আমিষ রান্না মানেই রসুনের দর ভারী একটা ব্যাপার আর কি রান্না ঘরে। তবে আজকাল শরীর ভালো রাখার ফন্দি নিয়েও মাঝেমাঝে স্যালাডে বা শুধু শুধু কাঁচা রসুনের আমাদনি হয় খাবার সময়। তবে সেক্ষেত্রে এর স্বাদ অত মনের মত হয় না।
তবে রসুনের স্বাদ যদি তাড়িয়ে তাড়িয়ে গরম গরম পরোটা বা রুটির সাথে উপভোগ করতে চান তাহলে দেরি না করে বানিয়ে ফেলুন আজকের এই রেসিপি। রসুনের ঝালঝাল চাটনি। রসুনের এই চাটনি বানাতে খুবই কম সময় লাগবে। একবারে বানিয়ে আপনি অনেকদিন এটা রেখে খেতে পারবেন। তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে সোজা চলে যাওয়া যাক আজকের রেসিপিতে।
রসুনের চাটনি বানানোর উপকরণঃ
- কাঁচা রসুন ১/২ বাটি
- গোটা শুকনো লঙ্কা ১০ টা
- সরষের তেল ৪ চা চামচ
- কালো সরষে ১ চামচ
- মৌরি ১ চামচ
- জিরে ১ চামচ
- গোটা ধনে ১ চামচ
- লাল লঙ্কা গুঁড়ো ১ চামচ
- নুন স্বাদ অনুযায়ী
- জল ২ চা চামচ
- ভিনেগার ১/২ চামচ

রসুনের চাটনি বানানোর পদ্ধতিঃ
প্রথম ধাপঃ
সবার প্রথমে রসুনের কোয়ার খোসা ভালো করে ছাড়িয়ে নিতে হবে। হাফ বাটি রসুন কোয়া লাগবে। মোটামুটি ৪৫-৫০টি মত রসুন কোয়া। কোয়া খোসা ছাড়ানোর পর ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার কাপড়ে মুড়ে ১০ মিনিটের মত রেখে দিতে হবে। এতে রসুনের গায়ে লেগে থাকা জল একেবারেই থাকবে না।
দ্বিতীয় ধাপঃ
সামান্য জল গরম করে নিন। তাতে গোটা শুকনো লঙ্কা বোটা ছাড়িয়ে ১৫ মিনিট মত ভিজিয়ে রাখতে হবে। এতে শুকনো লঙ্কা নরম হয়ে যায়। ফলে বাটার সময় খুব সহজেই স্মুদ পেস্ট তৈরি হয়। এই চাটনি বানানোর এই দুটি কাজই একটু সময় নেয়। বাকি রান্না করার সময় খুবই কম।
তৃতীয় ধাপঃ
কড়াই ভালো করে গরম করে তাতে সরষের তেল ২ চা চামচ মত দিন। তেল ভালো করে গরম হয়ে এলে তাতে রসুনের কোয়া ছেড়ে দিন। এই সময় আঁচ কমিয়ে নেবেন। ১ মিনিট মত হাল্কা আঁচে ভাজার পর এতে লাল লঙ্কা গুঁড়ো ১ চামচ ও স্বাদ মত নুন দিয়ে ২ মিনিট কম আঁচে নাড়তে থাকুন।
চতুর্থ ধাপঃ
২ মিনিট হয়ে হয়ে যাওয়ার পর গ্যাস অফ করে দিন। অপেক্ষা করুন এটি ঠাণ্ডা হওয়ার। ঠাণ্ডা হয়ে এলে মিক্সিতে সবটা ঢেলে দিন আর মিশিয়ে দিন গোটা শুকনো লঙ্কা ১০ টা। যা আগেই ভিজিয়ে রেখে দেওয়া ছিল। এতে মেশান ২ চা চামচ জল। এবার ভালো করে পেস্ট বানিয়ে ফেলুন।

পঞ্চম ধাপঃ
আবার কড়াই ভালো করে গরম করে তাতে সরষের তেল ২ চা চামচ মত দিন। তেল ভালো করে গরম হয়ে এলে তাতে প্রথমে কালো সরষে ১ চামচ দিন। তারপর মৌরি ১ চামচ, গোটা ধনে ১ চামচ জিরে ১ চামচ দিন। ৩০ সেকেন্ড মিডিয়াম আঁচে নেড়ে নেওয়ার পরে পেস্ট মিশিয়ে দিন। আঁচ কমিয়ে নেবেন। ২ মিনিট মত কম আঁচে রসুন নেড়ে নেড়ে কষাতে থাকুন। রেডি আপনার রসুনের চাটনি। গ্যাস অফ করে এর মধ্যে ১/২ চামচ ভিনিগার দিয়ে মিশিয়ে দেবেন। অনেকদিন রেখে খেতে চাইলে এটি করবেন না হলে দরকার নেই।

বিশেষ কথাঃ
- বানানোর আয়োজন ও বানানোর সময় নিয়ে মোট ২০ মিনিট মত লাগবে। হাফ বাটি রসুনের চাটনি ৩ থেকে ৪ জন মত খেতে পারেন।
- গরম গরম পরোটার সাথে খেলে এটি বেশি স্বাদ পাবেন। ভাতের সাথেও কিন্তু খেতে পারেন। চাইলে রুটিও চলবে।
- বেশি করে বানিয়ে ফ্রিজে রেখে প্রায় ৭ থেকে ৮ দিন খাওয়া যায়। তবে সেক্ষেত্রে বানানোর পর ভিনিগার দিয়ে দিলে বেশি ভালো। চাটনির ফ্রেশনেস বজায় থাকবে।
- রসুনের ঝালঝাল চাটনি এই খেতে খুবই স্পাইসি হয়। তাই বলে যারা ঝাল খান না তারা কি এই চাটনির স্বাদ উপভোগ করবেন না? নিশ্চয়ই করবেন। সেক্ষেত্রে শুকনো লঙ্কার পরিমান কম দেবেন আর গুঁড়ো শুকনো দেবেন না বানানোর সময়। এতে ঝাল হবে না একদম। আর পেস্ট বানানোর সময় চিনির কয়েকটা দানা মিশিয়ে দিলে বাকি লঙ্কার ঝাল কেটে যাবে।