skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

কাঁচা ছোলা জলে ডোবানো

ভিটামিন, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ট্রিপটোফেন, মলিবডেনাম, ম্যাঙ্গানিজসহ আরো নানা উপাদানে ভরপুর ছোলা সুস্বাস্থ্যের নিয়ামক। কেউ ছোলা রান্না করে খেতে ভালোবাসেন, কেউ সেদ্ধ করে, বা কেউ ছোলা কাঁচা অবস্থায় খেতে পছন্দ করেন। সহজলভ্য এই খাবারটি তেল-মশলা ছাড়া কাঁচা অবস্থায় সারাবছর খাওয়া যেতে পারে। কাঁচা ছোলার যে গুণ, তা সেদ্ধ বা রান্না করার ছোলার চাইতে বেশী। আজকের আর্টিকেলে থাকছে কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।

ক. কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়মঃ

১. সকালে খালি পেটে খাওয়াঃ

 কাঁচা ছোলার খাওয়ার সঠিক নিয়ম হচ্ছে সকালে খালি পেটে খাওয়া। আগের রাতে এক মুঠো বা ২৫-৩০ গ্রাম পরিমাণ ছোলা ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার জলে ভিজিয়ে রাখবেন। সকালে সেই ছোলা খাবেন। এতে সারাদিনের জন্য এনার্জি পাবেন। শুধু ছোলা খেতে বেশী ভালো না লাগলে হালকা বিট নুন, গুড়, অথবা চিনি মিশিয়ে খেতে পারেন।

২. ভেজানো ছোলার সাথে কাঁচা আদাঃ

এছাড়াও কাঁচা, ভেজানো ছোলার সাথে কাঁচা আদা বা ভিনেগার মিশিয়ে খেতে পারেন। কাঁচা ছোলা ও কাঁচা আদার কম্বিনেশন আপনার দেহে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিকের যোগান দিবে। আর যদি ভেজানো ছোলার সাথে সামান্য ভিনেগার মিশিয়ে খান তাহলে সেটা দেহে কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করবে। তবে কৃমি ধ্বংসের জন্য খালি পেটে ছোলা খেতে হবে৷

৩. জলসহ ছোলা খাওয়াঃ

শুধু ছোলা জল ছেঁকে খাওয়ার চাইতে জলসহ ছোলা খাওয়া ভালো। কারণ জলে ছোলার পুষ্টিগুণ কিছুটা মিশে যায়। সেই জল ফেলে দিলে ঐ পুষ্টি থেকে দেহ বঞ্চিত হয়। সবসময় চেষ্টা করবেন কমপক্ষে ৬ ঘন্টা ছোলা ভিজিয়ে রাখার।

৪. ভেজানো ছোলা খাওয়ার সময়ে কিছু সতর্কতাঃ

তবে ভেজানো ছোলা খাওয়ার সময়ে কিছু সতর্কতা পালন করতে হবে। যদি আপনি খালি পেটে কাঁচা ছোলা খান, তাহলে এর পরে আচার খাবেন না। মিষ্টি আচার হলেও না। আচারে ভিনেগার দেয়া থাকে। কাঁচা ছোলার পরে আচার খেলে আচারের ভিনেগার দেহে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করবে। সেই সাথে হতে পারে গলা ও বুকে জ্বালা, অম্বলের সমস্যা, এমনকি হার্ট অ্যাটাকও।

৫. ছোলা-ভিনেগার খেয়ে টেস্ট করতে পারেনঃ

এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে কাঁচা ছোলার সাথে ভিনেগার মিশিয়ে খেলে একই সমস্যা হবে কিনা? এর উত্তর হচ্ছে, সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম। কারণ আচারে ভিনেগারের সাথে আরো মশলা থাকে৷ সেগুলো কাঁচা ছোলার সাথে বিক্রিয়া করে বলে সমস্যা তৈরি হয়। কিন্তু শুধু ভিনেগার ছোলার সাথে সেরকম তীব্র বিক্রিয়া করে না। তবুও যদি সন্দেহ থাকে তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শে একবার ছোলা-ভিনেগার খেয়ে টেস্ট করতে পারেন। 

