বাঙালি রান্নায় ফোঁড়নের জায়গাটা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। বেশির ভাগ রান্নায় আমরা ফোঁড়ন দিই। অবাঙ্গালি অনেক রান্নায় আমরা আবার তড়কা লাগাই রান্নার শেষে। কিন্তু এই ফোঁড়ন বা তড়কা দিলে রান্না যতই ভালো হোক না কেন, দেওয়ার সময়ে আমাদের খুব কাশি হয়। অনেক সময়ে চোখ জ্বালা করে। ফলে খুবই খারাপ অবস্থা হয়। কিন্তু কিছু উপায় মাথায় রাখলে এই কাশি আর হবে না।
১. নুনের ব্যবহারঃ
তেলে সরাসরি ফোঁড়নের মশলা আগে দেবেন না। সবার আগে তেল গরম হয়ে আসলে তার মধ্যে দিন অল্প নুন। এবার কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করে আঁচ একদম কমিয়ে তারপর ফোঁড়ন দিন। দেখবেন এতে ঝাঁঝ অনেক কম আসছে। নুনের প্রলেপ তেলের সঙ্গে মিশে তেলের উত্তাপ অনেকটা কমিয়ে আনে। নুন এখানে অপদ্রব্যের কাজ করে।
২. অল্প জল দিনঃ
তেলে যখন ফোঁড়ন দিচ্ছেন তখন আঁচ কম তো রাখবেনই। ফোঁড়ন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দুই এক ফোঁটা জল দিয়ে দিন। একগাদা জল দেবেন না। তাহলে ফোঁড়ন দেওয়ার মানেই থাকে না। এতেও কাশি আর হবে না। জল তেলের মধ্যে মিশেও ঝাঁঝালো ব্যাপার খানিক কমিয়ে আনবে।
৩. উপযুক্ত মসলাঃ
কাশি কমানোর জন্য আপনাকে জানতে হবে কোন মশলা আগে দিতে হবে আর কোন মশলা পরে। আমাদের প্রবণতা থাকে তেলে আগে লঙ্কা দেওয়ার। কিন্তু এটি কাজের কথা নয়। আগে জিরে, ধনে বা মৌরির মতো মসলা দিন। খানিক নেড়ে তারপর লঙ্কা দিন। এতে ঝাঁঝ কম উঠবে আর কাশি কম হবে।
৪. লঙ্কার বিশেষ ব্যবহারঃ
একটা কাজ করে দেখতে পারেন। লঙ্কা তেলে দেওয়ার আগে অল্প কাঁচা তেলের মধ্যে সেই লঙ্কা খানিক চুবিয়ে নিন। কাঁচা হোক কি শুকনো লঙ্কা, দুই ক্ষেত্রেই এটি করতে পারেন। এতে লঙ্কার ওপর তেলের একটি প্রলেপ হয়ে যাবে। এই প্রলেপের ফলে গরম তেলের সঙ্গে লঙ্কার সরাসরি কোনও সম্পর্ক তৈরি হবে না। তাই ঝাঁঝ তত সহজে আসবে না।
৫. তেলের ব্যবহার
আমাদের মনে হয় ফোঁড়ন বা তড়কা তেল খানিক গরম না হলে দেওয়া উচিত নয়। কিন্তু আপনি যদি তেল দেওয়ার কয়েক সেকেন্ড পর মসলা দেন তাহলেও কিন্তু ফল হবে। এতে দুটি জিনিস হবে। তেল যেহেতু খুব গরম হয়নি তাই ঝাঁঝ উঠবে না তাড়াতাড়ি, কাশিও হবে না। আর তেল আস্তে আস্তে গরম হওয়ার সময়ে মশলাও ভাজা হবে। তখন তার গন্ধ বাইরে আসবে। এতেও রান্নায় সমান স্বাদ হবে।
এই পাঁচটি উপায় এবার থেকে রান্না করতে গেলে মেনে চলুন। দেখুন আর কাশি খুব একটা হবে না।