এতো পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ খাবার হওয়া সত্তেও একটু অসাবধানতার জন্য এই মুরগির মাংস মানব দেহের ক্ষতি সাধন করতে পারে। আমরা সাধারনত মুরগির মাংস রান্নার আগে তা খুব ভালো করে ধুয়ে নেই্। কিন্তু এটাই আমাদের দেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। কি অবাক হলেন? এটা কিভাবে সম্ভব? হ্যাঁ। নিজের অজান্তেই আপনি নিজেই নিজের ক্ষতি করছেন। ভাবছেন কিভাবে? তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কি ভুল হচ্ছে আমাদের-
এই মুরগির মাংস ধুয়ে নেওয়ার ফলে কত বড় বিপদ হতে পারে?
সিডিসি (CDC) থেকে একটি টুইট এর মাধ্যমে জানা গিয়েছে যে , মুরগীর কাঁচা মাংস ধোয়া যাবে না। কারন এর ফলে এর ভিতর থাকা জীবাণু আপনার রান্নাঘরের অন্যান্য সব খাবার এবং জিনিসপত্রে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অন্য আরো একটি টুইট থেকে জানা গিয়েছে , মার্কিং সংস্থা কর্তৃক জানানো হয়েছে যে মুরগির মাংসে যে জীবাণু থাকে তা শুধুমাত্র রান্না করার পরই নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু ধুয়ে নিলে এই জীবাণু মোটেই নষ্ট হয় না। বরং জলের তলায় থাকা কাঁচা মাংস ধোয়ার সময় মাংস এর মধ্যে থাকা জীবাণু অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে যা বিপদ বাড়ায়। কারন মুরগির মাংস ভালো করে ধুয়ে নিলে তাতে থাকা ব্যাকটেরিয়া পাত্রে ছড়িয়ে পড়ে এবং যা শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকারক হয়ে থাকে।
কোন এক গবেষণায় ক্যামফ্লোব্যাকটর নামক এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া আছে যা পেট খারাপের কারন হিসাবে বলে প্রমাণিত হয়েছে। এর কারনে অনেকেরই পেট ব্যথা, পেট খারাপ, বমি ইত্যাদির উপসর্গ দেখা দেয় মুরগির মাংস খেলে । যার মেয়াদ তিন দিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে আবার অনেক সময় এটা ভয়ংকর রুপ ধারন করে। তাই মুরগীর মাংস না ধুয়ে অন্য উপায় অবলম্বন করে মুরগীর মাংস রান্না করা উচিৎ।
মুরগীর মাংস না ধুয়ে অন্য উপায় অবলম্বনঃ
মুরগি থেকে ব্যাক্টেরিয়া দূর করতে হলে উপায় হল মুরগীর মাংসকে সঠিক তাপমাত্রায় রান্না করা। মুরগির মাংসকে রান্না করার জন্য নূন্যতম তাপমাত্রা হল ১৬৫ ডিগ্রি। তাই খাওয়ার আগে অবশ্যই ভাল করে মুরগির মাংস রান্না করতে হবে। মাংস সুন্দর ভাবে সেদ্ধ হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের জন্য।
মুরগীর কাঁচা মাংস রাখা হয়েছিল এমন কোন পাত্রে পরবর্তিতে রান্না করা মুরগীর মাংস একেবারেই রাখা যাবে না। এবং এই ব্যাপারে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার।
বিশেষ কথাঃ
মুরগীর মাংস কাটার জন্য বা রান্নার জন্য যে সকল জিনিস যেমন ছুরি, বটি বা চপার, কড়াই, খুন্তি ইত্যাদি ব্যবহার করা হবে তা অবশ্যই অন্যান্য কোন সবজি বা মাছ কাটার সময় বা ব্যবহার এর সময় দ্বিতীয়বার আবার ভাল করে ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে। সবেচেয়ে ভালো মুরগির মাংস রান্নার সব পাত্র আলাদা করে দেওয়া। তাতে শুধু মাংস রান্নাই হবে।
কাজ শেষে ব্যবহার করা বাসনপত্র এবং ছুরি, বটি ধোয়ার সাথে সাথে ভাল করে সাবান দিয়ে নিজের হাতও ধুয়ে পরিস্কার করে নিন। তারপর অন্য কোন কাজ করুন।
কাঁচা মুরগীর মাংস সংরক্ষণঃ
কাঁচা মুরগীর মাংস সংরক্ষণ করতে চাইলে তা ভালো করে ঢেকে ঠাণ্ডা জায়গায় রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে কাঁচা মুরগীর মাংস কে ফ্রিজে রেখে ও সংরক্ষণ করতে পারেন। তবে এখানে খেয়াল রাখতে হবে যেন তা অন্যান্য আর কোন খাবারের সংস্পর্শে না আসে। সব কিছু থেকে আলাদা ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। সাধারনত ফ্রিজে ডিপে মুরগীর মাংস রাখা ভালো এর সংরক্ষনের জন্য। তাই অবশ্যই মুরগীর মাংস সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করুন এবং পরবর্তিতে আর কখনোই রান্নার আগে মুরগীর মাংস ধুবেন না।