skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

এলাচ এভাবে চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় করতে পারেন চাইলে!

এলাচ চাষ

কৃষকদের জন্য অর্থকরী ফসল হিসেবে অন্যতম হল এলাচ। যা চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় কড়া যায়। বাজারে এর খুব ভালো দাম পাওয়া যায়। এলাচ প্রধানত ভারতে চাষ করা হয়। সাধারণত বাজারে এলাচের দাম প্রতি কেজি ১১০০ থেকে ২০০ হাজার টাকা। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী এর দাম ওঠানামা করে। এককালীন এলাচ চাষ করে সহজেই ২ থেকে ৩ লাখ টাকা লাভ করা যায়। তবে সঠিক ভাবে চাষ করলে দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে ফলন পাবেন। এলাচ হতে সময় লাগে বলেই এর এত দাম। যদি এটি কেউ করতে চান তাহলে আজকের লেখা আপনাকে সম্পূর্ণ ভাবে সাহায্য করবে। চলুন কথা না বাড়িয়ে দেখে নেওয়া যাক এলাচ চাষ করার সঠিক পদ্ধতি।

ক. জমিতে এলাচ গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়ঃ

এলাচ গাছের উচ্চতা এক ফুট না হলে জমিতে রোপণ করতে হবে। বর্ষাকালে জমিতে এলাচ গাছ লাগাতে হবে। যাইহোক, ভারতে এটি জুলাই মাসে রোপণ করা যেতে পারে। কারণ এই সময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে সেচের প্রয়োজন কম। মনে রাখবেন এলাচ গাছ সবসময় ছায়ায় লাগাতে হবে। অত্যধিক সূর্যালোক এবং তাপের কারণে এর বৃদ্ধি হ্রাস পায়। গর্তে বা বেডে এলাচ গাছ লাগানোর সময় একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের দূরত্ব ৬০ সেন্টিমিটার রাখতে হবে।

খ. এলাচ চাষের জন্য মাটি ও জলবায়ুঃ

লাল দোআঁশ মাটি এলাচ চাষের জন্য ভালো বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া সার ব্যবহার করে অন্য ধরনের মাটিতে সহজেই চাষ করা যায়। এর চাষের জন্য, জমির pH মান ৫ থেকে ৭.৫ হতে হবে। অন্যদিকে, গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলবায়ু এলাচ চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো বলে বিবেচিত হয়। এলাচ চাষের জন্য ১০° থেকে ৩৫°C তাপমাত্রা প্রয়োজন।

গ. কিভাবে এলাচ চাষ করবেনঃ

এলাচ চাষের আগে এর জন্য ক্ষেত প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এ জন্য প্রথমে ক্ষেত লাঙ্গল করে সমতল করতে হবে। যাতে বর্ষাকালে মাঠ থেকে বৃষ্টির জল বের না হয়। এলাচ গাছ লাগানোর আগে রোটাভেটর দিয়ে একবার ক্ষেত চাষ করতে হবে।

১. এলাচের চারা রোপণ করাঃ

ক্ষেতে এলাচের চারা লাগাতে চাইলে এর জন্য এক থেকে দুই ফুট দূরত্বে বেড তৈরি করতে হবে। একই সাথে গর্তে এলাচ গাছ লাগাতে ২ থেকে ৩ ফুট দূরত্ব রেখে চারা রোপণ করতে হবে। খনন করা গর্তে গোবর সার ভালো পরিমাণে মিশিয়ে দিতে হবে।

২. কিভাবে নার্সারিতে এলাচ গাছ চাষ করা যায়ঃ

জমিতে এলাচের চারা রোপণের আগে তা নার্সারিতে প্রস্তুত করা হয়। এ জন্য নার্সারিতে এলাচের বীজ বপন করতে হবে ১০ সেন্টিমিটার দূরত্বে। এ জন্য এক হেক্টরে একটি নার্সারী তৈরির জন্য এক কেজি এলাচ বীজের পরিমাণই যথেষ্ট। এলাচের বীজ অঙ্কুরিত হতে শুরু করলে, আপনি শুকনো ঘাস দিয়ে স্প্রাউটগুলিকে ঢেকে দিন।

