাউডার দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
১০. তৈরি হয়ে গেল আপনার আদা পাউডার বা জিঞ্জার পাউডার। এটাকে আপনি এভাবেও ব্যবহার করতে পারেন, আবার চাইলে এতে কিছুটা পানি যোগ করে দিন ব্যাস হয়ে গেল আদার পেস্ট। যে রান্নায় আদার পেস্ট দরকার হবে তাতে এভাবে দিতে পারেন। আবার গুঁড়া টাও ব্যবহার করতে পারেন। এতে রান্নার স্বাদ ও গন্ধে কোন রকম ভিন্নতা আসবে না।
বিশেষ টিপসঃ
আদার পাউডার ব্যবহারের জন্য একটি নির্দিষ্ট চামচ ব্যবহার করুন। খেয়াল রাখতে হবে যাতে চামচটি ভেজা না থাকে। প্রত্যেকবার ব্যবহারের পর জারের মুখটি ভালো করে বন্ধ করে দিতে হবে যেন কোন ভাবে বাতাস ঢুকতে না পারে।
সরিষা পাউডার কিভাবে তৈরী করা হয়? দয়া করে জানাবেন।
নিশ্চয়ই জানাবো। আমায় কয়েকদিন সময় দিন। রিসার্চ করে লেখা নিয়ে আসছি।
আমাদের সাইটে দেখুন আপনার দেওয়া বিষয়ের উপর লেখা লিখেছি।