রুটি বেশি করে বানালে বা কিনে আনলে সেটা ফ্রিজে রাখতে হয়। আর ফ্রিজে রাখা রুটি কেমন শক্ত হয়ে যায় সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ যারা নান রুটি খেতে বেশি পছন্দ করেন তাদের জন্য ব্যাপারটা আরো কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। নান রুটি আটার রুটির তুলনায় খুব তাড়াতাড়ি শক্ত হয়ে যায়। আর সেটা ছিঁড়তে ও খেতেও বেশ বেগ পেতে হয়। এমন সমস্যার সমাধান করতে চাইলে পড়ে ফেলুন আজকের আর্টিকেল, যেখানে থাকছে নান রুটি ফ্রিজে রেখে শক্ত হয়ে গেলে নরম করার সহজ কিছু টিপস।
ক. শক্ত নান রুটি নরম করার সহজ টিপসঃ
১. গরম জলে ডুবিয়ে নিনঃ
একটি বাটিতে গরম জল নিন। তারপর একটা শক্ত নান রুটি নিয়ে ওতে একবার ডুবিয়ে তুলে ফেলুন। তারপর এই ভেজানো রুটি প্লেটে কিছুক্ষণ রেখে দিন। রুটি নরম হয়ে যাবে। এভাবে বাকি নান রুটিগুলো নরম করে নিন।
২. ভেজা কাপড়ে মুড়ে নিনঃ
কুসুম গরম জলে একটা কাপড় ভিজিয়ে নিন। এরপর এতে নান রুটি মুড়ে রাখুন, নরম হয়ে যাবে।
৩. এয়ারটাইট বক্সে রুটি রাখুনঃ
রুটির গায়ে বাতাস বা ঠান্ডা তাপ লাগলেই শক্ত হয়ে যায়। তাই নান রুটি এয়ারটাইট বক্সে রেখে দিলেই আর কোন ঝামেলা হয় না। বাতাস লাগবেনা আর রুটি থাকবে নরম তুলতুলে।
৪. সেঁকে নিনঃ
নান রুটি ফ্রিজ থেকে বের করার পরে রুম টেম্পারেচারে কিছুক্ষণ রেখে দিন। তারপর সেঁকে নিলে নরম খেতে পারবেন। চাইলে বাটার দিয়ে নান ভালো করে ভেজে নিতে পারেন। এভাবেও শক্ত রুটি নরম করা যায়।
৫. প্রেসার কুকারে গরম করুনঃ
- ঘরে প্রেসার কুকার থাকলে সেটা দিয়েও নান রুটি নরম করতে পারবেন। প্রথমে কুকারটা কিছুটা জলভর্তি করে নিন। এবারে একটা কিনারা উঁচু বাটিতে ৪-৫টা নান রুটি রেখে বাটিটা কুকারের মাঝখানে বসিয়ে দিন। খেয়াল রাখবেন জল যেন বাটির ভিতর অব্দি না পৌঁছায়।
- এরপর প্রেসার কুকারের মুখ আটকে হাই হিটে রাখুন। ৩০-৪০ সেকেন্ডের মধ্যে প্রথম হুইসেল বাজবে। পরপর দুই বার হুইসেল বাজলে চুলার আঁচ বন্ধ করে দিন। এবারে চামচ দিয়ে প্রথমে কুকারের বাষ্প বের করে নিন। তারপর ঢাকনা খুলে রুটিগুলো বের করুন। দেখবেন রুটি একদম নরম তুলতুলে হয়ে গেছে।
- প্রেসার কুকারে একবারে ৫টার বেশি নান রুটি গরম করবেন না। যদি বেশি রুটি গরম করতে চান তাহলে হুইসেলের পরিমাণও বাড়বে। আর কুকারের ঢাকনা বেশীক্ষণ খুলে রাখবেন না, এতে রুটি ভিজে চুপচুপে হয়ে যাবে।
৬. মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করুনঃ
কুকারের মতো করে মাইক্রওয়েভেও শক্ত নান নরম করা যায়। একটি মাইক্রোওয়েভ-প্রুফ প্লেটের চারপাশে ৫টা নান রুটি সাজিয়ে নিন। প্লেটের মাঝে একটা জলভর্তি বাটি রাখুন। প্লেটটা মাইক্রোওয়েভে দিয়ে ১৯০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১ মিনিট গরম করুন। ওভেন বন্ধ হলে রুটি বের করে নিন। কুকারের মতো মাইক্রোওয়েভেও একবারে ৫টার বেশি রুটি গরম না করাই ভালো। রুটি বেশি নিলে গরম করতে সময় বেশী লাগবে।
খ. নান রুটি বানানোর সময়ে করণীয়ঃ
যদি ঘরেই নান রুটি তৈরি করেন তাহলে রুটি বানানোর সময়ে কিছু কাজ করতে পারেন।
ডো মাখানোর সময়ে একটু বেশি করে তেল ব্যবহার করবেন। এতে রুটি নরম থাকবে অনেকক্ষণ।
একবারে অনেকগুলো নান রুটি বানিয়ে ফ্রিজে না রেখে প্রয়োজনমতো বানিয়ে বাকি ডো টা ফ্রিজে রেখে দিন। ফ্রিজে থাকলে ডো শক্ত হবে না৷ পুনরায় বানানোর সময়ে ডো বের করে নিবেন।
নান রুটি বানানোর সময়ে রুটির গায়ে হালকা তেল ব্রাশ করে দিবেন। এটা রুটি শক্ত হওয়া থেকে আটকাবে। প্রতিটা রুটির গায়ে তেল দেয়া থাকলে রুটি যখন ফ্রিজে রাখবেন তখন একটা আরেকটার সাথে লেগে যাবে না। তেলের বদলে ময়দাও ব্যবহার করতে পারেন আটকে যাওয়া ঠেকাতে।
বেঁচে যাওয়া নান রুটি ফ্রিজে রাখার আগে হালকা সেঁকে নিবেন৷ তারপর সেগুলো পেপারের উপর রেখে দেবেন কিছুক্ষণ। এরপর ফ্রিজে রাখবেন। সেঁকার পরে রুটির যে ভেজা ভেজা ভাবটা থাকে সেটা পেপার শুষে নিবে। ফলে ফ্রিজে রাখার পর রুটি শক্ত হয়ে যাবে না৷
সাধারণ আটার রুটির তুলনায় নান রুটি বেশ মোটা, তাই এটা বেশীদিন ফ্রিজে ফেলে রাখবেন না৷ রাখলে খুব বেশি শক্ত হয়ে যাবে। চেষ্টা করবেন যাতে নান ফ্রিজে ১-২ দিনের বেশী না থাকে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খেয়ে ফেলবেন।