skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

রান্নাঘরের জন্য কোন রেফ্রিজারেটর কিনবেন? পড়ুন এই বায়িং গাইডটি

রেফ্রিজারেটর বায়িং গাইড

ড্রয়িং রুম বা ডাইনিং রুমের চাইতে রান্নাঘরে রেফ্রিজারেটর থাকলে রান্না করতে সুবিধা হয়। কিন্তু রান্নাঘরে রেফ্রিজারেটর সেট করতে চাইলে কিছু জিনিস মাথায় রাখা উচিত। যেমন, রান্নাঘরের সাইজ, চলাচলের রাস্তা, কিভাবে ফ্রিজ সেট করলে কাজ করতে সুবিধা হবে ইত্যাদি। আপনি যদি ভাবেন যে রান্নাঘরের জন্য কোন রেফ্রিজারেটর কিনবেন, তাহলে পড়ুন এই বায়িং গাইডটি।

সাইজ:

রেফ্রিজারেটর কেনার ক্ষেত্রে প্রথমেই আসে সাইজের কথা। রান্নাঘরের সাইজ এবং নিজেদের প্রয়োজন বুঝে রেফ্রিজারেটর কেনা উচিত। ফ্রিজের ধারণক্ষমতা পরিমাপ করা হয় লিটারে। এখানে সদস্য সংখ্যা অনুযায়ী ফ্রিজের ধারণক্ষমতার একটি তালিকা দিয়ে দিলাম। এতে বুঝতে সুবিধা হবে আপনার ঠিক কোন সাইজের ফ্রিজ কিনতে হবে।
• ১ জন সদস্যের জন্য – ৫০ থেকে ৮০ লিটারের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন
• ৩ জন সদস্যের পরিবারের জন্য – ১৫০ থেকে ২৫০ লিটারের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন
• ৫ জন সদস্যের পরিবারের জন্য – ২৫০ থেকে ৩৩০ লিটারের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন
• ৬ জন বা ততোধিক সদস্যের পরিবারের জন্য – ৩৫০ থেকে ৪৯০ লিটারের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন

দরজার স্টাইল:

সাইজের পরে আসে স্টাইলের কথা। দরজার ধরণ বুঝে আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে কোন স্টাইলের ফ্রিজ আপনার দরকার৷

সিঙ্গেল ডোর:

এই ধরণের রেফ্রিজারেটরে নরমাল এবং ডিপ দুই অংশে একটি করে দরজা থাকে। বেশিরভাগ ঘরে সিঙ্গেল ডোর রেফ্রিজারেটর দেখা যায়। এগুলো সাইজে ছোট হয় আর দামও কম থাকে। এই ফ্রিজে তাকের সংখ্যাও কম থাকে। সিঙ্গেল ডোর ফ্রিজের দাম পড়বে আনুমানিক ১৫,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকার মধ্যে।

ডাবল ডোর:

ডাবল ডোর রেফ্রিজারেটরে উভয় অংশে দুইটি করে দরজা থাকে, ঠিক যেন ঘরের জানালার মতো৷ এই ধরণের ফ্রিজ সিঙ্গেল ডোর ফ্রিজের চাইতে বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে। আর এতে স্পেসও থাকে বেশি। এই ফ্রিজে ফ্রস্ট-ফ্রি টেকনোলজি থাকে। অর্থাৎ কোন অংশে বরফ জমে না, প্রতিটি অংশ সমানভাবে ঠান্ডা থাকে। এগুলোর দাম পড়বে ২৫,০০০ থেকে ৪৫,০০০ টাকার মধ্যে।

সাইড-বাই-সাইড রেফ্রিজারেটর:

এই ধরণের ফ্রিজের দরজা বেশি বড় হয় না। সাধারণত রেফ্রিজারেটরের নরমাল ফ্রিজ বড় থাকে আর ডিপ ফ্রিজ ছোট থাকে। কিন্তু সাইড-বাই-সাইডে উভয় অংশ এক সমান থাকে। একপাশে থাকে নরমাল ফ্রিজ আরেকপাশে থাকে ডিপ ফ্রিজ। পাশাপাশি থাকার কারণে খাবার আনানেওয়া করতে বেশি ঝুঁকতে হয় না। এগুলোতে স্পেস অনেক থাকেতাই দামও অনেক বেশি, আনুমানিক ৬৫,০০০ থেকে ২,৫০,০০০ টাকার মতো। এই ফ্রিজগুলো অনেক চওড়া হয় তাই বড় রান্নাঘর ছাড়া ব্যবহার সম্ভবহয় না।

