তাড়াহুড়ো করে গরম খাবার খেতে গেলে বা অন্যমনস্ক হয়ে গরম চায়ের কাপে চুমুক দিলে অনেক সময় আমাদের জিভ পুড়ে যায়। কমবেশি সবাই মাঝে মাঝেই এই সমস্যার সন্মুখিন হয়। খাবার বা পানীয় কতটা গরম লক্ষ্য না করে খেলেই জিভ পুড়ে যায়। একবার জিভ পুড়ে গেলে বেশ অস্বস্তির মধ্যে দিয়ে যেতে হয় কয়েকদিন। তবে সমস্যা থাকলে তার সমধানও থাকে।
এবার থেকে যদি গরম খাবার বা গরম চা-কফি খেতে গিয়ে জিভ পুড়ে যায় তাহলে আজকের এই সামান্য কয়েকটি উপায় অবলম্বন করে দেখবেন। পুড়ে যাওয়া জায়গায় অস্বস্তি কম হবে আর দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।
১. ঠাণ্ডা জলে চুমুক দিনঃ
সাধারণত কোথাও আগুনের ছ্যাকা খেলে বা ফোসকা পরলে ঠাণ্ডা জল সেই জায়গায় দিলে আরাম লাগে। জিভ পুড়ে যাওয়ার সাথে সাথেই যতটা পারেন ঠাণ্ডা জল চুমুক দিয়ে খান। কয়েক ঘণ্টা পর পর এটা করুন। দেখবেন অস্বস্তি ভাব ধীরে ধীরে কমে আসবে। আপনার পুড়ে যাওয়া জিভের তাপমাত্রা কমাতে এবং মুখকে হাইড্রেটেড রাখতে এক গ্লাস ঠান্ডা জল দারুন কাজ করবে।
২. লবণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুনঃ
এক কাপ জলে ১/৮ চা চামচ লবণ যোগ করুন। লবণ জলের সাথে ভালো করে মিশিয়ে সেই জল দিয়ে আলতো ভাবে কুলকুচি করে ধুয়ে ফেলুন। তারপরে থুতু ফেলুন। লবণ একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক যা ফোলা এবং ব্যথা কমাতে পারে এবং আপনার পোড়া উপসর্গগুলিকে উপশম করতে পারে।
৩. আইসক্রিম খানঃ
এই উপায়টি দারুন কাজ দেয়। কিন্তু সবসময় হাতের কাছে আইসক্রিম নাও থাকতে পারে। যদি থাকে তাহলে কোন কিছু না করে তিন চার চামচ আইসক্রিম চুষে চুষে খান। এমন ভাবে খাবেন যাতে আপনার পুড়ে যাওয়া জিভের অংশে তা লাগে। চেষ্টা করবেন আইসক্রিম কিছুক্ষণ জিভে টাচ করে রাখতে। এতে সঙ্গে সঙ্গে রেজাল্ট পাবেন। আর ধরুন আইসক্রিম হাতের কাছে নেই। তাহলে বরফের এক টুকরো নিয়ে তা চুষতে থাকুন। যতক্ষণ না বরফ গলে যাচ্ছে। এতে আপনারা একই ফল পাবেন। ব্যাথা হবে না। অস্বস্তি কমবে।
৪. ব্যাথা কমাতে চিনি বা মধুঃ
অনেক সময় এত বেশি পুড়ে যায় যে বেশ ভালো রকমের ব্যাথা করতে থাকে। এরকম যদি হয় আপনার সাথে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটা চিনির দানা পোড়া জিভে লাগিয়ে চেপে রাখুন। ব্যাথা কমাতে অসম্ভব ভালো কাজে দেয়। চাইলে মধুও এই একই ভাবে ব্যবহার করতে পারেন। কয়েক ফোঁটা মধু পোড়া জায়গায় লাগিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন।
৫. নরম ঠাণ্ডা খাবার খানঃ
পুড়ে গেলে তা ঠিক হতে সময় তো লাগবেই। উপরের প্রতিটি টিপস আপনাদের ব্যাথা বা অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করবে। তবে তাই বলে যতক্ষণ না সম্পূর্ণ ভাবে ঠিক হচ্ছে ততক্ষণ গরম খাবার, পানীয় থেকে দূরে থাকুন। ঠাণ্ডা জাতীয় নরম খাবার খান। এতে আপনার জিভে কোনরকমের অস্বস্তি হবে না। আর ঠাণ্ডা খাবার দ্রুত জিভের পোড়া ভাব সারিয়ে তুলবে। নরম খাবার এই জন্য খাবেন যাতে যতক্ষণ না ঠিক হচ্ছেন ততক্ষণ আবার যেন পুড়ে না যায়।
বিশেষ কথাঃ
যদি পোড়া জায়গার উন্নতি না হয় বা সংক্রমণের লক্ষণ দেখায় তাহলে আপনার চিকিত্সক বা ডেন্টিস্টের সাথে পরামর্শ করুন।
সংক্রমণের লক্ষণ কি ভাবে বুঝবেনঃ
- লাল হয়ে যাওয়া অংশ বেড়ে গেলে
- ব্যথা বৃদ্ধি পেলে
- পোড়া জায়গার নিরাময় না হলে
- ফোলা ভাব বেড়ে গেলে
- পুঁজ বেরতে শুরু করলে
- জ্বর যদি আসে