স্যালাড খেতে আপনি কি খুব ভালোবাসেন? একই ধরণের স্যালাড খেয়ে খেয়ে বিরক্ত লেগে গিয়েছে? তাহলে ট্রাই করুন এই নতুন ধরণের স্যালাড। আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি ৮টি সহজ স্যালাড রেসিপি। স্যালাড প্রেমীরা ইচ্ছেমত বানিয়ে ফেলতে পারেন এগুলোর যেকোন একটি। এই স্যালাডগুলোর পুষ্টিগুণ অনেক, তাই যে কেউ নিশ্চিন্তে খেতে পারবে।
১. প্রোটিন এগ স্যালাডঃ
কি কি লাগবেঃ
- ৮০ গ্রাম বাঁধাকপি কুচি
- ১০০ গ্রাম গাজরের টুকরা
- ২টি মাঝারি সাইজের সেদ্ধ আলু
- ২টি সেদ্ধ ডিম
- ৪-৫টি বেবি কর্ন
- ১ টেবিল চামচ টকদই
- আধা চা চামচ গোলমরিচের গুঁড়ো
- স্বাদ মতো নুন
কিভাবে তৈরি করবেনঃ
প্রথমে আলু ও ডিম কিউব করে কেটে নিন। কর্নের দানাগুলো আলাদা করে রাখুন। বাটিতে আলু, ডিম, কর্ণ, গাজর, এবং বাঁধাকপি নিন। এরপর এতে টকদই, গোলমরিচ, নুন দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিন। আপনি যদি প্রোটিনের অভাবজনিত সমস্যায় ভোগেন, তাহলে এই স্যালাড আপনার দেহে সেই ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম। ব্রেকফাস্ট বা স্ন্যাকস হিসেবে খেতে পারবেন এই স্যালাড।
২. ফ্রুট স্যালাডঃ
কি কি লাগবেঃ
- ২টি আপেল
- ৩০ গ্রাম তরমুজ
- ৩০ গ্রাম আনারস
- ৩০ গ্রাম আঙ্গুর
- ৫-৬টি পুদিনা পাতা
- ২ চা চামচ কনডেন্সড মিল্ক
- ১ চিমটি চাট মশলা
- ১ চিমটি বিট লবণ
- স্বাদ মতো নুন
কিভাবে তৈরি করবেনঃ
আপনি কি ডায়েটে আছেন? তাহলে বাঁধাধরা মিল চার্ট থেকে একটুখানি স্বস্তি পেতে ট্রাই করুন এই ফ্রুট স্যালাডটি। কম ক্যালরি এবং প্রচুর ফাইবার থাকায় এই স্যালাড ওজন কমাতে সাহায্য করবে। আঙ্গুর বাদে বাকি ফলগুলো কিউব করে কেটে নিন। কাটা হলে আঙ্গুর দিয়ে দিন। এরপরে কনডেন্সড মিল্ক, চাট মশলা, নুন, এবং বিট লবণ দিয়ে মাখিয়ে নিন। উপরে পুদিনা পাতা দিয়ে পরিবেশন করুন।
৩. বিটরুট স্যালাডঃ
কি কি লাগবেঃ
- ২টি বিটরুট
- ৪০ গ্রাম ডালিম
- ২টি কমলা
- ৪-৫টি চেরি টমেটো
- ২ চা চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
- ১ চা চামচ মধু
- স্বাদ মতো নুন
কিভাবে তৈরি করবেনঃ
প্রথমে বিটরুট ৫-৭ মিনিট সেদ্ধ করে নিন। এরপরে খোসা ছাড়ান। বিটরুট ও কমলা কিউব করে কেটে নিন এবং চেরি টমেটোগুলো কেটে দু’ভাগ করে নিন। একটি বাটিতে কাটা বিটরুট, কমলা, চেরি টমেটো, ডালিমের দানা, মধু, ভিনেগার, এবং নুন নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই স্যালাডের কিন্তু একটা উপকারী দিক আছে। সেটি হল, এটি ত্বককে উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় করে তুলবে।
৪. শসার স্যালাডঃ
কি কি লাগবেঃ
- ৩টি কচি শসা
- ২ টেবিল চামচ সাদা ভিনেগার
- ১ চা চামচ সয়াসস
- ২ চা চামচ চিনি
- হাফ চা চামচ শুকনা লঙ্কা কুচি
- ১ টেবিল চামচ তিলের তেল
- ২ চা চামচ নুন
কিভাবে তৈরি করবেনঃ
শসাগুলো ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিন। এরপরে এগুলো নুন দিয়ে মাখিয়ে পাতলা স্লাইস করে কেটে নিন। বাটিতে শসার সাথে বাকি সব উপকরণ একসাথে মাখিয়ে ৩০ মিনিট ঢেকে রাখুন। হয়ে গেল মজাদার শসার স্যালাড, এবারে পরিবেশন করুন। যাদের কাঁচা শসা খেতে খুব একটা ভালো লাগে না, জাপানি স্টাইলে বানানো এই স্যালাড তাদের ভালো লাগবে।
৫. পালং শাকের স্যালাডঃ
কি কি লাগবেঃ
- ১ আঁটি তাজা কচি পালং শাক
- দেড় টেবিল চামচ সাদা তিল
- দেড় টেবিল চামচ সয়া সস
- ২ টেবিল চামচ তিলের তেল
কিভাবে তৈরি করবেনঃ
