খাবার খেতে যত মজা লাগে ততই কষ্ট হয় এই মজাদার খাবারটি তৈরি বা রান্না করতে। ১০টি এমন জিনিস আজ আপনাদের জানাবো যা আপনাকে রান্না করার সময় অবশ্যই মনে রাখতে হবে। যা আপনার কাজকে একটু হলেও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে সাহায্য করবে।
১. প্রথমত রান্নাঘরে আপনার কাজে ব্যবহৃত হয় এমন জিনিসগুলো নির্দিষ্ট স্থানে গুছিয়ে রাখুন। তাহলে আপনি যখন রান্না করতে যাবেন তখন প্রয়োজনীয় সবকিছু দ্রুত হাতের কাছে পেয়ে যাবেন। তখন রান্নাকে আর কষ্টের কাজ মনে হবে না বরং আপনি নিজেই তা উপভোগ করবেন। কারণ রান্না করার চেয়ে রান্নায় প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজতে খুঁজতে আমাদের বেশি সময় ব্যয় হয়ে যায়। তখন আর রান্না করতে ভালো লাগে না, বিরক্তি চলে আসে কাজের মধ্যে। কিন্তু সবকিছু গুছিয়ে রাখলে দরকার হলে তা সহজেই পাওয়া যাবে এবং তখন আর এই বিরক্তি ভাব কাজ করবে না।
২. রান্না ঘরের জন্য একটি এল্যার্ম ঘড়ি বরাদ্ধ করে রাখুন। এবং রান্নার ক্ষেত্রে সব সময় নির্দিষ্ট ঘড়ি ধরে কাজ করবেন, কারণ রান্নার সিক্রেটগুলোর মধ্যে একটি হলো কত সময় খাবারটি আঁচে রাখতে হবে। তাই সাথে একটি এল্যার্ম ঘড়ি রাখতে পারেন। এতে করে আপনার কাজও দ্রুত হবে আবার রান্নার সঠিক স্বাদের বিষয়টি তো রয়েছেই।
৩. রান্নার আগে যে খাবারটি রান্না করবেন তা ভালো করে বুঝে নিন বা প্ল্যান করে নিন। আগে থেকে ঠিক করে রাখলে কাজের মধ্যে একটা গতি আসবে সেই সাথে কাজের ধারাবাহিকতাও বজায় থাকবে।
৪. যেকোন রান্নায় প্রয়োজনীয় যাবতীয় উপকরন বা যা যা লাগবে (ধরুন বিরিয়ানি রান্নায় জায়ফল, পেস্তা, এলাচ ইত্যাদি দরকার হয়) তা ঘরে আছে কিনা তা আগে থেকেই চেক করে নিন। এতে কাজ সহজ হবে। কারণ রান্না বসানোর পর যদি দরকারি উপকরণটা না পাওয়া যায় তাহলে পুরো রান্নাটাই বৃথা হয়ে যাবে। সেই সাথে সময়তো নষ্ট হবেই। তাই রান্না বসানোর আগে থেকেই সব চেক করে দেখুন, নয়তো দেখবেন দাদাকে আবার বাজারে যেতে হচ্ছে। এর জন্য একটি কাজ করতে পারেন সব সময় ডায়েরিতে নোট করে রাখুন যে কোনটা আগামী ৩দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।
৫. কাটার জন্য ব্যবহৃত ছুরি, বটি নিয়মিত ধার করে রাখুন। চপিংবোর্ড, ছাকুনি ইত্যদি পরিষ্কার আছে কিনা দেখে নিন। ছুরির হাতলটা ঠিক আছে কিনা, নয় তো কাজ করা শুরু করলে হুট করে হাতলটা খূলে যেতে পারে। রান্না বসানো আগেই এই কাজগুলো সেড়ে ফেলুন, নতুবা রান্না বসিয়ে এগুলো কাজ করতে গেলে আপনার ভুলো মন সব ভুলিয়ে দিবে, চুলায় যে রান্না বসিয়েছেন তখন আর তা মনেই থাকবে না।
৬. রান্নার সময় ব্যবহৃত ছুরি, বটি জাতীয় জিনিস ব্যবহারের আগে ভালো করে ধুয়ে নিবেন। এই জিনিসগুলোর কাজ শেষ হয়ে গেলে তা সাথে সাথেই ধুয়ে পরিস্কার করে সঠিক স্থানে রেখে দিবেন তাহলে কাজ করে আনন্দ পাবেন। জমে থাকা ময়লার কারণে এগুলোতে দ্রুত মরিচা পড়ে যায়। আবার এখানে
সেখানে রাখার কারনে যেকোন ধরনের দূর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে।
৭. পরিমাপের ভুলের জন্য প্রায়ই আপনার রান্না ভালো হয় না? তাহলে এই কাজটি সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করার কৌশল অবলম্বন করুন। মাপের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্কেলযুক্ত কাপ ও চামচ ব্যবহার করুন, দেখবেন এক মাসের মধ্যেই আপনি রান্নায় পটু হয়ে যাবেন।
৮. রান্নার সময় কুকার গ্র্যাভার বা লুসনি যে যেটাই ব্যবহার করি না কেনো সেটা অন্তত ৩ মাস অন্তর অন্তর পরিবর্তন করে ফেলুন। কেননা এর আঁশটে গন্ধ আপনার এতো কষ্টে তৈরি করা খাবারের ১২টা বাজিয়ে দিবে। তাই এ বিষয়টিকে ছোট মনে না করে এর প্রতি যত্নশীল হন। আবার এর সাথে আপনার পরিবারের সুস্বাস্থ্যর বিষয়টিও জড়িয়ে রয়েছে।
৯. রান্না করা ভাত ঝরঝরে হয় না বলে কি চিন্তিত? তাহলে এই পদ্ধতি অবলম্বন করুন। ভাত রান্নার আগে চাল পরিমণিমতো মেপে নিয়ে তা রান্নার আগে অন্তত ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মতো জল দিয়ে ভিজিয়ে রেখে দিন। তারপর ভালো করে ধুয়ে নিন। যে হাড়িতে ভাত বসাবেন তাতে পরিমাণমতো জল দিয়ে একটি বলক তুলে নিন। তারপর তাতে আগে থেকে ধুয়ে রাখা চাল দিয়ে রান্না করুন। দেখবেন ভাত খুব সুন্দর মতো ঝরঝরে হয়েছে।
১০. রান্না শেষে খাবারগুলো টেবিলে সাজিয়ে রেখে রান্না ঘর পরিস্কার করে নিন। হাড়ি পাতিলগুলো ধুয়ে রাখুন। এতে করে রান্নাঘর ময়লা কম হবে। পরের বার রান্নার সময় আপনার কষ্ট হবে না।