নানা ধরনের খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ করার কারনে ফ্রিজে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। আবার খাবার অনেকদিন ধরে রাখার ফলে তা পুরানো হয়ে গেলে ফ্রিজের অন্য বাকি খাবারের ওপর ও এর প্রভাব পড়ে। তাই নিয়মিত ফ্রিজ পরিষ্কার করা অত্যন্ত জরুরি খাবার সংরক্ষণের জন্য।
অনেকে অনেক রকম সমস্যা সম্মুখীন হয় ফ্রিজ পরিস্কার করার ক্ষেত্রে। সঠিক পদ্ধতি জানা থাকলে আর এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। আজ তাহলে জেনে নিন একদম এক্সপার্টের মত ফ্রিজ পরিষ্কার করার ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি বা টিপস-
প্রয়োজনীয় জিনিসঃ
- একটি নরম স্পঞ্জ
- ডিস ওয়াসার বা ডিটারজেন্ট
- ছোট তোয়ালে বা গামছা
- অব্যবহৃত ব্রাশ
- চিকন তুলি
- জল
পরিষ্কার করার পদ্ধতিঃ
- শুরুতে ফ্রিজটির বৈদ্যুতিক সংযোগ বা পাওয়ার বন্ধ করে দিন। ফ্রিজের দরজা খুলে রেখে দিন বরফ গলার জন্য। দেখবেন বরফ আপনাআপনি গলে যাবে। বরফ সরানোর জন্য আপনার আর কোন কষ্ট করতে হবে না।
- ফ্রিজের সুইচ বন্ধ করার পর ফ্রিজে থাকা সব জিনিস বের করে নিন। ফলে ফ্রিজ ধোয়ার সময় অসুবিধা হবে না। ঐ দিকে ফ্রিজের খাবারগুলো একটি পাত্রে রেখে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দিন। যাতে বরফ গলে যেতে না পারে এবং খাবার নষ্ট না হয়। কারন ফ্রিজ পরিষ্কার করতে দেরি হতে পারে। এতে আপনার খাবার অনেকটা সময় ভালো থাকবে।
- ফ্রিজের ছোট ছোট অংশ যেমন- র্যাক, ড্রয়ার ও ছোট সেলফ বিভিন্ন বক্স ও ট্রে গুলো খুলে বের করে নিন। এরপর আলাদা জায়গায় সাবান বা ডিটারজেন্ট মেশানো হালকা কুসুম গরম জলে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। কিছু সময় পর স্পঞ্জ দিয়ে ঘষে ঘষে ভালো করে পরিষ্কার করে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। জল ঝরানোর জন্য একটি শুষ্ক স্থানে রেখে দিন। তারপর গামছা বা তোয়ালে দিয়ে ভালো করে মুছে শুকিয়ে নিন।
- কুসুম গরম জলে বেকিং সোডা বা ভিনেগার বা ডিটারজেন্ট মেশানো জল দিয়ে ভিতরটা পরিষ্কার করে নিন। এর জন্য একটি বোতল নিতে পারেন। জল বোতলে ভরে ফ্রিজের ভেতরে স্প্রে করুন। তারপর একটি নরম স্পঞ্জ দিয়ে ভালোভাবে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে নিন। ব্রাশ বা চিকন তুলি দিয়ে ফ্রিজের কর্নারের রাবারগুলো ভালো করে পরিষ্কার করে নিন।
- ভেতরের অংশ ভালো ভাবে পরিষ্কার করার পর বেকিং সোডা বা ডিটারজেন্ট বা ভিনেগার মেশানো জল দিয়ে গামছা বা তোয়ালে ভিজিয়ে ফ্রিজের বাহিরের অংশটাও ভালো করে মুছে পরিষ্কার করে নিন।
- এরপর আবার তোয়ালে ভিজিয়ে পুরো ফ্রিজটি মুছে নিন। তারপর শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে ভালো করে শুকিয়ে বাকি জিনিস গুলো, অথ্যাৎ র্যাক, ড্রয়ার, ট্রে, বিভিন্ন বক্সগুলো এবং ছোট ছোট সেলফগুলো আবার আগের জায়গায় সাজিয়ে রাখুন।
- ফ্রিজটি সম্পূর্ণ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পড়ে তোয়ালে দিয়ে ফ্রিজের আশপাশের মেঝেটি মুছে পরিষ্কার করে নিন।
- তারপর পরিষ্কারের আগে ফ্রিজ থেকে যে খাবারগুলো বের করে রাখা হয়েছিল যেমন- খাবারের প্রত্যেকটি বক্স, বাটি, বোতল ইত্যাদি একটি ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে পরিষ্কার করে তা আবার ফ্রিজের ভেতরে রেখে দিন। যে খাবারগুলো প্যাকেট করে রাখা হয়েছিল তা সম্ভব হলে প্যাকেট পরিবর্তন করে রাখতে পারেন। যদি না পারেন তবে অবশ্যই সেগুলো একটি শুকনো পরিস্কার কাপড় দিয়ে মুছে শুকিয়ে রাখবেন।
- সবশেষে প্রধান কাজ হলো ফ্রিজের সুইচটি অন করা তবে ফ্রিজ পরিষ্কারের সাথে সাথেই ফ্রিজের সুইচ অন না করে কিছুক্ষণ পর অন করুন। এবং সব সেটিং ঠিক আছে কিনা তা ভালো করে দেখে নিন।
বিশেষ টিপসঃ
সব খাবার কিন্তু সব সময় ফ্রিজে রাখতে নেই। অনেক খাবার আছে যা ফ্রিজে রাখলে জলদি নষ্ট হয়ে যায়। গন্ধ ছড়ায় যা চট করে বোঝা যায় না। ফ্রিজে বা রেফ্রিজারেটর সেই খাবার বা জিনিস রাখা বন্ধ করুন।
ফ্রিজ পরিষ্কার শেষ করে ফ্রিজের মধ্যে এক টুকরা লেবু কেটে রেখে দিবেন। এতে করে ফ্রিজ গন্ধ হবে না এবং লেবুর একটা ফ্লেবার ও পাওয়া যাবে।
বিশেষ সতর্কতাঃ
- ফ্রিজ কখনোই দেয়াল ঘেসে বা দেয়ালের সাথে লাগিয়ে রাখবেন না। সবসময় চেষ্টা করবেন ফ্রিজকে দেয়াল থেকে কিছুটা দূরে রাখতে।
- ফ্রিজের উপর কোন ভারী জিনিস রাখতে যাবেন না।
- মাসে অন্ত্যত দু’ একবার ফ্রিজের সিল পরীক্ষা করুন।
- কোন সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত তা মেরামত করিয়ে নিন। ফ্রিজের দরজা কখনোই জোরে বন্ধ করবেন না। ফ্রিজের দরজায় থাকা রাবার সিল নষ্ট হয়ে যেতে পারে এতে করে।
- ফ্রিজের দরজা ঠিকমত বন্ধ করুন, যতবার ফ্রিজ খুলবেন ততবার তা ঠিক মতো বন্ধ হয়েছে কিনা খেয়াল রাখুন।
Tips are very useful.thanks for sharing.
You are welcome ?