ফ্রেঞ্চ ডোর:

এই ধরণের রেফ্রিজারেটরে নরমাল ফ্রিজ ও ডিপ ফ্রিজ উভয়তেই দুইটি দরজা থাকে। কিন্তু নরমাল ফ্রিজে তাক থাকে এবং ডিপ ফ্রিজটা থাকে ড্রয়ার সিস্টেমে। ফ্রেঞ্চ ডোর ফ্রিজের তাকগুলো চওড়া থাকে এবং ডিপ ফ্রিজের ড্রয়ার বেশ গভীর থাকে। ফলে ফ্রোজেন খাবার সংরক্ষণ করা সহজ হয়। দামের দিক থেকে এগুলো সাইড-বাই-সাইডের সমান বা তার বেশি।

টাইপ:

টাইপের ক্ষেত্রে আপনাকে দেখতে হবে কোন টাইপের ফ্রিজ আপনার রান্নাঘরের জন্য বা ব্যবহারের জন্য বেশি উপযোগী।

টপ-ফ্রিজার ও বটম-ফ্রিজার:

টপ-ফ্রিজার বলতে বোঝায় ডিপ ফ্রিজ বা ফ্রিজার থাকবে রেফ্রিজারেটরের উপরের অংশে। আর বটম-ফ্রিজার হলে ফ্রিজার থাকবে নিচের অংশে। উভয় ক্ষেত্রেই ফ্রিজারের স্পেস বেশি থাকবে। যাদের সাধারণ খাবারের চাইতে ফ্রোজেন ফুড বেশি খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাদের জন্য টপ-ফ্রিজার বা বটম-ফ্রিজার দরকার। তবে বটম-ফ্রিজারের একটি সুবিধা হলো, নরমাল ফ্রিজটা আই-লেভেলে থাকে। নরমাল ফ্রিজে কাজ বেশি থাকলে তখন ঝুঁকে থাকতে হবে না।

কাউন্টার-ডেপথ রেফ্রিজারেটর:

এই ধরণের ফ্রিজ মূলত কিচেন কাউন্টারের উপর বিল্ট-ইন থাকে। বাড়ি বানানোর সময়েকিচেনের প্ল্যানিং অনুসারে এই ফ্রিজ ইনস্টল করার কাজ করতে হয়। স্ট্যান্ডার্ড ফ্রিজের চাইতে কাউন্টার-ডেপথ ফ্রিজের ডেপথ অনেক কম থাকে কিন্তু চওড়া বেশি থাকে। কিন্তু এগুলো আবার দামে বেশ চড়া। যেহেতু কিচেন কাউন্টারে সেট করা থাকে, সেহেতু রান্নার ফাঁকে জিনিসপত্র ফ্রিজ থেকে আনানেওয়া খুবই সহজ হয়।

মিনি ফ্রিজ:

মিনি ফ্রিজ মূলত ডরমিটরিবা ছোট অফিসের জন্য বেশি উপযোগী।কিন্তু এটি আপনি আপনার কিচেনে বিল্ট-ইন স্টাইলে ইনস্টল করতে পারেন। অথবা কিচেন কাউন্টারের এক সাইডে বসিয়ে রাখতে পারেন। এগুলো আয়তনে ছোট আর এদের ক্যাপাসিটিও কম থাকে (সর্বোচ্চ ৯০ লিটার)। ড্রিংকস বা হালকা খাবার রাখার জন্য মিনি ফ্রিজ ভালো একটি অপশন।

এনার্জি সেভিংস ফিচার:

রেফ্রিজারেটর কেনার সময়ে এর গায়ে থাকা স্টিকার বা ইউজার ম্যানুয়াল দেখে বুঝতে পারবেন এটি কতটুকু এনার্জি সাশ্রয় করতে পারবে। এনার্জি স্টার লেবেল থেকে সবচাইতে সহজভাবে বোঝা যাবে এ ব্যাপারে।

যেসব রেফ্রিজারেটরে বৈদ্যুতিক শক্তির বেশি দরকার হয় সেসব রেফ্রিজারেটরের এনার্জি স্টার লেবেলে ২টি বা ৩টি স্টার দেয়া থাকে। যদি কোন রেফ্রিজারেটরের লেবেলে ৫টি স্টার দেয়া থাকে তাহলে বুঝবেন সেটি তুলনামূলকভাবে কম বিদ্যুৎ খরচ করবে। যদিও ৫টি স্টার সম্বলিত ফ্রিজের দাম বেশিপড়বে। কিন্তু একবার কিনলে পরবর্তী ৮-১০ বছর অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের ঝামেলা থেকে বাঁচবেন।