পালং শাক ভাজা, তরকারি যদি খেতে ভালো না লাগে, তাহলে এই স্যালাডটি আপনার জন্য। জাপানি স্টাইলে বানানো এই পালং শাকের স্যালাড খেলে রুচির পরিবর্তন তো হবেই, সাথে পাবেন ভরপুর পুষ্টি। পালং শাক বেছে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন। এরপর মৃদু আঁচে ৫ মিনিট রান্না করুন। অন্য একটি কড়াইতে তিল হালকা টেলে নিন। এরপরে তিলে সয়া সস মিশিয়ে বেটে নিতে হবে। তিল বাটা এরপরে তিলের তেলের সাথে মেশাতে হবে। পালং শাকের প্রতিটি পাতা ৫ সেন্টিমিটার করে কেটে নিন। সবশেষে বাটিতে শাক আর তিলের ড্রেসিং একত্রে মেশালেই তৈরি পালং শাকের জাপানিজ স্যালাড।
৬. পাস্তা স্যালাডঃ
কি কি লাগবেঃ
- ৫০০ গ্রাম পাস্তা
- আধা কাপ মেয়োনিজ
- ১টি পেঁয়াজ পাতা কুচি
- স্বাদ মতো কাঁচা লঙ্কা কুচি
- ১ টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি
- ১ টেবিল চামচ পেঁয়াজ কুচি
- আধা কাপ ভুট্টা সেদ্ধ
- আধা টেবিল চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো
- ৩টি সেদ্ধ ডিম
- ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল
- আধা টেবিল চামচ চাট মশলা
- প্রয়োজন মতো নুন (পাস্তা সেদ্ধ করার জন্য)
কিভাবে তৈরি করবেনঃ
সাধারণ পাস্তাকে মুখরোচক করতে চাইলে এভাবে স্যালাড বানিয়ে দেখুন। ভালো লাগবে নিশ্চিত। পরিমাণ মতো জল ও নুন দিয়ে পাস্তা সেদ্ধ করে নিন। তারপর একটি বাটিতে ডিম ও চাট মশলা বাদে সব উপকরণ পাস্তার সাথে মিশিয়ে নিন। পরিবেশনের আগে উপরে সেদ্ধ ডিম টুকরা করে কেটে দিন এবং চাট মশলা ছিটিয়ে দিবেন। তবে যদি আপনি ডায়েটে থাকেন তাহলে মেয়োনিজের পরিবর্তে টক দই দেবেন। আর পাস্তার পরিমাণ একটু কমিয়ে নেবেন।
৭. মাছ ও আলুর স্যালাডঃ
কি কি লাগবেঃ
- ১ কাপ সেদ্ধ করা মাছের কিমা
- ১ কাপ সেদ্ধ আলুর টুকরা
- ১ কাপ সেদ্ধ করা মটরশুঁটি
- ২ টেবিল চামচ পেঁয়াজ কুচি
- হাফ কাপ মেয়োনিজ
- ১ চা চামচের এক চতুর্থাংশ গোলমরিচ গুঁড়ো
- ১ চা চামচ নুন
কিভাবে তৈরি করবেনঃ
এই স্যালাডের জন্য বড় মাছ বাছাই করতে হবে। যেকোন একটি বড় মাছ সেদ্ধ করে কাঁটা ফেলে দিয়ে কিমা করতে হবে। তারপর একে একে বাকি সব উপকরণ একসাথে ভালো করে মিশিয়ে নিন। স্যালাডের বাটি ঢেকে রেফ্রিজারেটরে রেখে দিন। খাওয়ার সময় নামিয়ে নিন। সুস্বাদু এই স্যালাড খাবার টেবিলে বৈচিত্র্য আনবে৷ আবার ছোট থেকে বড় সকলেই এই স্যালাড খেতে পারবে নিশ্চিন্তে। এর সাথে যদি সবজির আচার ১ কাপের এক চতুর্থাংশ মেশাতে পারেন তাহলে আরো ভালো হবে। তাহলে প্রোটিন, শর্করা, ভিটামিন সব একসাথে পাবেন।
৮. তরমুজের স্যালাডঃ
কি কি লাগবেঃ
- ৩ কাপ কিউব করে কাটা তরমুজ (দানা ছাড়ানো হতে হবে)
- ১ কাপ শসা কুচি
- ১ কাপের এক চতুর্থাংশ অলিভ অয়েল
- আধা চা চামচ কোষার সল্ট
- ১ কাপ ফেটা চিজ গুঁড়ো
- ২ টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
- আধা কাপ পেঁয়াজ কুচি
- আধা কাপ পুদিনা পাতা কুচি
কিভাবে তৈরি করবেনঃ
একটি ছোট বাটিতে তেল, ভিনেগার, এবং কোষার সল্ট নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। আরেকটি বড় বাটিতে বাকি উপকরণগুলো ঢেলে তার উপর তেল-ভিনেগারের ড্রেসিং দিয়ে দিন। বাটি টস করে অথবা চামচ দিয়ে স্যালাড উপর-নিচ করে নাড়ুন যাতে ড্রেসিং ভালো করে মিশে যায়। পরিবেশনের আগে চাইলে স্যালাডের উপর আরো পুদিনা পাতা কুচি ছড়িয়ে দিতে পারেন। মজাদার এই তরমুজের স্যালাড গরমের সময় খেতে দারুণ লাগবে। তবে ফেটা চিজ ভালো না লাগলে অন্য কোন চিজ দিতে পারেন বা চিজটাই সম্পূর্ণ বাদ দিতে পারেন।