skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

খেজুর পাউডারের উপকারিতা ও ঘরে এটি বানানোর কৌশল।

খেজুর পাউডার

রোগবালাই দমনে খেজুরের পাউডার শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। খেজুর পাউডার হচ্ছে এক ধরণের প্রাকৃতিক চিনি যা খেজুর বা এর বীজ শুকিয়ে গুঁড়ো করে বানানো হয়। স্বাদ ও গন্ধে খেজুর পাউডার ব্রাউন সুগারের কাছাকাছি বলে এটিকে খেজুরের চিনিও বলা যায়।

আজওয়া খেজুর দিয়ে চিনিঃ

বিভিন্ন ধরণের খেজুরের মধ্যে শুধুমাত্র আজওয়া খেজুর দিয়ে চিনি বানানো হয়ে থাকে৷ কি নেই আজওয়া খেজুর পাউডারে? রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-টিউমার উপাদান, বিটা ক্যারোটিন, লুটিন, এবং জিয়াক্সানথিন। এছাড়াও এতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, নিয়াসিন, এবং পাইরিডক্সিন আছে পরিমিত পরিমাণে।

আজওয়া খেজুর

আপনি যদি সুস্থ সবল থাকতে চান, নিয়মিত খান খেজুর পাউডার। এই খাবার দশ থেকে বারো রকমের রোগ দমন করতে সক্ষম। জেনে নিন খেজুর পাউডারের উপকারিতা এবং এটি সেবনের নিয়ম এই লেখা থেকে।

খেজুর পাউডারের উপকারিতাঃ

১. হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ কমায়ঃ

খেজুর পাউডার রক্তে কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ কমিয়ে আনে। রক্তে কোলেস্টেরলের আধিক্যের কারণে হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, এবং ধমনীতে ব্লক ধরা পড়ে। খেজুর সম্পূর্ণ কোলেস্টেরল মুক্ত এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ একটি খাবার।

প্রতিদিনের ডায়েটে খেজুর পাউডার অন্তর্ভুক্ত করলে হৃদযন্ত্রের বহু জটিল রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। যেসব রোগীদের বাইপাস সার্জারি বা এনজিওপ্লাস্টির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাদের জন্য খেজুর পাউডার খাওয়া অত্যাবশ্যক। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে খেজুর পাউডার খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়।

২. পেটের সমস্যা দূর করেঃ

খেজুর পাউডার পেটের যাবতীয় রোগবালাই দূর করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে খেজুর পাউডারের জুড়ি নেই। এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্রানজিট অ্যাক্টিভিটি ত্বরান্বিত করে। ফলে মলত্যাগে কষ্ট অনুভূত হয় না। তাছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে শরীরে মিনারেলের যে অসামঞ্জস্যতা হয় সেটিও সমাধান করে খেজুর পাউডার। খেজুরের ফাইবার অন্ত্রের ক্যান্সার, তলপেটের ক্যান্সার সহ অন্যান্য যাবতীয় রোগ প্রতিরোধ করে।

৩. আয়রনের ঘাটতি পূরণ করেঃ

বহুদিন ধরে আয়রন স্বল্পতায় ভুগছেন যারা তারা খেজুর পাউডার খেলে উপকার পাবেন। শরীরে আয়রনের ঘাটতি বা রক্তশূন্যতা হলে অত্যধিক দুর্বলতা, অল্পতেই হাঁপিয়ে ওঠা, বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা, নখ ভেঙে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি হয়। খেজুর বা খেজুরের পাউডার আয়রন সমৃদ্ধ একটি খাবার। নিয়মিত খেজুর পাউডার গ্রহণে আয়রনের ঘাটতি দূর হয় এবং রক্তশূন্যতা সেরে যায়। পাশাপাশি, খেজুর পাউডার রক্ত বিশুদ্ধ করে।

৪. গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের জন্য সহায়কঃ

সন্তান জন্মদানের পূর্ববর্তী অবস্থায় অর্থাৎ গর্ভাবস্থায় খেজুর পাউডার খেলে মা ও শিশুর শরীরে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ে। প্রসূতি মায়েদের শরীরে এই পাউডার দুধের উৎপাদন বাড়ায়। আবার সন্তান জন্মদানের সময়ে প্রসব বেদনা কমাতেও সাহায্য করে খেজুর।

৫. ত্বক সুন্দর করেঃ

খেজুর পাউডারে বিদ্যমান ভিটামিন সি ও ডি ত্বকের ইলাস্টিসিটি, মসৃণতা, এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এছাড়াও এটি ত্বকের অন্যান্য সমস্যাও দূর করে। ত্বককে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে আটকায় এবং ত্বকে মেলানিন জমতে দেয় না।

৬. হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করেঃ

খেজুরে প্রচুর পরিমাণে কপার, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম, এবং ম্যাঙ্গানিজ আছে। এই উপাদানগুলো হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও এর ক্যালসিয়াম হাড় সুগঠিত করতে সাহায্য করে।

৭. মস্তিষ্কের রোগ সারায়ঃ

মস্তিষ্কে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং ইনফ্লেমেশন কমায় খেজুর। প্রতিদিন খেজুর পাউডার খেলে নিউরোডিজেনারেটিভ ডিজিজের আশঙ্কা কমে। বৃদ্ধ বয়সে কগনিটিভ পারফরমেন্সের উন্নতি ঘটায় খেজুর পাউডার। এছাড়াও মাথাব্যথা, উন্মাদনা সহ নানা ধরণের মানসিক রোগ নির্মূল করে খেজুর পাউডার।

৮. এনার্জি বাড়ায়ঃ

খেজুর পাউডারে আছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট যা এনার্জি বাড়ায়। এতে আছে সুক্রোজ, ফ্রুক্টোজ, এবং গ্লুকোজের মতো ন্যাচারাল সুগার যা সারাদিনের জন্য শরীরকে চাঙ্গা রাখে৷

৯. নার্ভাস সিস্টেম উন্নত করেঃ

খেজুর পাউডারে পটাশিয়ামের আধিক্য এবং সামান্য পরিমাণে সোডিয়াম থাকায় এটি নার্ভাস সিস্টেম উন্নত করে। ফলে মাসল কন্ট্র্যাকশন, হার্টবিট, রিফ্লেক্স, এবং অন্যান্য বডি ফাংশন ঠিক থাকে।

১০. ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ

ওজন কমাতে সাহায্য করে খেজুর পাউডার। কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ওজন কমে শরীর হবে ঝরঝরে। প্রতিদিন সকালে উষ্ণ জলে খেজুর পাউডার মিশিয়ে পান করলে মিলবে সুফল।

১১. চোখের সমস্যা দূর করেঃ

দুর্বল দৃষ্টিশক্তি, রাতকানা রোগ, এবং অন্যান্য চোখের রোগ সারায় খেজুর পাউডার।

ঘরে খেজুর পাউডার কিভাবে বানাবেন এবং খাবেনঃ

  • কয়েকটি আজওয়া খেজুর থেকে দানা বের করে ১৫ দিন জলে ভিজিয়ে রাখুন।
  • ১৫ দিন পরে ভেজা খেজুর তুলে ফেলুন জল থেকে। দেখবেন বিচি গুলো বেশ নরম হয়ে গেছে। এবার এগুলো শুকিয়ে নিন।
  • গ্রাইন্ডারে দানা গুলো ঢেলে দিয়ে গ্রাইন্ড করুন। যখন দেখবেন বাদামি রঙের মসৃণ পাউডার তৈরি হয়ে গেছে তখন গ্রাইন্ডার অফ করে দিন। মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত কিন্তু মেশিন অফ করবেন না।
  • পাউডার বের করে এয়ার টাইট জারে সংরক্ষণ করুন।
  • প্রতিদিন সকালে ১ চা চামচ খেজুর পাউডার খাবেন। খালি পেটে খেলেই বেশি ভালো হয়। জলে বা দুধে গুলে খেতে হবে।
Article Tags:
·
Article Categories:
Lifestyle

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *