উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের কথা বললে আমাদের মনে সবার আগে যে নামটি আসে তা হলো ডিম। ডিম খেতে কম বেশি আমরা সকলেই ভালোবাসি। যার যার রুচি, পছন্দ ভিন্ন ভিন্ন। একেক জন একেক ভাবে ডিম রান্না করে খেতে পছন্দ করে। কেউবা ভালোমতো শক্ত করে, কেউ আবার পোঁচ করে, আবার অনেকে ভেজে অথবা রান্না করে খেতে পছন্দ করে। কিন্তু এই ডিম রান্নার সেরা উপায় কোনটি বা কিভাবে? যাতে পুষ্টিগুণ বজায় থাকে।
ডিম রান্নার সবচেয়ে পুষ্টিকর বা স্বাস্থ্যকর উপায় হলো ডিমকে কম তাপে এবং দ্রুত রান্না করা। এতে করে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কম হ্রাস পায় এবং সেই সাথে ডিমের বেশিরভাগ পুষ্টি ধরে রাখতে সাহায্য করে।
১. ডিম সিদ্ধঃ
ডিমকে দুই উপায়ে সিদ্ধ করা যায় যার একটি হলো শক্ত করে অথ্যাৎ যাকে হার্ড বয়েল বলে। এই প্রসেসে ডিমের সাদা অংশ এবং কুসুম দুটোই ভালোমতো সিদ্ধ হয়ে যায়। আর একটি পদ্ধতি হলো হাফ বয়েল। এই পদ্ধতিতে ডিমের কুসুমটা কাঁচা থাকে এবং সাদা অংশটা মোটামুটি সিদ্ধ হয়। দুটো উপায়েই ডিমের পুষ্টি ঠিক থাকে তবে হাফ বয়েল বা একটু কাঁচা কাঁচা থাকে যে রান্নার প্রসেসে সেই পদ্ধতিটি সেরা, ডিম সিদ্ধ করার ক্ষেত্রে। কারন এতে ডিমের পুষ্টিগুণ বেশি থাকে।
২. ডিম পোঁচঃ
ডিমকে পোঁচ করেও খাওয়া যায়। এতেও ডিমের সর্বোচ্চ পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। এটি তৈরির জন্য প্রথমে একটি ডিম নিয়ে তা জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর গ্যাসে একটি তাওয়া বা প্যান বসিয়ে তাতে কিছু তেল দিয়ে ব্রাশ করে নিয়ে কিছুটা গরম হয়ে আসলে ডিমটি ভেঙে দিয়ে দিন। আঁচ এই সময় মিডিয়াম টু হাই থাকবে। ডিমের সাদা অংশ শক্ত হয়ে আসলে সর্তকতার সাথে উল্টে দিন এবং কিছু সময় রাখুন। অপর পাশটা হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। আপনি চাইলে কুসুমটি একটু কাঁচা কাঁচাও রাখতে পারেন। এতে এক ভিন্ন স্বাদ আসবে আবার পুষ্টিগুণ ও বেশি থাকে এই প্রক্রিয়ায়।
৩. অমলেটঃ
অমলেট ডিমের এমন একটি প্রসেস যা একক জন একেক ভাবে খেতে পছন্দ করে থাকে। ডিমের অমলেটের সাথে চাইলে পছন্দমতো কিছু সবজি কুচি করে অথবা পনির যোগ করা যেতে পারে। এতে করে ক্যালরির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। এর জন্য একটি প্যান চুলায় বসিয়ে কিছুটা তেল বা বাটার ব্রাশ করে নিতে হবে এরপর যে কয়টি ডিমের অমলেট হবে তা ভেঙে নিতে হবে। একটি কাঁটা চামচ বা এই জাতীয় কিছু দিয়ে ডিমটি ভালো করে ফেটে নিতে হবে। তবে ফোম করতে যতটা ফেটতে হয় ততটা নয়। শুধুমাত্র ডিমের কুসুম ও সাদা অংশ ভালো করে মিশাতে হবে।
এরপর এতে সামান্য লবণ যোগ করে প্যানে দিয়ে দিতে হবে। কিছুটা হয়ে আসলে পছন্দমতো সবজি বা পনির দিয়ে ভালো করে রান্না করে নিতে হবে। এক পাশ ভালো মতো হয়ে গেলে সাবধানে অপর পাশে উল্টে দিতে হবে। এবং রান্না করে নিতে হবে। পুরো রান্নায় চুলার আঁচ মিডিয়াম টু হাই থাকবে। এবং বারবার নেড়েচেড়ে রান্না করে নিতে হবে। হয়ে গেলে নামিয়ে নিতে হবে। অমলেট একটি মজাদার খাবার হলেও এতে ডিমের সেরা পুষ্টিটি পাওয়া যায় না। বেশি সময় নিয়ে রান্না করায় এর পুষ্টি গুণাগুণ কিছুটা কমে যায় বা হ্রাস পায়।
৪. ডিমের জল পোঁচঃ
ডিমকে জল পোঁচ করেও খাওয়া যায়। এতেও ডিমের পুষ্টি গুণাগুণ ঠিক থাকে। এটি তৈরি করাও খুব সহজ। জল পোঁচ তৈরি করার জন্য একটি ডিম নিন। পরিষ্কার করে ধুয়ে একটি বাটিতে ভেঙে নিন। এতে ১ চিমটি পরিমাণ লবণ, ১ চিমটি পরিমাণ বিট লবণ দিয়ে ভালো করে ফেটে নিন। ফোম করতে যাবেন না। ভালো করে মিশিয়ে নিলেই হবে। এরপর একটি প্যান বা কড়াইতে ১ কাপ পরিমাণ জল দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিন। হাই হিটে জল ফুটিয়ে নিন। জলে বলক চলে আসলে সেই ফেটে রাখা ডিমটা একটু একটু করে ঢেলে দিন। এবং খুন্তি দিয়ে অনবরত নাড়তে থাকুন। এ সময় একেবারেই নাড়া বন্ধ করা যাবে না। সবটুকু ডিম দেওঁয়া হয়ে গেলে চুলার আঁচ বাড়িয়ে দিয়ে একটা বলক তুলে নামিয়ে নিন।
বিশেষ টিপসঃ
ডিমকে অনেকভাবে রান্না করা যায় এবং খেতে অনেক মজাও লাগে। তবে আপনি যদি ডিমের সেরা পুষ্টি পেতে চান তাহলে তা পেতে পারেন খুব সহজেই। কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়া ডিমটি ভালো করে ধুয়ে সিদ্ধ করে নিন। এই প্রসেসেই ডিমের সেরা পুস্টি পাওয়া যায়। সেই সাথে ঝামেলাও কম তাই রান্নার সময়ও বেঁচে যাবে।