স্বাস্থ্যকর খাবারগুলোর মধ্যে স্যুপের নাম শীর্ষে রাখা ছাড়া উপায় নেই। কারণ স্যুপ শুধু সুস্বাদুই নয়, এতে থাকে ক্যালরি, উচ্চ মাত্রার প্রোটিন উপাদান এবং ভিটামিন। সব বয়সের মানুষের কাছে স্যুপ খুবই প্রিয় খাবার। শিশুদের কাছেও বেশ পছন্দের ডিশ।
তবে বাজারের সব স্যুপ স্বাস্থ্যকর নয়, ঘরে বানানো স্যুপ হলো পুষ্টিকর। তাই চলুন জেনে নেই মজাদার স্যুপ রান্না করার সঠিক পদ্ধতি।
১. থিক থাই স্যুপঃ
থিক থাই স্যুপ বেশির ভাগ মানুষের পছন্দ। চিকেন স্টকে চিকেন, লবণ, আদা, সস, চিনি, লেবুর রস, কাঁচা মরিচ, চিংড়ি মাছ—মূলত এই উপাদান দিয়েও থাই স্যুপ করা যায়। এ স্যুপের আবশ্যকীয় উপাদান হলো থাই পাতা। এ পাতার গন্ধই স্যুপটিকে আলাদা করে অন্যান্য স্যুপ থেকে। অনেকেই অনেক ভাবে করে। কেউ চিংড়ি বাদ দিয়েও মডিফায়েড থাই স্যুপ করে।
২. ক্লিয়ার থাই স্যুপঃ
ক্লিয়ার থাই স্যুপের পুষ্টিকগুণ অনেক বেশি। ক্লিয়ার থাই স্যুপে কোনো সস ও কর্নফ্লাওয়ার ব্যবহার না করায় ক্যালরি কম। প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, জিংক—এ পুষ্টি উপাদানগুলো বেশি পাওয়া যায়। থিক থাই স্যুপে এই উপাদানের পাশাপাশি কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালরি বেশি পাওয়া যায়। তাই ডায়বেটিক রোগী ও ওজন কমাতে ক্লিয়ার থাই স্যুপ ভালো।
৩. ক্লিয়ার ভেজিটেবল স্যুপঃ
সব রকম রঙিন সবজি ব্যবহার করে এই স্যুপ বানানো যায়। ভেজিটেবল স্টক ব্যবহার করলে এই স্যুপ একেবারে ভেজিটেরিয়ানের জন্য পারফেক্ট হয়। এই স্যুপের ভালো দিক হলো ফ্যাট খুব সামান্য বা নেই বললেই এই স্যুপে সবজির ব্যবহারের ওপর পুষ্টিগুণ নির্ভর করে।
৪. ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ চিকেন বোন স্যুপঃ
চিকেন স্যুপের স্বাদ তো সকলেই জানা। অধিক ক্যালসিয়ামের যোগান দিতে কিছু মুরগির হাড় সংগ্রহ করে রাখুন বা মুরগি থেকে যা অবশিষ্ট থাকে তা ব্যবহার করতে পারেন। পরিমাণমত জল দিয়ে একটি পাত্রে হাড়গুলি কয়েক ঘন্টা ধরে সিদ্ধ করে এর স্টু দিয়ে স্যুপ করে নিন।
৫. স্যুপ দই মালাইঃ
আপনার স্যুপটি মালাইযুক্ত হলে কেমন হয়? এটা পরিবারে সবার কাছে একটা দারুন আশ্চর্যের ব্যাপার হবে। আমি জানি আপনিও এ বিষয়টি জানতে আগ্রহী। শুধুমাত্র পরিমাণমত টক দই যোগ করে আপনি পার্থক্যের একটি বিশ্ব তৈরি করতে পারেন! যেকোনো ধরনের প্লেইন দইও ক্রিমের মতোই কাজ করবে। যতটা বা যতটা কম স্বাদ চান যোগ করুন। এতে স্যুপে আসবে ভিন্ন স্বাদ।
৬. ক্রিমি মেয়োনিজ স্যুপঃ
আপনি কি আপনার স্যুপকে একটি ভিন্ন স্বাদ বা একটি ভিন্ন রুপ দিতে চাচ্ছেন? এটা আপনি খুব সহজে এবং অল্প সময়ে ঘরে থাকা উপকরন দিয়েই করতে পারেন। একটি ডিম দিয়ে মেয়োনিজ তৈরি করে তা আপনার স্যুপে দিতে পারেন এতে করে স্যুপটি দেখতে অনেক ক্রিমি হবে এবং সেই সাথে সাথে এর স্বাদ ও পরিবর্তন হয়ে যাবে।
৭. চিকেন ও ভেজিটেবল স্যুপঃ
চিকেন স্টক ও ভেজিটেবল মিলিয়েও স্যুপ তৈরি করা যায়। যাদের প্রোটিন চাহিদা বেশি, তাদের ভেজিটেবল স্যুপ সবজি আর চিকেন স্টক দিয়ে করা যায়। এতে করে চিকেন ও ভেজিটেবল উভয়ের স্বাদ ও পুষ্টি এক সাথে পাওয়া যায়।
৮. টমেটো স্যুপঃ
স্যুপের স্বাদ বৃদ্ধিতে টমেটোর কোন জুরি নেই। সাধারন কর্নফ্লাওয়ার স্যুপেও যদি টমেটো ব্যবহার করা হয় তাহলে পুরো স্যুপটাকে করে তোলে আরো বেশি মজাদার ও পুষ্টিকর।
৯. কারিপাতার ব্যবহারঃ
স্যুপের স্বাদ বৃদ্ধিতে ও একে আরো বেশি লোভনীয় করতে এতে ব্যবহার করতে পারেন বিভিন্ন রকম পাতা। যেমন ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, কারিপাতা ইত্যাদি। এগুলো ব্যবহারে স্যুপে আসে এক ভিন্ন ঘ্রাণ যা এক আরো লোভনীয় করে।
১০. শাক দিয়ে স্যুপঃ
বিভিন্ন শাক দিয়ে স্যুপ করা যায়। এর জন্য পছন্দমতো শাক সিদ্ধ করে নিন। এরপর আপনার পছন্দ মতো যে কোনো মশলা যোগ করেও এর স্বাদে পরিবর্তন আনতে পারেন।
১১. নুডুলস স্যুপঃ
স্বাদ যে কোন স্যুপের পরিবর্তনে এতে দিতে পারেন নুডুলস। নুডুলসও স্যুপের স্বাদ বৃদ্ধি করে।
১২. ডিম এর ব্যবহারঃ
স্যুপকে আরো বেশি মজাদার ও পুষ্টিকর করতে এতে একটি ডিম ফেটে দিতে পারেন।
১৩. বার্লির ব্যবহারঃ
আপনি কি আপনার স্যুপটি ঘন খেতে পছন্দ করেন? তাহলে এতে যোগ করতে পারেন বার্লি। এটা আপনার স্যুপের স্বাদ আরো বাড়িয়ে দিবে।
১৪. লেবুর ব্যবহারঃ
স্যুপকে আরো বেশি মজাদার করতে হাতের কাছে আর কিছু না থাকলে এতে দিয়ে দিন কিছুটা লেবুর রস। স্বাদের পরিবর্তন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।
১৫. মশলার ব্যবহারঃ
যে কোন খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দিবে সঠিক মশলার ব্যবহার। তাই স্যুপকে ভিন্ন স্বাদ দিতে এতে যোগ করতে পারেন বিভিন্ন মশলা।