আমরা কথায় কথায় ‘চা-টা’ বলে থাকি। এই ‘টা’ দিয়ে আসলে চায়ের সাথে স্ন্যাকসকে নির্দেশ করা হয়। কেউ কেউ চায়ের সাথে বিস্কুট খান, কেউ বা ফ্রাই, কেউ বা স্রেফ চা খান। আমরা নিজেদের অজান্তে চায়ের সাথে এমন অনেক খাবার খেয়ে থাকি যা পরবর্তীতে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আজকের পর্বে থাকছে চায়ের সাথে কোন ৪টি খাবার খেলে ঘটে যেতে পারে বড় বিপদ সে সম্পর্কে কিছু বিশেষ তথ্য।
ক. চায়ের সঙ্গে এই ৪টি খাবার খাবেন নাঃ
- ঠান্ডা জাতীয় যেকোনো খাবার
- তেলে ভাজা জাতীয় খাবার
- আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
- লেবু বা টক
১. ঠান্ডা জাতীয় যেকোনো খাবারঃ
চায়ের সাথে ঠান্ডা খাচ্ছেন? তাহলেই বিপদ নিশ্চিত। গরম চা আর ঠান্ডা খাবার একসাথে বা পরপর খেলে বদহজম, পেট ব্যথা, এমনকি বমি পর্যন্ত হতে পারে। হজমক্রিয়া দুর্বল হয়ে যায় বলে এমনটা হয়ে থাকে। তাই কখনোই চা খাওয়ার পরে ঠান্ডা জল, আইসক্রিম, কোমল পানীয়, দুধ, মিষ্টি দই, টকদই, বা অন্য কোন ঠান্ডা খাবার খাবেন না। দুধ চা এমনিতেও অম্বলের সৃষ্টি করে। চায়ের পরে ঠান্ডা কিছু খেতে চাইলে কমপক্ষে ৩০ মিনিট পরে খাবেন।
২. তেলে ভাজা খাবারঃ
বিকেলে চায়ের আড্ডায় ভাজাভুজি খেতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, চায়ের সাথে ভাজা খাবার হজমে ব্যাঘাত ঘটায়। সেই সাথে এটা খাদ্য থেকে পুষ্টি দেহে শোষিত হতে দেয় না। তাই আজ থেকে চায়ের সাথে বেসনের ভাজা খাবার, যেমন চপ, পাকোড়া, বেগুনি, কাটলেট ইত্যাদি খাওয়া বাদ দিয়ে দিন। সেই সাথে তেলে ভাজা নোনতা যেকোন খাবারও বাদ দিতে হবে। যদিও চায়ের সাথে চিকেন ফ্রাই, নাগেট, মিটবল, ফিশ ফ্রাই, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেলে কতটা ক্ষতি হবে তা এখন পর্যন্ত জানা যায় নি, তবুও এগুলো বাদ দেয়া উচিত যদি স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে চান। ভাজা খাবার খেতে চাইলে চা খাওয়ার ১ ঘন্টা পরে খেলে ভালো হয়। চাইলে আগেও খেতে পারেন তারপর সময়ের গ্যাপ দিয়ে চা খান।
৩. আয়রন সমৃদ্ধ খাবারঃ
আয়রন শরীরে রক্ত তৈরি করে, তাই দেহে আয়রনের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু চায়ের সাথে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেলে দেহে আয়রনের প্রবেশে বাধা পড়ে। কারণ চায়ে ট্যানিন এবং অক্সালেট নামক কিছু উপাদান উপস্থিত থাকে। এই উপাদানগুলো আয়রন শোষণে বাধা দেয়। লাল চায়ে বিদ্যমান ট্যানিনের পরিমাণ গ্রিন টি, সাদা চা, বা অন্য কোন চায়ে বিদ্যমান ট্যানিনের চাইতে কম। কাজেই আপনি যে ধরণের চা-ই খান না কেন, এর সাথে সবুজ শাকসবজি (বিশেষ করে পাতাজাতীয়), বিভিন্ন ধরণের বাদাম, দানা জাতীয় শস্য, মসুর ডাল ইত্যাদি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাবেন না। অনেকেই দুপুরের খাবার বা লাঞ্চ করার পর চা খান। এটা করা আজ থেকে বন্ধ করুন।
৪. লেবু বা টকঃ
লেবু চায়ের উপকারিতা অনেক। যারা নিয়মিত লেবু চা খান তারা জানেন এটা শরীরের জন্য কতটা দরকারী। কিন্তু এই লেবু চা আপনার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে, সেটা জানেন কি? চায়ে লেবুর রস মেশালে সেটা অ্যাসিডিক হয়ে যায়৷ আর এই চা খেলে পেট ফোলা, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, বা অম্বলের সমস্যা হতে পারে। তাই কখনোই খালি পেটে লেবু চা খাবেন না৷ খেতে হলে খাবারের ৩০ মিনিট বা ১ ঘন্টা পরে খাবেন। দিনের অন্যান্য সময়ের চাইতে সকালের নাশতার ৩০ মিনিট পরে লেবু চা খেলে বেশি ভালো হয়।