কাবাব আমরা সকলে পছন্দ করলেও গ্রিল বা মাইক্রোভেনের অভাবে তা ঘরে বানাতে পারি না অনেকেই। আজ তাই এমন ১০টি টিপস নিয়ে এসেছি আপনাদের কাছে যাতে করে গ্রিল বা মাইক্রোভেন ছাড়াই ঘরে কাবাব বানাতে পারবেন যখন খুশি।
১. গ্যাসে বানান কাবাবঃ
খুব সহজেই আপনি চাইলে গ্যাসে কাবাব বানাতে পারেন। তবে গ্যাসে কাবাব বানাতে হলে ননস্টিক প্যান ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। এতে করে ফলাফল ভালো পাওয়া যাবে। নর্মাল প্যান বা কড়াইতে ভাজতে গেলে কাবাব নিচ থেকে লেগে যাওয়া বা পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
২. ইট ব্যবহার করেঃ
বাড়িতে যদি কয়েকটি ইট থাকে তাহলে কাবাব বানাতে আর গ্রিলের প্রয়োজন হবে না। ইট ব্যবহার করেই বানিয়ে নেওয়া যাবে। চারপাশে ইট দিয়ে সাজিয়ে একটি কৃত্রিম চুলা বানিয়ে নিলেই হয়ে যাবে। এবং মাঝখানে কিছু কয়লা বা অপ্রয়োজনীয় কাঠ দিয়ে আগুন জ্বেলে দিন।
৩. কয়লা ব্যবহার করেঃ
কয়লাতে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয় যা মাংসকে দ্রুত ও পারফেক্টলি ঝলসাতে পারে। কয়লা যদি সহজলভ্য হয় তবে এটি ব্যবহার করে কাজ সেড়ে ফেলুন।
৪. পাথরের সাহায্যেঃ
পাথর দীর্ঘক্ষণ তাপ ধরে রাখে তাই এটি মাংস ঝলসানো কাজে ব্যবহার করতে পারেন। বড় আকারের একটা পাথর যদি পাওয়া যায় তবে তা আগুনের আঁচে রেখে দিন। পাথরটি সম্পূর্ণ গরম হয়ে এলে মাংসের টুকরোগুলো পাথরের উপর সাজিয়ে দিন। কিছু সময় পর পর অল্প তেল ব্রাশ করে উল্টে দিন। এভাবে আপনার সুস্বাদু কাবাব তৈরি হয়ে যাবে। সেই সাথে এটাকে বারবার গরম করার ঝামেলা পোহাতে হবে না।
৫. শুকনো ডাল পালা দিয়েঃ
ছুটির দিনে আপনার কাবার খাওয়ার বাসনা যদি জাগে তবে নিরাশ হবার কিছু নেই। কিছু ডাল-পালা সংগ্রহ করুন। মাটিতে ১ ফুট গর্ত করে ডাল-পালাগুলো ছোট ছোট করে ভেঙে গর্তে ঢুকিয়ে আগুন জ্বালিয়ে নিন। এরপর মাংস টুকরো টুকরো করে বড় কাঠিতে করে সেগুলো তাতে ঝুলিয়ে দিন। এক্ষেত্রে গাছের বড় সরু ডালগুলোও কাজে লাগাতে পারেন।
৬. বাঁশের ছাঁচের ব্যবহারঃ
হাতের কাছে কয়লা বা ইট কিছুই যদি না পাওয়া যায় তবে কি করবেন? বেশি কিছু করতে হবে না, তখন এক ফুট মাপের একটুরো বাঁশ সংগ্রহ করে নিন। কারন এটাই আপনাকে আজ কাবাব খেতে সাহায্য করবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে বাঁশের ছাঁচের দুই পাশের মুখ যেন বন্ধ থাকে। অথবা এক পাশ বন্ধ হলেও হবে। এরপর বাঁশের ছাঁচের মধ্যে মাংসের কিমা বা কুচিগুলো ঢুকিয়ে দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিতে হবে।
এবার আগুনের মধ্যে বাঁশের ছাঁচটি ঢুকিয়ে দিতে হবে এবং ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর পর তা পর্যবেক্ষণ করতে থাকুন। যখন দেখবেন সুন্দর ঘ্রাণ চলে এসেছে এবং মাংস খুব ভালো করে সিদ্ধ হয়ে গিয়েছে তখন বের করে পরিবেশন করুন। তবে এই পর্যায় বাঁশের ছাঁচটি প্রচন্ড পরিমাণে গরম থাকবে তাই বের করার কাজটি অনেক সাবধানে করতে হবে। যাতে হাতে না লেগে যায়।
৭. মাটির তৈরি চুলায়ঃ
বহু যুগ আগে থেকেই মাটির চুলার জুরি মেলা ভার। কারণ মাটির চুলার রান্নার স্বাদ অত্যন্ত সুস্বাদু, বিশেষ সুঘ্রাণ এবং ফ্লেবার সম্পন্ন হয়। তাই আপনি আপনার পছন্দের কাবাবটি বানাতে এই মাটির চুলাও ব্যবহার করতে পারেন। এতে কাবাবেও আসবে একটা স্মোকি ফ্লেবার।
৮.স্টীলের পাতঃ
স্টীলের পাতও পারে একটি পারফেক্ট মজাদার কাবাব বানাতে। কেননা স্টীলের পাত খুব দ্রুত গরম হয়ে যায় এবং গরম স্থানে রাখলে এটা বেশ কিছু সময় পর্যন্ত উত্তপ্ত থাকে। ফলে এটাকে আপনি কাবাব বানাতে ব্যবহার করতে পারবেন। আবার চাইলে এর উপর কিছু গরম করে নেওয়া কয়লা দিয়ে দিতে পারেন। এতে করে কাবাবে যেমন একটা স্মোকি ফ্লেবার আসবে সেই সাথে স্টীলের পাতটিও অনেক সময় পর্যন্ত উত্তপ্ত থাকবে।
৯. মাটির হাড়ি বা সানকিঃ
মাটির হাড়ি বা সানকি দিয়ে কাবাব তৈরি করা অনেক সহজ। আর এটার সবচেয়ে মজাদার অংশ হলো আপনি চাইলে যে কোন স্থানে নিয়ে আপনার কাবাবটি প্রস্তুত করে নিতে পারবেন। এর জন্য কিছু কয়লা নিয়ে তা চুলায় গরম করে নিতে হবে। এরপর মাটির হাড়ি বা সানকির মধ্যে ঢেলে দিয়ে তার উপর একটি নেট বসিয়ে কাবাব করে নেওয়া যাবে।
১০. ফয়েল পেপারঃ
মাংস কিমা করে বা কাবাব বানিয়ে ফয়েলে মুড়িয়ে নিয়েও আগুনের তাপে কাবাব তৈরি করে নেওয়া যায় খুব সহজেই।