ভাতের পাতে ডাল প্রত্যেক বাঙালীর ঘরের রোজকার খাবার। মাছ, মাংস ছাড়া ভাত খেলেও ডাল ভাত না হলে যেন কিছু একটা অসম্পূর্ণ থাকে। তাছাড়া ছোটবেলা থেকেই আমরা সবাই কমবেশি ‘ভাত-ডালে অনেক পুষ্টি’ এটা শুনে বড় হয়েছি। যা একদিকে সত্যি। তবে পুষ্টিগুণের বিচারের দিকে না গিয়ে আজ জেনে নিন কিভাবে ডাল খেলে এই পুষ্টি পাওয়া যায়।
উপরের শিরোনাম পড়ে অনেকেই ভাববেন এসব আবার কি ‘ডাল খাওয়ার আবার কোন নিয়ম হয় নাকি’! অবাক হওয়াই স্বাভাবিক। আমিও জানার পর অবাক হয়েছিলাম। তবে রিসার্চ করে দেখলাম যে না কথাটা ঠিক। ডাল খাওয়ার বিষয়ে তিনটে নিয়ম মেনে চললে এর লাভ বই ক্ষতি নেই।
ডাল খাওয়ার তিনটি নিয়মঃ
- ডাল বানানোর আগে তা ভিজিয়ে রাখা
- ডাল সঠিক ভাবে বানানো
- ডাল খাওয়ার সঠিক সময়
১. ডাল বানানোর আগে তা ভিজিয়ে রাখাঃ
মুসুর, মুগ, ছোলার ডাল, গ্রিন মুগ বা তরকা ডাল, রাজমা যে ডালই বানান না কেন! তা সেদ্ধ করার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর পরিষ্কার জলে ভিজিয়ে রেখে দিন। বিশেষ করে অঙ্গুর বের হয় যেসব ডাল থেকে তা একদিন আগেই ভিজিয়ে রাখুন। এই নিয়ম মানার দুটি ফায়দা বা উপকারিতা আছে।
- ডাল খেয়ে অনেকেরই গ্যাস হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। তা হওয়া কমে যাবে।
- আগে থেকে ভিজিয়ে রাখলে খুব দ্রুত সেদ্ধ হয়ে যায় ডাল।
২. ডাল সঠিক ভাবে বানানোঃ
ডাল যেহেতু রোজকার একটি পদ, তাই খুব সিম্পল ভাবে ফোঁড়ন দিয়ে বানানো হয়। বেশি রিচ করে তরকা ডাল, বা রাজমা বা ছোলার ডাল মাঝে সাজে বানানো হয়ে থাকে। কিন্তু স্পেশাল ভাবে না বানালেও রোজকার ডালে সামান্য হলুদ, হিং আর আদার কুচি মিশিয়ে ফোঁড়ন দিন। গ্যাস, অম্বল হবে না উপরন্তু ডাল টেস্টি হবে। আদা কুচি করার ঝামেলা এড়াতে চাইলে ঘরে আদার গুঁড়ো বানিয়ে রেখে দিন একবারে অনেকটা। এতে আপনার সময় বাঁচবে। চাইলে মাঝে মাঝে দুএক কোয়া রসুন কুচি করেও দিতে পারেন ডালে ফোঁড়ন দেওয়ার সময়।
৩. ডাল খাওয়ার সঠিক নিয়মঃ
ডাল হালকা খাওয়ার হলেও যখন তখন বিশেষ করে রাতের দিকে খেলে তা খাওয়ার নিয়ম আছে। ডাল হজম হতে একটু সময় নেয়। তাই রাতে ডাল খেলে ঘুমানোর ২ ঘণ্টা আগে তা খাবেন। দুপুরে ভাত ডাল খেয়েই ঘুমিয়ে যাবেন না। কারন এতে করে ওজন বারার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ডাল কখনই ঠাণ্ডা খাবেন না। সামান্য গরম করে ডাল খাবেন। ঠাণ্ডা ডাল হজমের সমস্যা তৈরি করে। খেতেও ভালো লাগে না।
ডাল খাওয়ার অন্যান্য টিপসঃ
- সপ্তাহে যদি রোজ বাড়িতে ডাল রান্না হয় তাহলে অন্তত ৫ রকমের ডাল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খান।
- একবারে অনেকটা ডাল বানিয়ে ফ্রিজে রেখে খাবেন না। এতে ডালের পুষ্টিগুণ কমে যায়।
- অনেক রাত করে ডিনার করেন যারা তারা বেশি রাতে ডাল খাবেন না।
- নানা রকমের সবজি দিয়ে বানানো ডাল দুপুরে খান রাতে না খাওয়া ভালো।
- মাসে ৫ বার ডালের অন্য ফর্ম যেমন ডালের বড়ি, ডালের পাঁপড়, ডালের আচার, ইডলি, ধোসা অবশ্যই খান।