কারি পাতা একটি ঔষধি গাছ যা দক্ষিণ ভারতীয় রান্নায় স্বাদ বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। এর পাতা শুধুমাত্র খাবারে ভিন্ন স্বাদ এবং গন্ধ যোগায় না, আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারও দেয়। ঔষধি গুণের কারণে কারি পাতা এখন বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় চুল এবং ডিটক্স ওয়াটার। কিন্তু আপনি কি জানেন যে খালি পেটে কারি পাতা চিবিয়ে খেলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। এখানে আমরা এমন ৪ টি কারণ খুঁজে পেয়েছি (খালি পেটে কারি পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা), যা দেখায় যে কেন আপনার খালি পেটে কারি পাতা খাওয়া উচিত।
প্রতিদিন খালি পেটে এক গ্লাস জলের সাথে ৭ থেকে ৮টি কাঁচা কারি পাতা চিবিয়ে খেলে স্বাস্থ্যের অনেক উপকার পাওয়া যায়। আসুন এই সমস্ত উপকারিতা এবং কারি পাতা খাওয়ার সঠিক উপায় সম্পর্কে আজ জেনে নেওয়া যাক।
ক. কারি পাতা সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারীঃ
কানপুরের পুষ্টি ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং পুষ্টি বিশেষজ্ঞ নমন কালরা বলেছেন, কারি পাতা খাওয়া আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এর সেবন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনে এবং চুলের বৃদ্ধিতেও সহায়ক। ভালো উপকারের জন্য আপনি এটি সকালে খালি পেটে খেতে পারেন।
১০০ গ্রাম কারি পাতায় উপস্থিত পুষ্টি উপাদানঃ
- প্রোটিন 6 গ্রাম 12 গ্রাম
- চর্বি 18 গ্রাম 64 গ্রাম
- আয়রন .93 mg 12 mg
- ভিটামিন সি 4 মিলিগ্রাম 4 মি.গ্রা
- ক্যালসিয়াম 830 mg 2040 mg
খ. সকালে খালি পেটে কারি পাতা চিবানোর উপকারিতাঃ
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ
কারি পাতা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এটি শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে এবং রোগ থেকে পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে এবং রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। প্রতিটি ব্যক্তির জন্য এটি প্রতিদিন খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সকালে খালি পেটে ৭ থেকে ৮টি পাতা চিবিয়ে এক গ্লাস জল পান করা উচিত।
২. চোখের জন্য উপকারীঃ
পুষ্টিবিদদের মতে, কারি পাতায় পুষ্টিগুণ ভালো পরিমাণে থাকে। এতে উপস্থিত ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। যার কারণে অনেক দূর দেখার ক্ষমতাও বেড়ে যায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে চোখের দুর্বলতাও প্রতিরোধ করে কারি পাতা। যদি আপনার দৃষ্টিশক্তি কমে যায়, তাহলে খাবারের পর কারি পাতা খাওয়া উচিত। সকালে খালি পেটে মধুর সাথেও খেতে পারেন।
৩. সকালের অসুস্থতা এবং বমি বমি ভাব থেকে ত্রাণ প্রদান করুনঃ
কারি পাতায় উপস্থিত কার্মিনেটিভ বৈশিষ্ট্য গ্যাস এবং ফোলাভাব নিয়ন্ত্রণে সহায়ক প্রমাণিত হতে পারে। নমন বলে যে এটি মর্নিং সিকনেসের সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়। আপনি যদি বমি বমি ভাব অনুভব করেন তবে এটি খালি পেটে চিবিয়ে খেলে উপশম পাওয়া যায়। সকালে এটি খাওয়া সকালের অসুস্থতা এবং বমি বমি ভাব দূর করতে কার্যকর।
৪. ওজন কমাতে সহায়কঃ
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে কারি পাতায় উপস্থিত উপাদানগুলিতে অ্যান্টিবেসিটি এবং লিপিড-হ্রাসকারী প্রভাব রয়েছে যা স্থূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। শুধু তাই নয়, কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে। এই পদ্ধতি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। সকালে খালি পেটে ৫ থেকে ৬টি পাতা চিবিয়ে কুসুম গরম জল পান করলে উপকার পাওয়া যাবে।