কিছু কিছু রেফ্রিজারেটরে আবার ফলমূল, শাকসবজি ঠিক রাখার জন্য টেম্পারেচার কাস্টমাইজ করার সুবিধা থাকে। সেসব ফ্রিজে আপনি নিজের পছন্দমতো আর্দ্রতা সেট করেও বিদ্যুৎ খরচ কমাতে পারবেন।

বাড়তি ফিচার:

অত্যাধুনিক রেফ্রিজারেটরগুলোতে বেশ কিছু আধুনিক ফিচার থাকে যা বাড়তি সুবিধা যোগায়। ফ্রিজ কেনার সময়ে এই ফিচারগুলো দেখে কিনবেন যদি আপনার বাজেটের মধ্যে থাকে।

স্মার্ট রেফ্রিজারেটর:

স্মার্টরেফ্রিজারেটরে টাচস্ক্রিন, ওয়াইফাই কানেকশন, ক্লাইমেট কন্ট্রোল, শপিং লিস্ট, মেমো ইত্যাদি ফিচার থাকে। আপনার খাবার ভালো রাখার পাশাপাশি এটি আপনার রোজকার জীবনকেও আনন্দময় করে তুলবে।

ডুয়াল ডোর সিস্টেম:

কিছু রেফ্রিজারেটরে ডুয়াল ডোর সিস্টেম থাকে। অর্থাৎ মেইন দরজার উপরে ছোট আরেকটি কম্পার্টমেন্টসহ দরজা থাকেযেখানে আপনি ড্রিংকস রাখতে পারবেন। ডুয়াল ডোরের সুবিধা হলো, ড্রিংকস রাখার জন্য আসল কম্পার্টমেন্টে যাওয়ার দরকার পড়ছে না।বাইরের কম্পার্টমেন্টেই কাজ হয়ে যাচ্ছে। এতে ভিতরের জায়গা সেভ হয়। আর পুরো ফ্রিজ খোলার দরকার পড়ছে না।

আইস অ্যান্ড ওয়াটার ডিসপেনসার:

আইস অ্যান্ড ওয়াটার ডিসপেনসার এমন দুইটি ফিচার যা থেকে চটজলদি বরফ ও বিশুদ্ধ পানি পাওয়া সহজ হবে। চেষ্টা করুন এমন একটি রেফ্রিজারেটর কেনার যেখানে এই ফিচারদুইটি আছে। কিছু রেফ্রিজারেটরে ডুয়াল আইস মেকার থাকে।এটি থেকে বরফ খন্ড ও বরফ কুচি একইসাথে পাওয়া যাবে। আইস ডিসপেনসার সাধারণত রেফ্রিজারেটরের দরজার বাইরের দিকটায় থাকে। কোন কোন মডেলে ডিসপেনসারের সাথে ছোট পাত্র থাকে। এতে প্রয়োজনে বরফের পাত্রটি বাইরে বের করে নিয়ে আসা যায়৷

ডুয়াল কুলিং সিস্টেম:

ডুয়াল কুলিং সিস্টেম ফ্রিজার অংশের জন্য বিশেষভাবে তৈরি, যা নরমাল ফ্রিজের তাপমাত্রাকে ডিপ ফ্রিজ বা ফ্রিজারের সাথে মিশতে দেয় না। এই ফিচারের কারণে ফ্রিজারের প্রতিটি কম্পার্টমেন্টের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা ঠিক থাকে। আপনার ক্রয়কৃত রেফ্রিজারেটরে যদি এই সুবিধাটা থাকে, তাহলে ফ্রিজে থাকা ফল ও সবজির গন্ধ বরফের সাথে গিয়ে মিশবে না।

ড্রিংকস চেম্বার:

এমনিতে আমরা ফ্রিজের ভিতরের পকেটে পানীয়ের বোতলগুলো রাখি। কিন্তু সবসময় সেই পকেট বা তাকগুলোতে পানীয়ের বোতলগুলো রাখার জায়গা হয় না। এমন অবস্থায় দরকার পানীয়ের জন্য বিশেষ ড্রয়ার বা চেম্বার। তাতে অল্প জায়গায় অনেকগুলো পানীয়ের বোতল রাখা যায়৷ যদি ড্রিংকস রাখার চেম্বার দরজার বাইরে হয় তাহলে তো কথাই নেই।ফ্রিজ খুলতে হবে না।

Article Tags:
Article Categories:
Food-kitchen-insights

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *