ভারতীয় রান্নার স্বাদ একবার হলেও চাখতে দূর দূরাত্ব থেকে মানুষ ছুটে আসে। এর সবটাই আমাদের রুচিবোধ ও রান্নার প্রতি ভালোবাসা। তবে ভেজালের ভিড়ে রান্নার জন্য খাঁটি মসলা পাওয়া এখন খুবই কঠিন ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। তাই আজ বলছি এমন কিছু উপায় যাতে করে আপনি রান্নার জন্য মসলা ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন।
রান্নায় গরম মসলার ব্যবহার আমাদের ভারতবাসীদের বহু প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে। এর যে কত বাহারি নাম তা বলে শেষ করা যাবে না। যে সব নিয়ে অন্য একদিন লিখবো তবে আজ ঘরে খাঁটি গরম মসলা বানানোর পদ্ধতি বলে দিলাম।
গরম মসলা প্রস্তুত করতে যা যা লাগবেঃ
- ছোট গ্রীন এলাচ – ২ টেবিল চামচ
- বড় এলাচ – ৬/৭টি
- দারুচিনি – পরিমাণমত কয়েক টুকরা
- জায়ফল – ছোট/মাঝারি সাইজের ১টি
- জয়ত্রী – ৪/৫ টুকরা
- লবঙ্গ – আধা টেবিল চামচ
- গোটা তেজপাতা – ৪/৫টি
- সাদা গোলমরিচ – ১ চা চামচ
- স্টার এনিস – ৩টি
- সাদা মৌরি – ২ টেবিল চামচ
- কাঁচা ধনিয়া গুঁড়ো – ২ টেবিল চামচ
- সাদা জিরা – ২ টেবিল চামচ
- শাহী জিরা – ১ টেবিল চামচ
- কালো গোল মরিচ – ১/২ চা চামচ
- শুকনা লঙ্কা গুঁড়ো – ২ চা চামচ
কিভাবে বানাবেনঃ
১. মসলা তৈরির জন্য সর্বপ্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো এতে ব্যবহৃত সকল উপকরণগুলো একসাথে করে মিশিয়ে নিতে হবে।
২. এরপর সেগুলো একটি বড় ছড়ানো ও চ্যাপ্টা পাত্রে নিয়ে কড়া রোদে ৪/৫ দিন ভালো ভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। তবে যদি রোদে দেওয়ার মতো কোন ব্যবস্থা না থাকে তাহলে আপনি চাইলে গ্যাসে বা উনুনে দিয়ে অল্প আঁচে ভেজে নিতে পারেন। আবার গ্যাসের নিচে রেখেও মচমচে করে নিতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে সময় কিছুটা বেশি লাগতে পারে।
৩. মচমচে হয়ে গেলে ব্লেন্ডার বা গ্রাইন্ডার মেশিনে গুঁড়ো করে নিন এবং ভালো করে মিহি গুঁড়ো করে নিন কেননা দানা দানা থাকলে সেই মসলা তরকারিতে দেওয়া হলে তা খেতে বেশি ভালো লাগে না।
৪. গুঁড়ো করা হয়ে গেলে একটি পরিষ্কার শুকনো কন্টেইনার বা কোন এয়ার টাইট বয়াম নিতে হবে। যতবার মসলা বের করা হবে ক্যাপটি ভালোভাবে মুখ বন্ধ করে দিতে হবে। কারন বাতাস ঢুকলে মসলা খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৫. ব্যাস! তৈরি হয়ে গেল আপনার স্পেশাল গরম মসলা। যা বাইরের ভেজাল গরম মসলার তুলনায় অনেক বেশি স্বাস্থ্য সম্মত। এরকম ভাবে বিরিয়ানি মসলা বানিয়ে ফেলতে পারেন ঘরে। তবে তার উপকরণে সামান্য তফাৎ আছে।
বিশেষ টিপসঃ
- গরম মসলা তৈরি করতে যে শুকনো লঙ্কা ব্যবহার করা যাবে তা মসলায় এক চমৎকার রঙ ধারণ করবে। তবে কেউ যদি ঝাল কম খেয়ে থাকেন তাহলে এর পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দেবেন। তবে না দিলেও কোন ক্ষতি নেই।
- লবঙ্গ ও গোলমরিচ এই দুইটি উপকরনও কিছুটা ঝাল হয় তাই এর পরিমাণও কম বেশি করতে পারেন যদি প্রয়োজন হয়। কারন এগুলো বেশি পড়ে গেলে মসলার স্বাদ ঝাঁঝালো হয়ে যাবে।
বিশেষ সর্তকতাঃ
- ভাজতে চাইলে সাবধানে গরম করবেন যেন পুড়ে না যায়। কড়াইতে দেওয়ার সময় ভারি মসলা আলাদা করে দেবেন।
- এই মসলার গুঁড়ো স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখলেই ১ বছর পর্যন্ত ভালো থাকবে। তবে মাঝে মাঝে রোদে দিতে ভুলবেন না।
- সেই সাথে আরো একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে। তা হলো গ্যাস বা উনুন থেকে নামিয়ে নিয়ে সাথে সাথেই তা ব্লেন্ডারে দেবেন না। এতে করে ব্লেন্ডার নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।
আজকের এই লেখা দেখে যারা ঘরে গরম মসলা বানাবেন তারা কিন্তু অবশ্যই আমাদের জানাবেন যে, খেয়ে কেমন লাগলো। আপনাদের দেওয়া ফিডব্যাক আমাদের লেখার ক্ষেত্রে সত্যি সাহায্য করে। আরও লিখতে উৎসাহ যোগায়। তাই লেখা পড়ে কমেন্ট করতে ভুলবেন না কিন্তু!
V nice
Thank you 🙂
আমি ৫ কেজি মসলা বানাতে চায় কতটা
কি পরিমান দিব একটু বলবেন
জিরা, মৌরি, ধনে মিশ্রণ দিয়ে বানাতে
চায়…
আগে প্রথমবারেই সঠিক অনুপাতে পাবেন না এতটা যেহেতু মসলা। আপনি প্রথমে এখানে যা বলা আছে সেই অনুযায়ী বানান। একবার বানালে আন্দাজ বুঝে যাবেন ৫ কিলোর জন্য।