শিরোনাম পড়ে হয়তো ভাবছেন এ আবার কি বিষয়! ডিম খারাপ হলে পচা গন্ধ বেরোবে তাহলেই বোঝা যাবে ভালো না খারাপ! কথাটা একদিক দিয়ে ঠিকই ভাবছেন তবে সব সময় এই ফর্মুলা কাজ করে না। ফ্রিজে অনেকদিন ধরে থাকা ডিম খারাপ হয়ে গেলে গন্ধ দিয়ে বোঝা যায় না। ফ্রিজে থাকার দরুন পচা গন্ধ এতে হয় না। ফলে ভালো ভেবে যে ডিমটি আপনি উদরস্ত করলেন তা আসলে পচা। এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝলেন যে কিছু উপায় জেনে রাখা কতটা জরুরি! তাহলে দেরি না করে পড়ে নিন ডিম ভালো না খারাপ কিভাবে বুঝবেন গন্ধ ছাড়া।
ডিম খাওয়ার জন্য ভালো আছে না খারাপ হয়ে গিয়েছে বোঝার উপায়ঃ
ডিমের গন্ধ দিয়ে সব সময় বোঝা যায় না আদতে ডিম ভালো না খারাপ। তার জন্য আপনারা নিচে বলা ৫টি উপায়ের মধ্যে যেকোনো একটি ট্রাই করে দেখতে পারেন।
- ডিমের সাদা অংশ শক্ত না পাতলা
- জলে ডিম দিয়ে পরীক্ষা
- ডিমের ভিতরের রঙ
- মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ পরীক্ষা করুন
- মোমবাতি দিয়ে ডিমের পরীক্ষা
১. ডিমের সাদা অংশ শক্ত না পাতলাঃ
ফ্রিজে অনেকদিন ধরে রাখা ডিম ভালো আছে না খারাপ এটা বোঝার জন্য সবচেয়ে বেস্ট হচ্ছে এটি। ডিম ভালো থাকলে ডিমের সাদা অংশ বেশ মোটা বা পুরু থাকে। সেজন্য এটি পরীক্ষা করে আপনাকে দেখতে হবে। একটি পাত্রে জল গরম করে তাতে ডিম সেদ্ধ করুন। সেদ্ধ হওয়ার পর ঠাণ্ডা জলে ডিমটি ২ মিনিট রাখুন। ২মিনিট পর খোসা ছাড়ান। খোসা ছাড়ানোর সময় যদি ডিমের সাদা অংশ খোসার সাথে উঠে না আসে তাহলে জানবেন ভালো আছে। কিন্তু খোসা ছাড়ালেই যদি খোসার গা লেগে সাদা অংশ পাতলা হয়ে উঠে আসছে তাহলে জানবেন ভালো না। খারাপ ডিম হলে পুরো সাদা অংশ খোসার গায়ে লেগে যাবে।
২. জলে ডিম দিয়ে পরীক্ষাঃ
একটি ডিম ভালো না খারাপ তা পরীক্ষা করার জন্য জল দিয়ে পরীক্ষা হল সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি গুলির মধ্যে একটি। একটি পাত্রে বেশি করে জল নিন তাতে ডিম আলতো করে বসিয়ে দিন। যদি ডিম জলের নিচে বসে থাকে জানবেন একদম সতেজ। আর যদি কাত হয়ে ভাসতে থাকে বা জলের উপরে উঠে আসে তাহলে ডিমটি অনেক পুরনো। ডিম তাজা না পুরনো এটা বোঝার জন্য এই টেস্টটি একদম পারফেক্ট।
৩. ডিম খাওয়ার জন্য ভালো আছে না খারাপ বলবে ডিমের ভিতরের রঙঃ
ডিম বাইরে থেকে দেখলে সব সাদা। বোঝার উপায় নেই ভালো না খারাপ। কিন্তু ডিম ফাটিয়ে দেখলে বোঝা যায় ভালো না খারাপ। ডিম খারাপ হয়ে গেলে হালকা বাদামি বা কালচে রঙ কুসুমের মধ্যে চলে আসে। ফ্রেস হলে হলদে হয় বা মাঝে মাঝে তাতে লালচে ভাব থাকে। এতে করে বোঝা যায় ভালো না খারাপ। এবার থেকে আপনারাও ডিম ফাটিয়ে দেখে নিন যে ভিতরের রঙ কালচে বা হালকা বাদামি কিনা। যদি তা হয় জানেবেন খারাপ। হলুদ বা লালচে রঙ হলে তবেই তা ভালো। দেখলেন কত সহজে শুধু রঙ দিয়ে চেনা যায় ডিম ভালো না খারাপ।
৪. মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ পরীক্ষা করুনঃ
প্যাকেট করা ডিম আনলে তবেই এটি করা সম্ভব। লুস ডিম নিয়ে এলে আপনি এর মেয়াদ শেসের তারিখ জানতে পারবেন না। তাই এখন থেকে চেষ্টা করুন প্যাকেট করা ডিম আনার। এতে করে সুবিধা হবে যে, আপনার ডিমের প্যাকেটের গায়েই লেখা থাকবে এর মেয়াদ। যাতে করে এটি খাওয়ার জন্য কতদিন অব্দি ভালো থাকবে তা প্যাকেটের গায়েই লেখা থাকে। আলাদা করে কোন রকমের টেস্ট করার দরকার নেই। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তখন পরীক্ষা করে নেবেন ভালো আছে না খারাপ। তবে আমি বলবো প্যাকেটে থাকা ডিম আনলে মেয়াদের মধ্যে খেয়েই শেষ করে দিন।
৫. লাইট দিয়ে ডিমের পরীক্ষাঃ
মোমবাতির ব্যবহার করে অনায়াসে বুঝতে পারেন ডিম ভালো না খারাপ। এই পরীক্ষাটি বহু পুরনো। আগে অন্ধকার ঘরে একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে ডিমের পরীক্ষা করা হত। মোমবাতির আলোর উৎসের উপর ডিমটি কাত করে বাম দিক থেকে ডান দিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখা হত ভিতরের কুসুম নড়ছে কিনা। এতে এটা স্পষ্ট বোঝা যায়। যদি কুসুম এক জায়গায় স্থির না থেকে নড়াচড়া করে তাহলে এটি খারাপ। স্থির থাকলে ভালো। তবে আজকাল মোমবাতির বদলে ছোট টর্চলাইট বা রিডিং লাইট ব্যবহার করেও একি ভাবে চেক করা যায়। এটা করাও খুব সহজ।
উপররের পাঁচটি উপায়ের মধ্যে যেকোনো একটি উপায় ব্যবহার করে আপনারা পরীক্ষা করে নিতে পারেন খাওয়ার জন্য ডিম ভালো আছে না খারাপ। এর জন্য খুব সামান্য সময় আপনাদের অতিবাহত হবে ঠিকই, কিন্তু শরীরের জন্য খুবই উপকারি। ডিমের পুষ্টি যদি শরীরে না প্রবেশ করলো তাহলে ডিম খাওয়ার মানে কি! তাই এটা করা খুবই জরুরি।