৩. এলাচ চাষে সেচ ব্যবস্থাঃ

বর্ষাকালে জমিতে চারা রোপণ করা হলে তাতে কম সেচের প্রয়োজন হয়। বৃষ্টিপাত কম হলে রোপণের পরপরই এলাচ গাছে প্রথম সেচ দিতে হবে। এর পর প্রয়োজন অনুযায়ী সেচ দিতে হবে। একই সঙ্গে গ্রীষ্ম মৌসুমে পর্যাপ্ত সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। সেচের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন প্রয়োজনের তুলনায় ক্ষেত বেশি ভরে না যায় জলে। তাই জমিতে জল নিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যদিকে, জমিতে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর সেচ অব্যাহত রাখতে হবে।

৪. এলাচ চাষে সারের ব্যবহারঃ

জমিতে এলাচ গাছ লাগানোর আগে প্রতিটি গাছকে ১০ কেজি পুরানো গোবর সার এবং এক কেজি ভার্মি কম্পোস্ট গর্তে রাখতে হবে। এ ছাড়া এই গাছে নিম পিঠা ও মুরগির সার দিতে হবে দুই থেকে তিনবার বছরে। যার কারণে গাছের ভালো বিকাশ ঘটে।

৫. আগাছা নিয়ন্ত্রণের জন্য এই ব্যবস্থা নিনঃ

অন্যান্য ফসলের মতো এলাচ চাষের সময় জমিতে আগাছা জন্মায়। এটি সময়ে সময়ে অপসারণ করা উচিত। এ জন্য সময়ে সময়ে ক্ষেতে আগাছা তুলে ফেলতে হবে। ক্ষেতের আগাছা তুলে দিলে ক্ষেতে আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং এর ফলে এলাচ গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

৬. এলাচ চাষে পোকামাকড় ও রোগ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাঃ

প্রসঙ্গত, এলাচ ফসলে পোকামাকড় ও রোগের প্রাদুর্ভাব কম। তবে অনেক সময় এতে গুঁড়ি ও ছত্রাকজনিত রোগের লক্ষণ দেখা যায়। এ রোগে গাছের পাতা কুঁচকে যায় এবং মরে যেতে থাকে। এ রোগ নিয়ন্ত্রণে নার্সারিতে বপনের আগে এলাচের বীজ ট্রাইকোডার্মা নামক ওষুধ দিয়ে শোধন করতে হবে। কোনো গাছে রোগ দেখা দিলে তা অবিলম্বে ক্ষেত থেকে তুলে ফেলতে হবে যাতে অন্য গাছে রোগ না ছড়ায়।

৭. এলাচ চাষে সাদা মাছি রোগের প্রাদুর্ভাব এবং এর নিয়ন্ত্রণঃ

এলাচের মধ্যেও সাদা মাছি রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। এ রোগে আক্রান্ত হলে এলাচ গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। সাদা মাছি এলাচ গাছের পাতায় বেশি আক্রমণ করে এবং পাতার রস চুষে গাছ ধ্বংস করে। সাদা মাছি রোগ প্রতিরোধের জন্য কস্টিক সোডা ও নিমের জল ভালোভাবে মিশিয়ে গাছের পাতায় স্প্রে করতে হবে।

৮. কখন এলাচ সংগ্রহ করবেনঃ

এলাচ গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করা বীজ পুরোপুরি পাকার একটু আগে করতে হবে। বেশি পেকে গেলে এলাচ তার গুণাগুণ হারিয়ে ফেলে। বীজ তোলার পর ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। এর পরে, বীজগুলিকে ভালভাবে শুকিয়ে নিন যাতে অতিরিক্ত আর্দ্রতা থাকলে তা সরানো যায়। বীজ সম্পূর্ণ শুকিয়ে প্রস্তুত হয়ে গেলে তা বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যান।

ঘ. এলাচের ফলন কতঃ

উন্নত প্রযুক্তি এবং সঠিক চাষাবাদের মাধ্যমে এলাচের ফলন হেক্টর প্রতি ১৩৫ থেকে ১৫০ কেজি এলাচ ভালোভাবে শুকানোর পর পাওয়া যায়।

ঙ. এলাচের দামঃ

বাজারে এলাচের দাম প্রতি কেজি ১১০০ থেকে ২০০ হাজার টাকা। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী এর দাম ওঠানামা করে।

Article Tags:
Article Categories:
Food-kitchen-insights

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *