একজন গৃহিণীর কাছে তার যাবতীয় আসবাবের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় বা কাছের একটি জিনিস হলো ফ্রিজ বা রেফ্রিজারেটর। কেননা ফ্রিজ তাকে রান্না করা খাবার সংরক্ষণ করে রাখতে অনেক সহায়তা করে থাকে। সেই সাথে রোজ রোজ বাজার করার ঝামেলা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু অনেকেই এই ফ্রিজের মধ্যে জিনিস সুন্দর করে গুছিয়ে রাখতে পারে না। আজ তাই আপনাদের কিছু কৌশল বলব যে কিভাবে একটি ফ্রিজ বা রেফ্রিজারেটর গুছিয়ে রাখতে হয় স্টেপ বাই স্টেপ।
![গুছিয়ে রাখা ফ্রিজ](https://currynaari.com/wp-content/webp-express/webp-images/uploads/2022/01/4ff369_5d479d95dcb74908a2834600b1e7303e-mv2.jpg.webp)
স্টেপ বাই স্টেপঃ
- প্রথমে যে কাজটি করবেন তা হলো, ফ্রিজটি সুন্দর করে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে নেবেন। এরপর ড্রয়ার ও তাকগুলোতে কিছু কাগজ বা টিস্যু পেপার বিছিয়ে দিতে পারেন।
- ফ্রিজের মধ্যে ফল মূল, ও শাক – সবজি কখনো একসাথে রাখতে যাবেন না। এগুলো রাখার যে ড্রয়ার বা তাক রয়েছে তাতে আলাদা আলাদা করে এদের সংরক্ষণ করুন। একসাথে সব কিছু রাখলে তা দ্রুত পচে বা নষ্ট হয়ে যাওয়ার খুব সম্ভাবনা থাকে। ফলগুলোকে সবসময় ড্রয়ারে রাখবেন। ধুয়ে পরিষ্কার করে কাগজে মুড়ে নিয়ে তারপর রাখতে পারেন। এতে বেশি সময় ফ্রেশ থাকবে। এবং সবজিগুলো তাকে রাখার চেষ্টা করবেন।
- আবার ছোট ছোট সবজি যেমন কাঁচা মরিচ, পুদিনা পাতা, ধনেপাতা ইত্যাদি আলাদা আলাদা প্যাকেট করে রাখুন। তবে রাখারআগে অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে, জল ঝরিয়ে নিয়ে তারপর রাখবেন। মরিচের বোঁটা ছাড়িয়ে রাখতে পারেন। এতে মরিচ বেশি দিন ভালো থাকবে।
- ফ্রিজের দরজায় ডিম রাখার জায়গা বা ট্রে থাকে। সব সময় চেষ্টা করবেন ডিমগুলো সেই ট্রেতে সংরক্ষণ করার। এতে ডিম ভাঙার কোন ঝুঁকি থাকবে না। আবার ফ্রিজেরও অনেক জায়গা বেচেঁ যাবে। এই ট্রেতে আবার অন্য কোন খাবার রাখতে যাবেন না।
- ফ্রিজের দরজাকে বোতলের জন্য ছেড়ে দিন। দরজার একেবারে নিচের লাইনে জলের বোতল, ফলের জুসের বোতল, কোন সফট ড্রিংকসের বোতল, সসের বোতল, জ্যাম, সয়া সসের বোতল ইত্যাদি রাখতে পারেন। সেই সাথে চিজ জাতীয় খাবার বা বাটার রাখতে পারেন। যদি কেউ সুগারের পেশেন্ট হয়ে থাকেন, তাহলে সে তার ইনসুলিনও সেখানে রাখতে পারেন।
- ফ্রিজের ডিপকে কাঁচা মাছ, মাংসের জন্য রাখতে পারেন। মাছ বা মাংস সুন্দর করে পরিষ্কার করে কোন এয়ারটাইট কন্টেইনার বা জিপলক ব্যাগে বা কোন প্লাস্টিকের প্যাকেটের মধ্যে রেখে সংরক্ষণ করে রাখুন। তবে এগুলোকে কখনোই সরাসরি খোলাভাবে বা প্যাকেট ছাড়া রাখতে যাবেন না। আবার ঐগুলো নোংরা অবস্থায় কখনোই ফ্রিজে রাখবেন না। এতে ফ্রিজ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- মাছ কিংবা মাংস কোনটাই এক প্যাকেটের মধ্যে একসাথে অনেকগুলো করে রাখবেন না। প্রয়োজন অনুযায়ী ছোট ছোট করে প্যাকেট করে তারপর রাখবেন। যাতে একবার বের করার পর তা আর ঢোকাতে না হয়। এতে করে ফ্রিজও ভালো থাকবে সেই সাথে উক্ত খাবারটি আর নষ্ট হওয়ার কোন সুযোগ থাকবে না। কেননা একবার বের করে আবার ঢুকালে সেই খাবার বেশি সময় ভালো থাকে না।
- আইসক্রিম, ফ্রোজেন বা প্যাকেটজাত করা কোন খাবার যেমন রোল, সিংগারা, ফ্রোজেন রুটি ইত্যাদি এই জাতীয় খাবার ডিপ ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করুন। কিন্তু এগুলোকে আবার মাছ ও মাংসের সাথে
- সংরক্ষণ করতে যাবেন না। আলাদা তাকে এদের রাখবেন। এছাড়াও আরো কিছু জিনিস রয়েছে যা ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হয় যেমন টক দই, দুধ, বাটার, চকলেট ইত্যাদি এগুলোকে ডিপ ফ্রিজের নিচে যে তাক রয়েছে সেখানে রাখতে পারেন।
- অনেক সময় আদা ও রসুন অনেকগুলো করে ব্লেন্ড করে রাখা হয়। এই আদা রসুন পেস্টও এয়ারটাইট বক্সে করে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন। তবে এটাকে মাছ মাংসের সাথে রাখবেন না আবার দুধ, আইসক্রিমের সাথেও রাখবেন না। আলাদা করে রেখে সংরক্ষণ করবেন।
- আমরা অনেকেই আইস কিউবে করে জল বরফ করে থাকি। এই পাত্রটি দুধ বা আইসক্রিমের সাথে রাখা যেতে পারে।
বিশেষ টিপসঃ
- ফ্রিজকে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করবেন। কমপক্ষে সপ্তাহে একদিন রাখবেন আপনার ফ্রিজকে ভালো করে পরিষ্কার করার জন্য। চেষ্টা করবেন প্রতিদিন কিছু সময়, কমপক্ষে আধঘন্টা বা এক ঘণ্টা আপনার ফ্রিজটি বন্ধ করে রাখবেন।
- যে খাবারগুলো অনেকদিন সংরক্ষণ করতে চান তা ফ্রিজের ডিপে রাখার চেষ্টা করবেন। এতে করে অনেকদিন পর্যন্ত খাবার ভালো রাখা যায়। খাবার গুলো ফ্রিজের ডিপ থেকে বের করে আবার ডিপে রাখবেন না। বারবার বের করলে ঐই জিনিস বেশি সময় ভালো থাকে না। তাই চেষ্টা করবেন ছোট ছোট প্যাকেট করে সংরক্ষণ করার। যাতে একবার বের করে নিলে তা আবার ডিপে রাখতে না হয়।