ভাত প্রিয় না রুটি, এই নিয়ে বাঙালির তর্ক বহুদিনের। ছোটবেলা থেকেই আমরা জেনে আসছি যে, পাতের পাশে যা-ই থাকুক, দু’বেলা ভাত না হলে বাঙালির রসনাতৃপ্তি হয় না কিছুতেই! অন্যদিকে রুটি? বাঙালির কাছে তার পরিচিতি একসময় ছিল মূলত উত্তরপ্রদেশ বা পঞ্জাবের ‘স্টেপল ফুড’ হিসেবেই।
মাছে-ভাতে বাঙালি হলেও, এখন অনেক বাঙালিই কিন্তু রুটি খেতে ভালবাসেন। কারণ, প্রথমত, গম থেকে তৈরি হওয়া আটার রুটি হৃদরোগকে দূরে রাখতে সাহায্য করে ও হার্ট অ্যাটাককে দূরে রাখে। এছাড়া রুটিতে ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম থাকার কারণে ডাক্তাররা ভাতের বদলে রুটি খাওয়ার পরামর্শ দেন। রুটি খেলে ওজন বাড়ে না, শরীরও ফিট ও ঝরঝরে থাকে। এমনকী, ডায়াবেটিসের রোগী যারা, তাঁদের পক্ষেও রুটি খাওয়ার উপকারিতা অনেক।
রুটি খেলেই গ্যাস, অম্বল?
দুঃখের বিষয়, রুটিতে অনেক পুষ্টি থাকলেও অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, রুটি খেলেই তাঁদের অ্যাসিডিটি হয়। শরীর সুস্থ রাখতে ভাতের বদলে রুটি খেতে চাইলেও শরীর সঙ্গ দেয় না তাঁদের। ফলে রুটি খাওয়ার অনতিবিলম্বেই শুরু হয় বুকজ্বালা, নয়তো অম্বলের সমস্যা, কিংবা গ্যাস। বাধ্য হয় তখন ভরসা রাখতে হয় হজমের ওষুধেই!
গ্লুটেনে সমস্যা?
এছাড়াও গম থেকে তৈরি রুটিতে গ্লুটেন উপস্থিত থাকে। এই গ্লুটেন অনেকেই সহ্য করতে পারেন না। দেখা যায়, গ্লুটেনে অনেকেরই অ্যালার্জি হয়। অনেকসময় এই গ্লুটেনের কারণেই হজমের গোলমালও দেখা যায় রুটি খেলে। ফলে পেটখারাপ হতে পারে।
কিন্তু শারীরিক সমস্যা থাকার কারণে ভাত খাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকেই নিষেধাজ্ঞা দেন ডাক্তাররা। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁদের রুটি খেতে হয়। তাই রুটি খেলেই আপনার যদি গ্যাস, অম্বলের সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে দেখে নিন আমাদের আজকের আলোচনা এবং সেইভাবে রুটি বানান, তাহলেই দেখবেন আপনার গ্যাস, অম্বলের ছুটি হয়ে যাচ্ছে! এক্ষেত্রে রুটি বানানোর প্রক্রিয়ায় সামান্য বদল আনলেই আপনার পক্ষে এমনভাবে রুটি বানানো সম্ভব হবে, যাতে রুটি খেলেও আপনার গ্যাস বা অম্বল কোনওটিই হবে না।
গরম জলে আটা মাখুনঃ
এটি খুব সাধারণ একটি পদ্ধতি, কিন্তু তাও অনেকে এটি জানেন না। এই পদ্ধতিটির খুব একটা ঝামেলাও নেই বা খুব একটা বাড়তি সময়ও লাগে না। আমাদের সকলের বাড়িতেই দৈনন্দিন রুটি বানানোর ক্ষেত্রে প্রায় সকলেই সাধারণ জলে আটা মেখে থাকেন। কিন্তু এমনি জলে আটা মাখলেই সেই রুটি খেলে গ্যাসের সমস্যা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এবার থেকে রুটি করার আগে আটা মাখার সময় যে-জল দিয়ে আটা মাখবেন, সেটিকে হালকা করে গরম করে নিন। এবার এই গরম জল দিয়ে আটা ভাল করে মেখে নিন। এই গরম জলে মাখা আটার তৈরি রুটি খেলেই দেখবেন বুকজ্বালা, অম্বল, গ্যাসের সমস্যা একেবারে মিটে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, গরম জল দিয়ে আটা মাখলে আপনার রুটিগুলিও খুব নরম হবে এবং সুন্দর ফুলে উঠবে।
তাহলে আর চিন্তা কীসের? এবার থেকে রুটি করতে হলেই গরম জলে আটা মাখুন, আর গ্যাস, অম্বলের থেকে দূরে থাকুন।