সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়িতে কিছু না কিছু জলখাবার হিসেবে খাওয়া হয়, বিশেষ করে ভাজাভুজি। তাই মহিলারা প্রতিদিন চায়ের সাথে পেঁয়াজ পকোড়া, বেসন ফুলোরি, ডালের পাপড় ইত্যাদি তৈরি করেন। সকালের জল খাবারে বিশেষ করে লুচি তো থাকবেই থাকবে বাঙালীর ঘরে। এই খাবারগুলো তৈরি করতে কড়াইতে প্রচুর তেল ঢালা হয়, কিন্তু মাঝে মাঝে আমরা একটা সমস্যায় পড়ি লুচি ভাজার পর অবশিষ্ট তেল নিয়ে। এই তেল পড়ে ব্যবহার করে ফেলি ঠিকই। কিন্তু তা সঠিক ভাবে সংরক্ষণ না করে ব্যবহার করলে বিষের সমান।
সঠিক ভাবে এই তেল সংরক্ষণ করলে তা উপকারী প্রমাণিত হতে পারে। যা আমরা রান্নায় পুনরায় ব্যবহার করতে পারি। তবে এর জন্য আপনার অবশিষ্ট তেলটি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি রাখার পরেও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই লুচি ভাজার পর অবশিষ্ট তেল সংরক্ষণ করার সঠিক কৌশল জেনে রাখুন। আর হ্যাঁ এইভাবে চাইলে যেকোনো ভাজার পর বেচে যাওয়া তেল সংরক্ষণ করতে পারেন।
১. ভাজা তেল পুরোপুরি ঠান্ডা হতে দিনঃ
ভাজার পরের অবশিষ্ট তেলটি সম্পূর্ণ ঠান্ডা হওয়ার পরেই সংরক্ষণ করুন। কখনও কখনও তাড়াহুড়ো করে, আমরা হালকা গরম তেল সংরক্ষণ করি, যার কারণে এতে উপস্থিত তাপ কণাগুলি বন্ধ পাত্রে বাষ্প তৈরি করে। বাষ্পের কারণে তেলে জলের প্রভাব তৈরি হয়। তাই বয়ামে তেল ঢালার আগে সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা করে তারপর সংরক্ষণ করা ভালো।
২. তেল ফিল্টার করে সঞ্চয় করুনঃ
অনেক সময় আমরা ফিল্টার না করে তেল ঠান্ডা করার পর সংরক্ষণ করি, কিন্তু তা করা ভুল। কারণ আমরা যখন কোনো কিছু তেলে ভাজতে থাকি তখন কিছু খাবারের কণা তার মধ্যে থেকে যায় এবং এই খাবারের কণাগুলো কিছু দিনের মধ্যেই নষ্ট হতে শুরু করে। যার কারণে খাদ্যে বিষক্রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আপনি যদি তেল সংরক্ষণ করেন তবে এটি ফিল্টার করে করুন।
৩. লুচি ভাজা তেল ফিল্টার কিভাবে করবেনঃ
যদিও বাজারে তেল ফিল্টার করার জন্য অনেক ধরনের ফিল্টার পাওয়া যায়, তবে আপনি একটি সাধারণ প্লাস্টিকের ছাঁকনি বা স্টিলের ছাঁকনিও ব্যবহার করতে পারেন। এটি করলে আপনার তেলে উপস্থিত সূক্ষ্ম খাদ্য কণা দূর হয়ে যাবে এবং তেল নষ্ট হবে না। এছাড়াও, অন্তত তিনবার তেল ফিল্টার করার চেষ্টা করুন।
৪. কীভাবে ফ্রিজে তেল সংরক্ষণ করবেনঃ
একটি বায়ুরোধী পাত্রে তেল সংরক্ষণ করুন এবং ফ্রিজে রাখুন। তবে রান্নাঘরে বায়ুরোধী পাত্রে রাখা ভাল কারণ প্রতিটি তেল ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায় না। এছাড়াও, আপনি যদি রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করেন তবে ব্যবহারের আগে তেলটি ফ্রিজ থেকে বের ফেলুন। এটি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় না আসা পর্যন্ত ব্যবহার করবেন না।
৫. ভাজা তেল কতদিন সংরক্ষণ করা যাবেঃ
ভাজা তেল বেশিদিন সংরক্ষণ করা উচিত নয় কারণ এটি দীর্ঘ সময় ধরে রাখলে তাতে গন্ধ হতে পারে এবং এর গঠন আঠালো হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও, আপনি যদি তেলের রঙ বা টেক্সচার বদলে যেতে দেখতে পান তবে এটি ব্যবহার বন্ধ করুন। তেল বেশিক্ষণ ব্যবহার না করাই ভালো। এক সপ্তাহের বেশি ব্যবহার করবেন না।
৬. তেল নিক্ষেপ না করে এই কাজটি করুনঃ
আপনি যদি তেল ব্যবহার করতে না চান, তাহলে তা ফেলে না দিয়ে, বিভিন্ন উপায়ে পুনরায় ব্যবহার করতে পারেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে।
- অবশিষ্ট তেল ব্যবহার করতে পারেন জং পড়া জিনিস যেমন দরজার হুক, পেরেক বা অন্য কোনো গৃহস্থালি জিনিসপত্র ইত্যাদি ঠিক করতে।
- অবশিষ্ট তেল ফেলে দেওয়ার পরিবর্তে, আপনি এটি বাতিতে ঢেলে ব্যবহার করতে পারেন ফলে আপনাকে অন্য তেল কিনতে হবে না।
