চা ভারতীয়দের একটি প্রধান আহার্য পানীয় বলা চলে। যত ধরনের পানীয় রয়েছে তার মধ্যে ভারতীয়রা সবচেয়ে বেশি চা পান করে থাকেন। আবার ভারতে চায়ের রয়েছে বিভিন্নতা। হরেক রকমের চা পাওয়া যায় এখানে। একেক স্থানের মানুষ একেক ধরনের চা পান করে থাকে।
এমনি কিছু চা নিয়ে আজকের আয়োজন। চলুন তবে আজ নতুন করে ভারতের নানা ধরণের চায়ের সাথে পরিচিত হওয়া যাক।
১. কালো চা বা লিকার চাঃ
ভারতের একটি বহুল প্রচলিত চা হলো কালো চা বা লিকার চা। এটাকে ভারতীয়রা লিকার চা নামেই চিনে থাকে। এর প্রধান উপাদান হলো চা পাতা। আর এই চা তৈরি করতে শুধুমাত্র দুইটি উপকরন লাগে আর তা হলো চা পাতা এবং জল। এছাড়া আর কোন কিছু এতে যোগ করা হয় না। শুধুমাত্র চা পাতাকে জল দিয়ে ফুটিয়ে এই চা তৈরি করা হয়। তাই একে লিকার চা বলা হয়।
২. ঔষধি চা বা হার্বাল চাঃ
সর্দি, কাশি বা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন গলা ব্যাথা ইত্যাদি সমস্যা থেকে শরীরকে সুস্থ রাখতে কার্যকরি ভূমিকা রাখে হার্বাল চা। তাই একে ঔষধি চাও বলা যেতে পারে। এতে ব্যবহৃত সব উপাদানেই আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি।
এই চা তৈরিতে যে সকল উপাদান ব্যবহার করা হয় তা হলো আদা, এলাচ, লেমনগ্রাস, ধনের বীজ, লম্বা গোলমরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, পুদিনা পাতা, তুলসি পাতা, লেবুর রস, জবা ফুলের নির্যাস। এই সকল উপাদানকে জল দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে তার সাথে চা পাতা যোগ করে ফুটিয়ে এই হার্বাল চা তৈরি করা হয়।
৩. বাটার চাঃ
উপরের চা গুলো সব স্থানে পাওয়া গেলেও বাটার চা কিন্তু হিমালয় অঞ্চলের বিখ্যাত চা। এটা পূর্বের তিব্বতী সংস্কৃতির অংশ। এই চা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হলো ভারতের লাদাখ এবং সিকিম অঞ্চলে। মজাদার এই চা তৈরির প্রধান উপাদান হলো বাটার বা মাখন। ইয়াক মাখন ব্যবহৃত হয় এই ক্রিমি চা বানাতে। এছাড়াও এতে চা পাতা এবং লবণ দেওয়া হয়। বাটার, লবণ ও চা পাতা একত্রে জলে ফুটিয়ে তৈরি করা হয় এই মজাদার ক্রিমি ক্রিমি বাটার চা।
৪. গ্রিন টিঃ
গ্রিন টি যদিও ভারতীয় চা নয় তবুও এখানে এর উল্লেখ না করলেই নয়। কেননা আমরা ভারতীয়রা প্রচুর পরিমাণে এই গ্রিন টি পান করে থাকি আজকাল। তবে শুধু যে ভারত এটি বেশি মাত্রায় জনপ্রিয় তা নয়, বরং বিশ্বের প্রায় সর্বত্র এই গ্রিন টি জনপ্রিয়। এটা তৈরি হয় মূলত ক্যামেলিয়া সিনেনসিস পাতা এবং কুঁড়ি দিয়ে। যার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এর জন্যই মূলত এর চাহিদা অনেক বেশি। এই পাতা জলে দিয়ে ফুটিয়ে গ্রিন টি তৈরি করা হয়। সাথে চাইলে ১ চা চামচ পরিমাণ মধু দেওয়া যায় এই চায়ের সাথে। এতে করে এর স্বাদ আরো ভালো আসবে। আবার অনেকে এতে লেবুর রসও যোগ করে পান করতে পছন্দ করে।
৫. কাশ্মীরি কাওয়াঃ
কাশ্মীরের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং ভিন্নধর্মী চা হল কাওয়া। নামেই এর আভিজাত্য প্রকাশ করে। এর একটি প্রধান উপাদান হলো জাফরান। জাফরান ও এর সাথে দারুচিনি, এবং এলাচ যোগ করে জল দিয়ে ফুটিয়ে তৈরি করা হয় এই কাশ্মীরি কাওয়া।
৬. গোলাপি চা বা নুন চাঃ
কাশ্মীরের আরো একটি চা হলো গোলাপি চা। একে আবার নুন চাও বলা হয়। তবে কাশ্মীর ছাড়াও এটি রাজস্থান এবং নেপালের বিভিন্ন স্থানে অনেক জনপ্রিয়। ভারতে এই চা জনপ্রিয় হওয়ার প্রধান কারন হলো এর রঙ। এটির গোলাপি রঙের জন্য বেশি বিখ্যাত। এই চা তৈরিতে চা পাতার সাথে এলাচ দেওয়া হয়। সেই সাথে কিছুটা বেকিং সোডাও দেওয়া হয়। যার কারনে এর রঙ গোলাপি রঙের হয়। এই চা পরিবেশন করা হয় এখানকার স্থানীয় রুটি দিয়ে।
৭. সাদা চাঃ
অপরিণত চা পাতা এবং চায়ের কুড়ি দিয়ে তৈরি করা হয় সাদা চা। জলের সাথে চা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে এই চা তৈরি করা হয়। তবে এটি পানের চাহিদা খুব বেশি নয়।