আরেকটি কাজ যেটা করবেন না সেটা হলো, খালি পেটে ছোলা খাওয়ার পরে করলা খাওয়া। কাঁচা ছোলার মত করলাতেও অক্সাইড পাওয়া যায়। বরং করলাতে অক্সাইডের পরিমাণ ছোলার চাইতে অনেক বেশী। ছোলার পরে করলা খেলে অতিরিক্ত অক্সাইডের প্রভাবে শরীরে স্লো পয়জনিং হয়। পরবর্তীতে তা বড় অসুখের সৃষ্টি করে।

খ. কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতাঃ

  1. রান্না করা ছোলার চাইতে কাঁচা ছোলায় ভিটামিন বি-এর পরিমাণ বেশী থাকে। যা মস্তিষ্কের সমস্যা, হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা, এবং বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধ করে।
  2. ভেজানো ছোলায় বিদ্যমান অধিক ভিটামিন বি মেরুদন্ডের ব্যথা ও স্নায়ুর দুর্বলতা কমায়৷
  3. কাঁচা ছোলায় ক্যালরির পরিমাণ মাঝারি থাকে, যা দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীরে ক্যালরির চাহিদা পূরণ করে। আবার এর ফাইবার ও উচ্চ মাত্রার প্রোটিন পেটে অনেকক্ষণ থাকে। তাই ঘন ঘন খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
  4. ছোলার শর্করায় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকায় তা ডায়বেটিক রোগীদের জন্য ভালো। তাই ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন সকালে কাঁচা ছোলা খাওয়া যেতে পারে।
  5. কাঁচা ছোলা না ভিজিয়ে সরাসরি ভেজে খেলে শ্বাসনালীতে জমে থাকা কফ ও কাশি নিরাময় হয়।
  6. কাঁচা ছোলায় বিদ্যমান আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে। আবার এর ফাইবার অন্ত্রে জেল তৈরি করে এবং ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায়। ফলে পরিপাকতন্ত্র সুস্থ থাকে।
  7. ছোলা প্রোটিনের বেশ ভালো একটি উৎস। নিরামিষভোজীদের শরীরে মোট প্রোটিনের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ পূরণ করে কাঁচা ছোলা।
  8. রান্না বা সিদ্ধ করা ছোলার চাইতে কাঁচা ছোলার পুষ্টিগুণ বেশী থাকে বিধায় তা হৃদপিন্ড, হাড়, ত্বক, চুল, মাংসপেশী, এবং রক্তের জন্য উপকারী।
  9. কাঁচা ছোলা জ্বর ও কৃমি সারিয়ে তুলতে পারে।
  10. ছোলার রাসায়নিক উপাদান বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার ও টিউমারের বৃদ্ধি রোধে সহায়তা করে। নিয়মিত কাঁচা ছোলা খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। পাশাপাশি ছোলা দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
  11. কাঁচা ছোলায় বিদ্যমান পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় বা খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিযে দেয়। সেই সাথে দেহে রক্ত চলাচল বাড়ে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ছোলার আইসোফ্লাভন ইস্কেমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর ধমনীর কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
  12. ছোলার ফলিক অ্যাসিড গর্ভপাতের ঝুঁকি কমায়, হাইপারটেনশন রোধ করে, এবং রক্তে অ্যালার্জির পরিমাণ কমায়। তাই কমবয়সী নারীদের নিয়মিত কাঁচা ছোলা খাওয়া উচিত।
  13. পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে কাঁচা ছোলার গুরুত্ব অপরিসীম। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ছোলা খেয়েছেন তাদের যৌন ও প্রজনন ক্ষমতা যারা সকালে ছোলা খান নি তাদের চাইতে বৃদ্ধি পেয়েছে।
Article Tags:
Article Categories:
Lifestyle

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *