কচুর কান্ড হোক বা পাতা, বাঙালি সংস্কৃতির এটি একটি বড় অংশ। আমাদের বাড়িতে প্রায়ই কচু শাক তৈরি হয়। কোলোকেশিয়ার কান্ডকে বলা হয় ‘কচু শাক’ এবং পাতাকে বলা হয় ‘কচুপাতা’। কচু শাকের ঘণ্ট, ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে কচু শাক সাধারণত বাড়িতে রান্না করা হয়। তবে চিংড়ি দিয়ে কচু শাক আলাদাই লাগে খেতে। গরম ভাতের এক দলায় এটি মেখে, মুখে দিলে সেই স্বাদের অনুভূতি সত্যি অপূর্ব।
আমার কাছে, কোনো কিছুই বাঙালি খাবারকে হারাতে পারে না। বিশেষ করে সেই পদ যদি কচু শাক দিয়ে রান্না হয়, আর মা যদি বানায়। অনেকদিন ধরে মায়ের কাছে বায়না করছিলাম চিংড়ি মাছ দিয়ে কচু শাকের। অবশেষে মা জননী কথা রাখলেন, আর বানালেন সেই অপূর্ব পদটি। আজ সেটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলে এলাম।
উপকরণঃ
- চিংড়ি ২৫০ গ্রাম
- কচু পাতা বা শাক ৫ টি মাঝারি আকারের
- গ্রেট করা নারকেল ২ টেবিল চামচ
- সরিষার পেস্ট ১ টেবিল চামচ
- পোস্ত বাটা ১ চা চামচ
- কাঁচা লঙ্কা ৩টি
- এক চিমটি বা দুটি হলুদ
- স্বাদ অনুযায়ী লবণ
- সরিষা তেল প্রয়োজন মত
- লেবুর রস ২ টেবিল চামচ
পদ্ধতিঃ
প্রথম ধাপঃ
চিংড়িগুলো পরিষ্কার করে খোসা ছাড়িয়ে নিন। চিংড়িতে এক চিমটি লবণ এবং হলুদ যোগ করুন। ভালোভাবে মেশান এবং ১০ মিনিটের জন্য আলাদা করে রাখুন।
দ্বিতীয় ধাপঃ
কচু পাতা ভালো করে ধুয়ে সূক্ষ্মভাবে কেটে নিন।কাটা পাতাগুলো এক টেবিল চামচ লবণ ও অর্ধেক লেবুর রস দিয়ে ৫-৬ মিনিট সিদ্ধ করুন। এই প্রক্রিয়াটি গলায় স্বাভাবিক চুলকানি দূর করবে যা কচু শাক খেলে অনেকের হয়।
তৃতীয় ধাপঃ
গ্রেট করা নারকেল, সরিষা, পোস্ত এবং কাঁচা লঙ্কা একসাথে শিলে পিষে বাটা বানিয়ে নিন। একটি প্যানে সরিষার তেল গরম করুন। তেল গরম হলে চিংড়ি যোগ করুন এবং অল্প আঁচে এক মিনিটের জন্য হালকাভাবে ভাজুন।
আপনার স্বাদ অনুযায়ী মিশ্রণে নারকেল-সরিষা-মরিচের পেস্ট, পোস্ত বীজের পেস্ট এবং লবণ যোগ করুন। ২-৩ মিনিট রান্না করুন।
চতুর্থ ধাপঃ
সেদ্ধ কচুয়া পাতা থেকে জল বের করে প্যানে যোগ করুন। প্যানটি ঢেকে আরও ৩-৪ মিনিট রান্না করুন। রান্না হয়ে গেলে এক চা চামচ সরিষার তেল এবং এক টেবিল চামচ লেবুর রস যোগ করুন। এটি ভালো করে মিশিয়ে দিন। চিংড়ি দিয়ে কচু শাক গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
গলা না ধরার টিপসঃ
কচু শাক খেলে অনেকেরই গলা ধরে বা কুটকুট করে। ফলে গলা চুলকানোর ভয়ে অনেকেই এটি খেতে চান না। কচু দিয়ে চিংড়ি মাছ বানান বা অন্যকোন পদ। দুটি টিপস বলে রাখছি খুব কাজে আসবে।
কচু শাকে সামান্য লেবুর রস দিয়ে সেদ্ধ করে নিলে এর গলা ধরা ভাব থাকে না। সেদ্ধ করা জল ফেলে দেবেন। ওটা রান্নায় দেবেন না।
খাওয়ার সময় যদি মনে হয় গলা চুলকাচ্ছে তাহলে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে নেবেন। কুটকুটে ভাব কেটে যাবে।