শীত একটি মজার ঋতু। কেননা শীত মানেই শুধু চারদিকে কুয়াশায় ঢাকা, ঠান্ডা আবহাওয়া বুঝায় না বাংলার ঘরে ঘরে শীত মানে বুঝায় পিঠা পুলির ধূম। অনেকের কাছে এটা পিঠার ঋতু। বিভিন্ন স্বাদের, বিভিন্ন রকমের পিঠা ভোজন রসিকদের শীতকে আরো বেশি মজাদার করে তোলে। তাই এই শীতকে আরো বেশি মজাদার করতে নিয়ে এসেছি মজাদার কিছু সহজ শীতের পিঠার রেসিপি।
১. চিতই পিঠাঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- ১ কাপ চালের গুড়া
- লবণ
- জল পরিমাণ মতো
প্রস্তুত প্রণালীঃ
চালের গুড়া নিন ১ কাপ। এরপর এতে পরিমাণ মতো লবণ ও জল মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। একটি পাতলা মিশ্রণ হবে, তবে মনে রাখবেন মিশ্রণটি যেন বেশি পাতলা বা বেশি ঘন না হয়ে যায়। এরপর যে ছাচে পিঠা ভাজবেন তাতে সামান্য তেল ব্রাশ করে নিন। ছাচটি হালকা গরম হলে তাতে ১ চামচ গোলা দিয়ে ঢেকে দিন। ৩-৪ মিনিট পর পিঠাটি তুলে নিন। ডাল, বিভিন্ন ধরনের ভর্তা, মাংসের তরকারি দিয়ে এই পিঠেটি উপভোগ করতে পারেন।
২. ভাপা পিঠাঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- ১ কাপ চালের গুঁড়া
- গুড়ো করে নেয়া খেজুরের গুড় ১/২ কাপ
- ১/২ কাপ নারিকেল কোরানো
- লবণ স্বাদমতো
- জল সামান্য পরিমাণ
প্রস্তুত প্রণালীঃ
চালের গুড়া নিন ১ কাপ। তাতে লবণ মিশিয়ে অল্প পরিমাণ জল ছিটিয়ে ঝুরঝুরে করে মেখে নিতে হবে। কোন দলা যেন না বাঁধে তা খেয়াল রাখতে হবে। ভাপ দেওয়ার জন্য একটি পাতিলে জল দিন। এরপর তাতে মুখ ছিদ্র ঢাকনা বসিয়ে দিন। লক্ষ্য রাখুন যাতে বাষ্প বের হতে না পারে। জল ফুটিয়ে নিন। পাতলা কিছু টুকরা কাপড় ও ছোট ছোট দুটি বাটি নিন। বাটিতে কিছুটা চালের গুঁড়া দিয়ে তার মাঝে কিছুটা গুড় ও নারিকেল ছিটিয়ে দিন। আবার চালের গুঁড়া দিয়ে ঢেকে দিন। এরপর এক টুকরা কাপড় হালকা ভিজিয়ে বাটিটি ঢেকে তা মুখ ছিদ্র ঢাকনার ওপর উল্টে রেখে বাটি খুলে পিঠা একটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। পিঠা সিদ্ধ হলে উঠিয়ে গরম গরম খেয়ে নিন।
৩. দুধ চিতইঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- ৪ কাপ চালের গুড়া
- জল পরিমাণমতো
- লবণ স্বাদমতো
- দুধ ১ লিটার
- গুড় ৪ কাপ
- নারকেল কোরানো ১ কাপ
প্রস্তুত প্রণালীঃ
চালের গুড়া নিন ১ কাপ। এরপর এতে পরিমাণমতো লবণ ও জল মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। একটি পাতলা মিশ্রণ হবে, তবে মনে রাখবেন মিশ্রণটি যেন বেশি পাতলা বা বেশি ঘন না হয়ে যায়। এরপর যে ছাচে পিঠা ভাজবেন তাতে সামান্য তেল ব্রাশ করে নিন। ছাচটি হালকা গরম হলে তাতে ১ চামচ গোলা দিয়ে ঢেকে দিন। ৩-৪ মিনিট পর পিঠাটি তুলে নিন।
অন্য একটি পাত্রে ৩ কাপ জলে ৪ কাপ গুড় জ্বাল দিয়ে একটি সিরা তৈরি করুন। এতে এক কাপ নারকেল কোরানো দিয়ে দিন। অন্য চুলায় ১ লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে সামান্য ঘন করে নিন। সব পিঠা ভাজা শেষে তা সিরায় ছেড়ে দিন এবং চুলায় দিয়ে কিছুক্ষণ জ্বাল করে নিন। এরপর দুধ ও পিঠা উভয়ই ঠাণ্ডা হলে পিঠে দুধে দিয়ে কিছু সময় ভিজিয়ে রাখুন। সকালের নাস্তায় এই পিঠা খেতে বেশ মজা লাগে।
৪. তিল নারকেলের পুলিঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- তিলের গুঁড়া ভাজা ১ কাপ
- ১ কাপ খেজুরের গুড়
- সামান্য পরিমাণ এলাচ গুঁড়া
- দারচিনি ৩-৪ টা
- চালের গুঁড়া ৩ কাপ
- জল ২ কাপ
- লবণ স্বাদমতো
- তেল ৩ কাপ ভাজার জন্য
প্রস্তুত প্রণালীঃ
৩ কাপ চালের গুঁড়া পরিমাণমতো জল দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। খেয়াল রাখবেন যাতে খামিরে কোনো দলা না থাকে। এরপর কুরানো নারকেল ও গুড় একত্রে ২০-২৫ মিনিট রান্না করতে হবে। জল শুকিয়ে এলে তাতে এলাচ গুড়া, তিল ও চালের গুঁড়া মিশিয়ে আরও একটু রান্না করতে হবে। সুন্দর খামিরের মতো যখন হবে তখন নামিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে। এবার চালের আটা একটু ঠান্ডা হলে সামান্য জল ছিটিয়ে ভালো করে মুথে রুটি বানাতে হবে। রুটির এক পাশে কিছুটা পুর রেখে পাশের অংশ দিয়ে ঢেকে চাপ দিয়ে কেটে নিতে হবে। পাশে বিভিন্ন নকশা করা যায় চাইলে। চুলায় একটি পাত্রে তেল দিয়ে চুলা জ্বালিয়ে দিতে হবে। তারপর তেল গরম হয়ে আসলে, পিঠাটি গরম তেলে মচমচে করে ভাজতে হবে।
৫. নকশি পিঠাঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- চালের গুঁড়া ২ কাপ
- জল ১/২ কাপ
- সামান্য লবণ
- তেল ৫০০ গ্রাম ভাজার জন্য
- সিরা তৈরির জন্য:
- গুড় ১/২ কাপ
- চিনি ১ কাপ
- জল ২ কাপ
প্রস্তুত প্রণালীঃ
চালের গুঁড়া নিয়ে তাতে পরিমাণ মতো জল ও লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে ডো বানাতে হবে। কিছুটা পুরু করে রুটি বানিয়ে পছন্দমতো ডিজাইন দিয়ে কেটে নিন। ডুবোতেলে ভেজে নিন। সিরায় দিয়ে তুলে নিন।