সকাল হল দিনের ব্যস্ততম সময়। আপনি যদি বাড়িতে প্রতিদিন রান্না করেন তবে এটি আরও কঠিন হয়ে যায় কারণ আপনাকে খাবারের পরিকল্পনা করতে হবে, এটি রান্না করতে হবে এবং টিফিনের জন্য বাক্সে প্যাক করতে হবে। গৃহিণীদের জন্য, যাদের পরিবারের একাধিক সদস্যের চাহিদা মেটাতে হয়, ব্যাচেলররা যারা নিজেদের খাবার নিজে তৈরি করে, কর্মজীবী মহিলাদের জন্য যাদের রান্নাঘর এবং বোর্ড রুমের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়। তাদের জন্য সকাল আরও কঠিন হয়ে ওঠে। তবে এই সহজ টিপসগুলি অবশ্যই রান্নাঘরের জীবনকে আরও সহজ করে তুলবে। ব্যস্ত সকালে রান্নাঘরের কাজ ও সময় কমিয়ে দেবে।
১. পেঁয়াজের ঝামেলা এভাবে সামলানঃ
বাঙালী ঘরের মোটামুটি বেশির ভাগ রান্নায় আলু আর পেঁয়াজের আধিপত্য বেশি। আলু নিয়ে পরে বলছি, আগে পেঁয়াজের কথা বলা যাক। সব রান্নায় পেঁয়াজ কেটে ভেজে রান্না করা হয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ। তাই এই ঝামেলা একবারে মিটিয়ে দিন। তো সকালে সময় বাঁচাতে পেঁয়াজ আগে থেকেই ভেজে রাখুন। কারন পেঁয়াজ আগে কেটে রাখতে চাইলেও পারবেন না। এটা কেটে বেশি সময় রাখা ভালো না। যেটা করা যায় সেটা ভাজা। ভাজা পেঁয়াজ নষ্ট হয় না আর অনেকদিন স্টোর করেও রাখা যায়। তাই একবারে অনেকটা পেঁয়াজ কেটে ভেজে ঠাণ্ডা করে এয়ার টাইট বক্সে রেখে দিন। রান্নার আগে পেঁয়াজ কাটা তারপর ভাজার সময় আর ফালতু নষ্ট করতে হবে না। চটজলদি রান্না শেষ করে নিতে পারবেন।
২. পেঁয়াজ-টমেটো মসলা আগে থেকে তৈরি করে নিনঃ
পেঁয়াজ-টমেটো মসলা বেশিরভাগ ভারতীয় খাবারের ভিত্তি তৈরি করে। আপনি মসলার একটি বড় ব্যাচ তৈরি করে ফ্রিজে রাখতে পারেন। সময় নষ্ট না করে এক চামচ এই মসলা দিয়ে ঝটপট সবজি তৈরি করতে পারেন। একবারে অনেকটা বানিয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখুন আর সারা সপ্তাহ ধরে ব্যবহার করুন। সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করে রাখলে এক সপ্তাহের বেশি ভালো থাকে। রান্নার স্বাদে কোন হেরফের হয় না।
৩. আগে থেকে ময়দা মাখানঃ
রুটি বা পরোটার জন্য, ময়দা আগে থেকে মাখিয়ে নিন এবং ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। মাখানো ময়দা ২-৩ দিন ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে এর বেশি নয়। তবে যদি আগে থেকে ময়দা মেখে রাখার পরিকল্পনা করেন তাহলে তা সামান্য গরম জলে মাখবেন। তার ভালো করে ময়াম দিয়ে ঢেকে ১০ মিনিট বাইরে রেখে দেবেন। এয়ার টাইট বক্সে ভরে তারপর ফ্রিজে রাখবেন।
৪. যা যা আয়োজন আগে করে রাখা যায়ঃ
রান্না করতে না যা সময় লাগে তার চেয়ে বেশি সময় লাগে রান্নার আয়োজনে। যেমন সবজি কাটা, মসলা বাটা, মাস মাংস পরিষ্কার করা। কোন কিছু ভেজানোর হলে তা ভেজানো। এসব আগের দিন রাতে করে নিন। রান্নার আয়োজন রাতে রান্না সকালে। এতে করে সকাল সকাল তাড়াহুড়ো করার আর দরকার পরবে না। শান্তি করে সব কিছু কম সময়ে করে নিতে পারবেন। পছন্দ মত খাবার বানাতে পারবেন। ট্রাই তো করে দেখুন একবার।
৫. পরে ব্যবহারের জন্য আলু ফ্রিজে রাখুনঃ
প্রতিদিনের উপাদান যেমন ডিম এবং আলু আগে থেকে সেদ্ধ করে পরে ব্যবহারের জন্য ফ্রিজে রাখা যায়। আলু সেদ্ধ করার ঝামেলা থাকবে না। আর সেদ্ধ করে রেখে আলু খাওয়া খুবই ভালো। এতে করে আলু থেকে যে সমস্যা হয় তা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। মোটা হওয়ার চান্স কমে তাই মনের সুখে আলুও খেতে পারেন। সকালে সময় অনেকটা বেঁচে যাবে আপনার এটা করে রাখলে।
আলু ছাড়াও রাজমা, মটর এবং ছোলার মতো জিনিস ৮-১০ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন, সামান্য লবণ দিয়ে সিদ্ধ করুন এবং পরে ব্যবহারের জন্য ফ্রিজে রাখুন।
৬. গোটা মসলা এভাবে রাখুনঃ
বাঁটাবাঁটির সময় এড়াতে হলে গোটা মসলা আগেই গুঁড়ো করে নিয়ে রাখুন। জিরে, ধনে, শুকনো লঙ্কা, গোলমরিচ ভাজুন এবং গুঁড়ো করুন। মসলা আগে থেকে গুঁড়ো করা হলে তা আর বাটার দরকার হয় না। পরিমাপ মত রান্নায় মিশিয়ে দিলেই কেল্লাফতে। এটি রান্নার সময় অনেক কমিয়ে দেয়। আদা রসুন সংরক্ষণ করে অনেকেই আগে থেকে রাখেন তাই এটা নিয়ে আর কিছু বললাম না।
৭. অতিরিক্ত উপাদান হিমায়িত করুনঃ
চাটনি, পেস্ট এবং ড্রেসিং প্রস্তুত করা, প্রতিদিন তাজা করা ক্লান্তিকর কাজ হতে পারে, তাই পরের বার, একটু অতিরিক্ত তৈরি করুন এবং ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করুন। সস, পিউরি তৈরি করুন এবং বরফের ট্রেতে আগাম সংরক্ষণ করুন।