ছোট একটি অ্যাপার্টমেন্টে এক চিলতে রান্নাঘর হোক কিংবা বাড়িতে থাকা বড় কিচেন, রান্নাঘর গুছিয়ে রাখা সত্যিই কঠিন একটা কাজ। এমন ভাবে গোছাতে হয় যাতে হাতের কাছে সব জিনিস থাকে। কেউ যদি বেশি রান্নাঘরের দিকে না যায় সেরকম মানুষ রান্না করতে ঢুকলে যাতে সব জিনিস পেয়ে যায় তাও খেয়াল রাখতে হয়। রান্নার কথা বলা যতই সহজ হোক না যেন তার জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা সত্যি বড় একটা টাস্ক। এমন অবস্থায় রান্নাঘর গোছানোর সময় সাধারণ কিছু ভুল আমরা অজান্তেই করে থাকি। কি তা জেনে নিন। আর এখন থেকে গোছানোর সময় এগুলো খেয়াল রাখুন।
১. প্রতিদিনের ব্যবহারের জিনিস উঁচুতে বা হাতের নাগালের বাইরে রাখাঃ
আপনার সময় বাঁচাতে রান্নাঘরে প্রায়শই যা কিছু ব্যবহার করেন তা হাতের নাগালে থাকা উচিত৷ আজকালকার দিনের আধুনিক কিচেনে উপরে ক্যাবিনেট সাধারণত মসলা রাখার জায়গা হিসেবে নিশ্চিত করা হয়। রোজকার মসলা একদম হাতের নাগালে রাখুন। একটি ট্রে নিয়ে তাতে মসলার কৌটো সাজিয়ে নিন। উপরে রাখলে বারবার নামানো ওঠানো করার ঝামেলা রয়েছে। তাছাড়া নতুন কেউ রান্না করতে গেলে সে জানবেন না হলুদ কোন ড্রয়ারে আর তেল কোন ক্যাবিনেটে। রান্নাঘরের স্টোরেজ এমন ভাবে করুন যাতে হাতের নাগালে সব থাকে।
২. জিনিসের ডুপ্লিকেট রাখাঃ
বাসন থেকে মসলা সে যাই হোক না কেন যত ইচ্ছে কিনে রাখুন। ডবল ট্রিপল আপনার যা পছন্দ। কিন্তু তাই বলে সবই যদি একসাথে থাকে তাহলে সমস্যা। মসলা যতটা এক সপ্তাহ বা এক মাস আপনার প্রয়োজন হিসেবে ব্যবহার করবেন তা রেখে বাকিটা সরিয়ে রাখুন। প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করুন। এতে করে মসলা থেকে শুরু করে কোন জিনিস অপচয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
৩. জিনিসের পরিমাপ অনুযায়ী কৌটো রাখাঃ
একটি সংসারে মাসে কতটা কি জিনিসের প্রয়োজন হয় তা মোটামুটি জানা থাকে। তাই জিনিসের পরিমাপ অনুযায়ী কৌটো রাখার অভ্যাস করুন। এতে করে সুন্দর ভাবে রান্নাঘরে গোছানোর পাশাপাশি জিনিসের ব্যবহারও সঠিক হবে। খোলামেলা ভাবে রান্না করার জায়গা থাকবে। এখন ভাবুন নুনের দুটো কৌটো, হলুদের দুটো কৌটো এরকম করে যদি রাখা থাকে তাহলে রান্না করার জায়গা কি আর থাকে!
৪. মাঝে সাজে ব্যবহারের জিনিস বাসনের মধ্যে রাখাঃ
অনেক বাসন আছে যা রোজকার কাজে লাগে না। কিন্তু আমরা তা একসাথে রেখে দিয়ে থাকি। এটা করার কোন প্রয়োজন নেই। এতে করে দরকারের সময় জিনিস পাওয়া যায় না। আর রোজকার বাসনের জায়গা অনেকটা ভরে থাকে। তাই যেগুলো কম ব্যবহার করেন তা হাতের নাগালের বাইরে রাখুন। প্রয়োজন মত নামিয়ে নিয়ে ব্যবহার করুন।
৫. প্রচুর পরিমাণে খাবার কেনাঃ
রান্নাঘর গোছানোর ক্ষেত্রে এই সমস্যা বড় কমন। অনেকেই একবারে অনেকটা জিনিস কিনে রেখে দেন। কিন্তু রাখার জায়গা থাকে না। তাই আইটেমগুলিকে সংরক্ষণ করার জন্য জায়গা আছে কিনা তা বিবেচনা করে জিনিস বেশি করে কিনুন। আপনি যে জিনিসগুলি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেন তা প্রচুর পরিমাণে কিনুন এবং যদি আপনার কাছে এটি সংরক্ষণ করার জায়গা না থাকে তবে প্রচুর পরিমাণে সবকিছু কিনবেন না৷
৬. প্যাকেটের মধ্যেই জিনিস রাখাঃ
এই কাজটা বেশির ভাগ মানুষ করে থাকেন। এটা শুধু ভুল নয় মহা ভুল। একবার প্যাকেট কেটে ফেললে তাতে জিনিস রাখা শরীরের জন্যই ভালো না। তাই রান্নাঘরে গোছানোর সময় কোন জিনিস প্যাকেটে থাকলে তা কৌটোয় ভরে রাখুন। রাবার বা ক্লিপ দিয়ে আটকে প্যাকেটে রাখবেন না। ম্যাগি বা চাউমিনের প্যাকেট ব্যবহার করার পর বাকিটা এতে না রেখে কোন বয়ামে ঢেলে রাখুন।
৭. হাবিজাবি জিনিস জমিয়ে রাখাঃ
অনলাইন খাবারের সাথে আসা চামচ, কাটা মসলার বক্স এগুলো না ফেলে আমরা জমিয়ে রাখি। ভাবি পড়ে কোন না কোন কাজে লেগে যাবে। বিশ্বাস করুন এগুলো কোন কাজে লাগে না। বরং রান্নাঘরের জঞ্জাল বাড়ায়। তাই এসব আসার সাথে সাথে ব্যবহার না করলে ফেলে দিন। রান্নাঘরে গুছিয়ে এগুলো রাখার কোন প্রয়োজন নেই।