কেউ আপনার জন্য কষ্ট করে রান্না করলো, আপনি শুধু খেয়ে উঠে চলে গেলেন। তখন রাঁধুনীর কেমন লাগবে জাস্ট একবার ভাবুন তো। তিনি আশা করেছিলেন আপনার মুখ থেকে ভালো কিছু শোনার। সারাদিনের খাটাখাটুনির পরে একটু ভালো কথা শুনতে না পেলে পরিশ্রমটা বিফলে যায়।
রান্নার প্রশংসা করা উচিত, এতে রাঁধুনী উৎসাহ পান আরো যত্ন করে রান্না করার জন্য। কিন্তু কেউ কেউ এটাকে অনর্থক মনে করেন। ভালো হলে তো কথাই নেই, খারাপ হলে সরাসরি না বলে কায়দা করে এমনভাবে বলা উচিত যাতে তার খারাপ না লাগে। আবার ভালো হলে শুধু ‘ভালো হয়েছে’ বললে বেশ রসকষহীন লাগে।
আজকের আয়োজনে নিয়ে এসেছি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি টপিক – রান্নার প্রশংসা করার উপায়। কিভাবে কারো রান্নার প্রশংসা করবেন জানতে পড়ে ফেলুন এই লেখা।
কিভাবে কারো রান্নার প্রশংসা করবেনঃ
হোক ভরা মজলিসে বা একান্ত ডিনার টাইমে, শুধু ‘ভালো হয়েছে’ বা ‘মজা হয়েছে’ বললে নিজের আন্তরিকতা এবং রাঁধুনীর পরিতৃপ্তি ঠিক প্রকাশ পায় না।
রান্নার প্রশংসা যখন করবেন তখন কিছু সুন্দর বাক্য প্রয়োগ করবেন। সেটা মুখে বলতে পারেন বা চিরকুটে লিখেও দিতে পারেন। মুখের এক্সপ্রেশনও কিন্তু বাদ যাবে না। ভালো কথা বললেন কিন্তু রোবটের মতো মুখ করে, তাহলে কিন্তু হবে না।
১. ‘রান্নাটা খেতে দারুণ হয়েছে’
কারো রান্নার প্রশংসা করতে চাইলে এই কথাটাই প্রথমে মুখে চলে আসে। এই একটি কথাই রাঁধুনীর সকল কষ্ট সার্থক করতে সক্ষম। সহজ এই চারটি শব্দ একটু ঘুরিয়েও বলা যায়, হয়তো বাড়তি দুয়েকটি শব্দ যোগ করে। কিন্তু যাকে বলবেন সে আরো উৎসাহ পাবে রান্না করার জন্য।
২. ‘তোমার/আপনার রান্নার কোন তুলনা হয় না’
রান্নার প্রশংসাসূচক যতগুলো বাক্য আছে, তার মধ্যে এই বাক্যটিকে সর্বশ্রেষ্ঠ ধরা হয়। সরাসরি রাঁধুনীকে উদ্দেশ্য করা বলা হয় এটি। আপনার প্রিয়জনের রান্না এতোটাই স্পেশাল যে শুধু ঘ্রাণ থেকেই চোখ বুজে বলে দিতে পারেন। হরেক রকমের স্বাদ থেকে ঐ নির্দিষ্ট চিরচেনা স্বাদ যে খুঁজে পেয়েছেন, তার জন্যই এই বাক্যটি বলতে পারেন।
৩. ‘এরকম চমক কিন্তু আবারও পেতে চাই’
এই কথাটি বলতে পারেন যখন রাঁধুনী আপনার পছন্দ-অপছন্দ না জেনেই নিজের মতো রান্না করেছে, আর সেই রান্না খেয়ে আপনি মুগ্ধ হয়ে গেছেন তখন। আর এতোটাই মুগ্ধ হয়েছেন, পুনরায় এরকম সুস্বাদু রান্না খেতে চাইছেন। পরেরবার যে সেইম রেসিপিই হতে হবে তেমনটি কিন্তু না, হতে পারে সেটা ভিন্ন স্বাদের অন্য কোন রেসিপি। রেঁস্তোরার শেফকে এই কথাটি বলতে পারেন। ধরুন আপনি ওয়েটারের কাছে খাবারের রেকমেন্ডেশন চেয়েছেন। তখন রেঁস্তোরা থেকে বেস্ট ডিশটি সার্ভ করা হয়েছে আপনাকে। খাবার ভালো লাগলে ওয়েটার বা সরাসরি শেফকে কথাটি বলতে পারেন।
৪. ‘আবার এখানে আসছি/আসব কিন্তু এটা খেতে!’
আগের কথাটির সাথে এই কথাটি যোগ করতে পারেন, অথবা ঐ কথাটির পরিবর্তে এটি বলতে পারেন। রাঁধুনীর মধ্যে কোন ধরণের সংশয় বা উদ্বিগ্নতা কাজ করলে তা কেটে যাবে। রেঁস্তোরা বা অতিথির বাড়ি সব জায়গাতে এই লাইনটি বলা যায়৷
৫. ‘অসাধারণ! জাস্ট অসাধারণ’/’একেবারে লা-জওয়াব’
রান্না খেয়ে মুখের কথা সরে গেছে? কি বলবেন ভেবে পাচ্ছেন না? বলে ফেলুন এই কথাটি। যখন খাবার ধারণার বাইরে সুস্বাদু হয় তখনকার জন্য এই লাইনটি প্রযোজ্য।
৬. ‘এটা আপনি বানিয়েছেন/তুমি বানিয়েছো?’
একেবারে নতুন রাঁধুনী, কখনো আগে কিছু বানান নি, যখন একটি ডিশ ভালো রান্না করেন, তখন এই লাইনটি বলুন। এটি আসলে প্রশ্নসূচক প্রশংসা বাক্য। রাঁধুনী যে এতো ভালো রান্না করতে পারেন সেটা হয়তো আপনার ধারণার বাইরে ছিলো। তাই প্রশ্ন করার মাধ্যমে জানতে চাইছেন খাবারটি আসলেই উনি নিজে বানিয়েছেন নাকি কারো সাহায্য ছিলো সাথে। তবে সাবধান, কথাটি কিন্তু যথেষ্ট ঘাবড়ে দেয়ার মতো। তাই সাথে আরো কিছু পজিটিভ শব্দ বা বাক্য প্রয়োগ করলে রাঁধুনী উৎসাহ পাবে।
৭. ‘আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না যে এটা এতো ভালো হয়েছে’
আরেকটি চমৎকার প্রশংসা বাক্য, যেখানে অবিশ্বাস প্রকাশের মাধ্যমে রাঁধুনীর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব। রান্নার প্রশংসা তো হচ্ছেই, সাথে বিশ্বাসই হচ্ছে না যে তিনি কিভাবে এতোটা ভালো রান্না করেছেন।