skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

টবে চাষ করুন কাঁকরোল সবচেয়ে সহজ কৌশলে

কাঁকরোল চাষ

কাঁকরোল আমাদের অতি পরিচিত একটি সবজি। গ্রীষ্মকালে এই সবজির দেখা বেশী মেলে। প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, মিনারেল, এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ কাঁকরোল বারবার বাজার থেকে না কিনে নিজের ঘরেই উৎপাদন করে সারাবছর খাওয়া সম্ভব। কাঁকরোল চাষে পরিশ্রমও তেমন বেশী হয় না। আর আপনার যদি ছাদ কৃষিতে আগ্রহ থাকে তাহলে তো কথাই নেই। তাই নিশ্চিন্তে বাড়ির ছাদের টবে চাষ করুন কাঁকরোল সঠিক পদ্ধতি মেনে। আজকের আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেন কাঁকরোল চাষের সম্পূর্ণ পদ্ধতি সম্পর্কে।

১. বীজ ও মাটি প্রস্তুতকরণঃ

বাজার থেকে কাঁকরোলের বীজ কিনে সরাসরি মাটিতে পুঁতে দিলেই হবে না। ভালো ও দ্রুত ফলনের জন্য বীজ ও মাটি প্রস্তুত করে নেবেন। সব মাটিতেই কাঁকরোল চাষ করা সম্ভব, তবে এঁটেল দোআঁশ মাটি এই সবজির জন্য সর্বোৎকৃষ্ট।

মাঝারি আকারের টব বা পুরনো জলের ড্রামে কাঁকরোলের বীজ পুঁততে হবে। দোআঁশ মাটি বা এঁটেল দোআঁশ মাটি রোদে ভালো করে শুকিয়ে ঝুরঝুরে করে নিন। এর সাথে প্রাকৃতিক সার মেশাতে পারলে আরো ভালো হয়। চায়ের পাতা, গোবর সার, বা সরিষার খৈল রোদে শুকিয়ে নিন৷ এরপর তা গুঁড়ো করে মাটির সাথে মিশিয়ে দেবেন।

আর যেদিন বীজ বপন করবেন তার আগের দিন বাজার থেকে ভালো মানের কাঁকরোলের বীজ কিনে আনবেন। সারারাত জলে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে ঐ ভেজা বীজ মাটিতে পুঁতে দেবেন।

২. বীজ বপনঃ

টবের মাটিতে ২-৩ ইঞ্চি গভীর গর্ত করে বীজ পুঁতে দএবেন। যদি বীজের পরিবর্তে কাঁকরোল গাছের ছোট চারা রোপণ করতে চান তাহলে মাটির গভীরতা একই থাকবে। টবে জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো করে করবেন। তাহলে জল জমে বীজ বা চারা নষ্ট হবে না। আর বীজ বপনের চেষ্টা করবেন এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে জুনের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে। কারণ এই সময়ে বীজ বপন করে ফলন তাড়াতাড়ি হবে।

৩. জল দেওয়া ও সার প্রয়োগঃ

বীজ বপনের পর প্রতিদিন নিয়ম করে জল দেবেন। তবে জল দেয়ার আগে আরেকটি কাজ করতে পারেন। সেটি হল রাসায়নিক সার প্রয়োগ। প্রাকৃতিক সারের চাইতে রাসায়নিক সার প্রয়োগে কাঁকরোলের ফলন দ্রুত হয়৷

১৫ গ্রাম ফুরাডান, ৬০ গ্রাম টিএসপি সার, ২০ গ্রাম ইউরিয়া সার, এবং ১৫ গ্রাম ভিটামিন ও পটাশ সার একসাথে মিশিয়ে নিন। এবারে তা টবের মাটিতে মিশিয়ে দিন। রাসায়নিক সার দেয়ার ৩ দিন পর থেকে গাছে নিয়মিত জল দেবেন।

আর যদি প্রাকৃতিক সার গাছে দিতে চান, তাহলে সবজির খোসা পচা সার বা গোবর সার মাঝেমাঝে দেবেন মাটিতে। গোবর সার রোদে ভালো করে শুকিয়ে গুঁড়ো করে নেবেন। এরপর এটি গাছের গোড়া থেকে একটু দূরে প্রয়োগ করবেন। মাটিতে গোবর সার দেয়ার পরে মাটি খুঁচিয়ে দএবেন ভালো করে, নাহলে সার মাটিতে মিশবে না সহজে।

৪. গাছের বৃদ্ধি ও পরিচর্যাঃ

নিয়মিত জল দেয়ার ১০-১২ দিন পরে বীজ থেকে কাঁকরোলের ছোট চারা গজাবে। চারা গজানোর সময় থেকে গাছের পরিচর্যা শুরু। নিয়মিত এর আগাছা পরিষ্কার করবেন। চারার গোড়ায় যেন জল জমে না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখবেন। পশু-পাখির হাত থেকে যতটা সম্ভব বাঁচিয়ে রাখবেন। গাছ যেন পর্যাপ্ত আলো-বাতাস পায় সেটিও খেয়াল রাখবেন।

এই কচি চারা বড় হয়ে গাছে পরিণত হতে আরো ১৫-২০ সময় লাগবে। তখন গাছের গোড়ায় বাঁশের কঞ্চি দিয়ে গাছ বেঁধে দেবেন এবং উপরে মাচা বেঁধে দেবেন। মাচা বাঁধার ২০-২৫ দিনের মধ্যে মধ্যে গাছ কাঁকরোলের ফুল ও কাঁকরোলে ভরে যাবে।

৫. কীটপতঙ্গ, ছত্রাক, ও ভাইরাস দমনঃ

কাঁকরোর গাছে জাব পোকা, বিছা পোকা, মাছি পোকার আক্রমণ এবং পাউডারি মিলডিউ ও মোজাইকের মতো রোগের আবির্ভাব ঘটে। এতে গাছের পাতা, ফুল, ফল নষ্ট হয়, গাছের গোড়া পঁচে যায়। অনেক সময় চারা ঢলে পড়ে মারা যায়। এসব রোগ থেকে গাছকে বাঁচাতে হবে খুব সাবধানে।

মৃত বা রোগাক্রান্ত চারা গাছ তুলে দূরে কোথাও পুঁতে ফেলতে হবে বা আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করতে হবে। আর জাব পোকায় আক্রান্ত গাছের অংশ খুব আলতো করে ছিঁড়ে বাড়ি থেকে অনেক দূরে গিয়ে পুড়িয়ে ফেলবেন।

এছাড়াও পোকার আক্রমণ ঠেকাতে অবশ্যই গাছে কীটনাশক প্রয়োগ করবেন। রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে হোমমেইড কীটনাশক দিতে পারেন চাইলে। এর জন্য ২৫০ মিলি জলে ১ টেবিল চামচ লাল লঙ্কার গুঁড়া এবং ৪-৫ টি বড় সাইজের রসুনের কোয়া থেঁতো করা ভিজিয়ে রাখবেন সারারাত। পরদিন সকালে এই মিক্সচারটি গাছে স্প্রে করবেন।

Article Tags:
· ·
Article Categories:
Food-kitchen-insights · Tips & Hacks

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *