ভাতের মাড় অনেক নামে পরিচিত। জলে চাল ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে গেলে চাল ও জল আলাদা করে একটি পাত্রে নিয়ে রাখুন। মানুষ রাইস ছাঁকনির সাহায্যে পুরো স্টার্চ এবং ভাতকে সঠিকভাবে আলাদা করে। বেশিরভাগ মানুষই এই মাড় বা স্টার্চ ফেলে দেন। কিন্তু আপনাদের জানিয়ে রাখি যে ভাতের মাড়ে অনেক পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়।
আগেকার দিনে যখন গ্রামে দুর্ভিক্ষ বা শস্যের অভাব দেখা দিত, তখন লোকেরা এই ভাতের মাড়ে নুন মিশিয়ে পান করত এবং একটা সময় এটা দিয়েই পেট ভরত। আজও, গ্রামের লোকেরা ডায়রিয়া বা বমি হলে ভাতের মাড় খায়। এমন পরিস্থিতিতে ভাতের মাড় খাওয়া ছাড়াও এর কিছু ভালো ব্যবহার সম্পর্কে আমরা আপনাদের বলব। ভাতের মাড় ফেলে না দিয়ে রান্নাঘরের কাজে এভাবে ব্যবহার করুন।
এভাবে ভাতের মাড় ব্যবহার করুনঃ
১. ভাতের মাড় থেকে তৈরি করুন সুস্বাদু ডালঃ
ভাতের মাড় থেকে ডালও তৈরি করা যায় তা মানুষ জানে না। বেশির ভাগ মানুষ ডাল রান্না করার পর তা পাতলা করার জন্য তাতে গরম জল যোগ করেন, কিন্তু আমরা আপনাকে বলি যে গরম জলের পরিবর্তে ভাতের মাড় যোগ করলে ডালের পুষ্টিগুণই শুধু বাড়বে না বরং ডালের স্বাদও বাড়বে। তাছাড়া এটি ঘন হয়ে যাবে।
২. ঘন গ্রেভির জন্য এটি ব্যবহার করুনঃ
অনেক সময় সবজি বানানোর সময় গ্রেভি পাতলা হয়ে যায়। এমন অবস্থায় যদি আপনি সবজিতে ভালো স্বাদের গ্রেভি ঘন করতে চান তাহলে জলের জায়গায় ভাতের মাড় দিন। এটি এত ঘন, যা কোনো গ্রেভিকে পাতলা হতে দেয় না। বিশ্বাস করুন গ্রেভির স্বাদ সত্যি ডবল হয়ে যায়।
৩. ভাতের মাড় থেকে নিখুঁত রুটি তৈরি করুনঃ
গম ও ময়দা ছাড়াও বাড়িতে চালের আটা দিয়েও রুটি তৈরি করা হয়। লোকেরা চালের আটা মাখতে জল ব্যবহার করে, তাই আটা মাখাতে সামান্য মাড় ব্যবহার করুন। মাড় শুধু রুটি ভালো করে মাখাবে না, বরং রুটির স্বাদও বাড়বে এবং পুষ্টিগুণও বহুগুণ বেড়ে যাবে।
৪. মাড় ভাত বা ফেনা ভাতের স্বাদ নিনঃ
উপরে উল্লিখিত রান্নার টিপস ছাড়াও, আপনি ভাতের মাড় সহজভাবে খেতে এবং পান করতে পারেন। একটি প্লেটে ভাতের মাড় বের করে তাতে রান্না করা গরম ভাত দিন এবং তারপর লবণ দিন এবং ঘি বা মাখন দিন। এবার এটাকে মিশিয়ে আমের আচার মসলা বা ভেজিটেবল গ্রেভি দিয়ে খান। আপনি যদি হজমের সমস্যায় অস্থির থাকেন তাহলে এই পদ্ধতিতে ভাতের মাড় খান। এটি খুব শীঘ্রই আপনার পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। তাছাড়া মাড় না গেলে ফেনা ভাত আলু সেদ্ধ, ডিম সেদ্ধ আর ঘি মিশিয়েও খেতে পারেন।