শুধু খাওয়ার খেলেই তো হবে না কি খাচ্ছি আর কিভাবে খাচ্ছি তাও খেয়াল রাখা প্রয়োজন। বিশেষ করে শাক পাতা খাওয়ার আগে তা ভালো ভাবে পরিষ্কার করার অবশ্যই প্রয়োজন। রাসায়নিক সার থেকে শুরু করে নানা কেমিক্যাল আজকাল শাক উৎপাদনে নানা ভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে কম বেশি। তাই বাজার থেকে শাক আনার পর তা সঠিক ভাবে পরিষ্কার করে তবেই খাওয়া উচিত।
শাক পাতা পরিষ্কার করার জন্য খুব সহজ সহজ কয়েকটি উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। জল দিয়ে ভালো করে ধোওয়া ছাড়া এই সামান্য কয়েকটি জিনিস এবার থেকে ট্রাই করুন। অনেক সময় লাগবে না শুরু মনে রেখে দিন আর অ্যাপ্লাই করুন।
শাক পরিষ্কার করার টিপস
সাধারণত আমরা শাক ভালো করে পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে তারপর রান্না করি। কিন্তু তাতে পরিষ্কার হলেও রাসায়নিক মুক্ত হয় না। বেশিদিন টাটকা রাখা যায় না। সেইজন্য যা যা করবেন-
১. শাক পরিষ্কারে নুনের ব্যবহারঃ
একটি বড় বাটিতে শাকের পরিমান অনুযায়ী জল নিন তাতে এক চামচ নুন দিয়ে তা জলে ভালো করে মিশিয়ে দিন। এবার শাকের নিচের দিকের শিকড়ের অংশ কেটে বাদ দিয়ে বাকি অংশ জলের মধ্যে ডুবিয়ে দিন। ২০ মিনিট মত এভাবে রাখার পর একটা একটা করে পাতা বেছে অন্য পাত্রে রাখুন। তারপর সবটা ভালো করে পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
- নুন দিয়ে এভাবে পরিষ্কার করলে শাক একশ শতাংশ পরিষ্কার হয়।
- কোন প্রকারের কৃত্রিম রঙ থাকলে তা বেরিয়ে যায়।
- পোকামাকড় থাকলে তা মরে যায় খুব সহজে।
- এভাবে শাক পরিষ্কার করে দু থেকে তিন ষ্টোর করে রাখার পর রান্না করে খেতে পারেন।
- নুন দিয়ে পরিষ্কার করার পর ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে নেবেন।
- ষ্টোর করার হলে ধোওয়ার পর জল ঝরিয়ে রাখবেন।
২. শাক পরিষ্কারে ভিনেগারের ব্যবহারঃ
শাক থেকে রাসায়নিক পদার্থ দূর করার সেরা হাতিয়ার হচ্ছে ভিনেগার। ভিনিগার মিশ্রিত জল দিয়ে শাক পাতা পরিষ্কার করলে তা সম্পূর্ণ ভাবে পরিষ্কার হয়। সেক্ষেত্রে একটি বড় বাটিতে জল নিয়ে তাতে এক চা চামচ ভিনেগার মিশিয়ে দিন। এতে এবার শিকড় বাদ দিয়ে শাক ভিজিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখার পর তা পরিষ্কার জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর রান্না করুন।
- ভিনেগার শাকে থাকা সবরকমের ময়লা টেনে বের করে আনে।
- কৃত্রিম রঙ সহজে বেরিয়ে আসে শাক পাতা থেকে।
- ছোট ছোট পোকা যা সহজে দেখা যায় না তা ভিনেগারের ফলে শাক থেকে বেরিয়ে যায়।
- ভিনেগার শাক অনেকদিন পর্যন্ত ষ্টোর করে রাখতে সাহায্য করে।
- শাক ভিনেগার মিশ্রিত জল থেকে বের করে ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে ৪ থেকে ৫ দিন মত ষ্টোর করে রাখতে পারেন।
৩. ভেজিটেবল ওয়াশারের ব্যবহারঃ
নুন, ভিনেগার তো ছিল ঘরোয়া টিপস। তাছাড়াও শাক পরিষ্কার করার জন্য ভেজিটেবল ওয়াশার ব্যবহার করতে পারেন। অনলাইনে অ্যামাজন ও অন্যান্য শপিং সাইট থেকে পেয়ে যাবেন। নানা রকমের নানা কোম্পানির ভেজিটেবল ওয়াশার পাওয়া যায়। কিভাবে ব্যবহার করতে হয় বোতলের গায়ে লেখা থাকে প্রতিটি স্টেপ। আমি যেটা ব্যবহার করি তা এক ছিপি জলে মিশিয়ে তারমধ্যে শাক সবজি ভিজিয়ে ১০ মিনিট রেখে তারপর ভালো করে জল দিয়ে কচলে কচলে ধুয়েনি।
যারা অনলাইনে কেনা কাটিতে স্বছন্দ নয় তারা এটি বড় মুদির দোকানে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে পেয়ে যাবেন। আজকাল দোকানীরা এটি রাখে, না থাকলে তারা বড় মার্কেট থেকে এনে আপনাকে দিয়ে দেবে।
- ভেজিটেবল ওয়াশার ব্যবহার করলে কোন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
- সময় কম লাগে ও ভালো করে পরিষ্কারও হয়।
- রঙ থেকে ময়লা সব এতেও ভালো করে বের হয়।
শাক পরিষ্কারের সময় যে বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখবেনঃ
- নুন, ভিনেগার ও ভেজিটেবল ওয়াশার যাই ব্যবহার করুন না কেন রান্নার আগে শাক ভালো করে একবার ধুয়ে নেবেন।
- শাক জলে ভেজানোর আগে একবার প্রতিটি পাতা বেছে নেবেন। কোন পাতায় ছিদ্র থাকলে তা ফেলে দেবেন। কারন পোকায় সেই পাতাটি খেয়েছে।
- শাকের শিকড় কেটে বাদ দিয়ে দেবেন। এতে মাটি থাকে তাই জলে ভেজানোর আগেই এটি বাদ দেওয়া বাঞ্ছনীয়।
- শাক পরিষ্কার করে যদি ষ্টোর করতে চান তাহলে শাক ধুয়ে জল ঝরিয়ে একটি খবরের কাগজে মুড়ে এয়ার টাইট কন্টেনারে রাখুন। বেশি দিন রাখবেন না। সব জিনিস টাটকা খাওয়াই উপকারি।