ঝকঝকে রান্নাঘর কে না চায়! যেহেতু দিনের বেশিরভাগ সময় আপনি সেখানে কাটান। তাই রান্নাঘরের খুঁটিনাটি পরিষ্কার রাখা অতি প্রয়োজন যাতে কোন ময়লা দাগ ও দুর্গন্ধ না হয়। তার মধ্যে কিচেন সিঙ্ক রান্নাঘরের একটি দরকারি জিনিস। রান্নাঘরে কাজের সময় এর ব্যবহার সারাক্ষণ লেগেই থাকে। একটু খেয়াল না নিলেই বিভিন্ন দাগ, মরিচা পড়ে কিচেন সিঙ্কটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এছাড়া রান্নাঘরকে জীবানুমুক্ত রাখার জন্য কিচেন সিঙ্ক পরিষ্কার থাকা প্রয়োজন। আপনার পরিবারের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে কিচেন সিঙ্ক দুর্গন্ধমুক্ত ও জীবানুমুক্ত রাখতে হবে। তবে জেনে নিন কিচেন সিঙ্ক থেকে বিচ্চিরি দাগ দূর করার কিছু কার্যকরী টিপস ।
শক্ত দাগ দূর করতে সহজ কিছু উপায়ঃ
আপনি আপনার ঘরের রানী এবং হোম ম্যানেজারও বটে। তাই আপনার ঘরকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন করার দায়িত্ব ও আপনার। আপনার পরিচ্ছন্নতার কাজকে সহজ করার কিছু টিপস জেনে নিনঃ
- কিচেন সিঙ্কটি সবসময় শুকনো রাখুন। এর জন্য পরিষ্কার শুকনো কাপড় বা তোয়ালে বা গামছা সবসময় সিঙ্কের পাশেই রাখুন ।
- সিঙ্ক অনেক সময় তেল চিটচিটে হয়ে যায়। তেল চিটচিটে ভাব দূর করতে হালকা কুসুম গরম জলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে তা দিয়ে সিঙ্কটি পরিষ্কার করুন । আর ভালো ফলাফল পেতে দিনশেষে ১-২ লিটার গরম জল সিঙ্কে ঢিলে দিন, তাহলে এটিতে বেশি তৈলাক্ত পদার্থ জমার সুযোগ হ্রাস পাবে।
- প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার সিঙ্ক ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। এটা করার জন্য বেকিং সোডা ছিটিয়ে তা ২৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর তা একটি শক্ত ব্রাশ দিয়ে ভালোভাবে ঘষে পরিষ্কার করুন।
- ওয়াশিং লিকুইড দিয়ে নিয়মিত কাজ শেষে কিচেন সিঙ্ক পরিষ্কার রাখুন।
- সিঙ্কটি রাস্ট জমার প্রধান কারণ হলো ত্রুটিপূর্ণ ট্যাপ, এবং অনেক সময় ফিল্টার থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল পরতে থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারন একটি ভাঙা ট্যাপ সিঙ্কের জন্য একটি বড় সমস্যার কারন হতে পারে। এতে করে কঠিন মরিচা ধরে যায়।
- সিঙ্কটিতে যদি কোথাও রাস্ট (মরিচা) জমে যায় তবে তা তুলতে WD-40 ব্যবহার করুন। এতে সিঙ্কটির মেটালিক বডির মান নষ্ট হয় না, কোন জোর প্রয়োগ ব্যতীতই রাস্ট দূর হয়।
- দৈনন্দিন খাবারের উচ্ছিষ্ট সিঙ্কটির নলে ও ফিল্টারটিতে জমে যায়, এগুলো বিভিন্ন রোগজীবাণুবাহী কীটদের আকৃষ্ট করে। তাই সিঙ্কের ড্রেইনটিতে ময়লা জমতে দেয়া যাবে না। এটি নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য সিঙ্কের ফিল্টারটিতে ন্যাপথলিন দিয়ে ছিটিয়ে রাখুন। এতে একসাথে দুটি উপকার পাবেন দূর্গন্ধ দূর হবে রোগবাহীদের আনাগোনাও হ্রাস পাবে।
- কিছু ন্যাপথলিন সিঙ্কের ড্রেইনে দিয়ে রাখতে পারেন। এতে সুন্দর গন্ধ ও ছড়াবে।
- কিচেন সিঙ্কে অনেক সময় হলুদ দাগ পড়ে যায়। এই হলুদের দাগ পরিষ্কার করার জন্য পানির সাথে কিছুটা ভিনেগার মিশিয়ে পরিষ্কার করুন।
- যদি আপনার সিঙ্কটি হালকা রঙের (সাদা বা অন্য কোন রঙের) হয় তাহলে কফি, জুস এবং অন্যান্য পণ্য যা কিছুটা রঙিন হয়, তার থেকে দাগের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করুন। আপনি যদি এই জাতীয় কোন কিছু সিঙ্কে ঢেলে দেন এবং সিঙ্কটি সাথে সাথে ধুয়ে না ফেলেন তাহলে এর নীচে একটি কঠিন দাগ পড়ে যাবে।
- কখনোই সিঙ্কে কোন ভারী কোন আবর্জনা (শাক-সবজির উচ্ছিষ্ট, মাছের কাঁটা ইত্যাদি) ফেলতে যাবেন না।
- সিঙ্কে কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক সময় জল আটকে যায়। যা অনেক চেষ্টা করেও সরানো যায় না। এক্ষেত্রে সহজ উপায় হলো একটি বাটিতে কিছুটা গরম জল নিন এবং তা সিঙ্কের মুখে ঢেলে দিন। দেখবেন কিছুক্ষনের মধ্যেই জল নেমে যাবে এবং সিঙ্ক পরিষ্কার হয়ে যাবে।
- থালাবাসুন নিয়মিত ধুয়ে ফেলুন। ফালতু জমিয়ে রাখবেন না বাসন। এতে করে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতে পারে, তাই খাবার খাওয়ার পর সাথে সাথে ধুয়ে ফেলুন। একই সাথে সিঙ্কটাও ধুয়ে ফেলুন।
- থালাবাসুন জমিয়ে না রেখে, সাথে সাথে তা ধুয়ে ফেলুন। এতে করে সিঙ্কে কোন দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতে পারবে না। একই সাথে সিঙ্কটাও ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন। তাহলে সিঙ্ক ও বেশি ময়লা হতে পারবে না। আপনার কষ্টও কমে যাবে।
সর্তকতার বিষয় খেয়াল রাখুনঃ
সিঙ্ক পরিষ্কার করার সময় বিশেষ খেয়াল রাখবেন যেহেতু গরম জল ও ভিনেগার ইত্যাদি এই জাতীয় জিনিস ব্যবহার করবেন, যাতে তা আপনার গায়ে না লেগে যায়। সাবধানতার জন্য এ্যাপ্রন পড়ে নিতে পারেন, সেই সাথে হাতে গ্লাভ্স ব্যবহার করুন এতে করে আপনার হাত ও হাতের নখের কোন ক্ষতি হবে না।
বিশেষ টিপসঃ
সিঙ্ক শুকনো রাখতে সবসময় ফোম দিয়ে তা মুছে রাখতে পারেন। কোথাও যেন জল জমে থাকতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন। ডিশ ওয়াশিং বক্স সোপ কেস সিঙ্ক থেকে কিছুটা দূরে রাখুন। কারন এতে জল জমে থাকে।