skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

ঘরে বসে টিফিন সার্ভিস ব্যবসা কিভাবে করবেন জানুন স্টেপ বাই স্টেপ

টিফিন সার্ভিস ব্যবসা

আপনি কি উদ্যোক্তা হতে চান? আপনার কি টিফিন সার্ভিস ব্যবসায় আগ্রহ আছে? যদি আপনি ঘরে বসে টিফিন সার্ভিস ব্যবসা কিভাবে করবেন সে সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
ক্লাউড কিচেন বা অনলাইন ফুড স্টোরের মত টিফিন সার্ভিসও একটি লাভজনক ব্যবসা। সবগুলোরই কাজ একরকম – কাস্টমারের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া।

তবে এখানে একটু পার্থক্য আছে। ক্লাউড কিচেন ও অনলাইন ফুড বিজনেসে আপনি রান্না আগে করে রাখবেন, কাস্টমাররা তাদের পছন্দমতো খাবার অর্ডার করবে। আর টিফিন সার্ভিস বিজনেসে আপনাকে রান্নার আগে কাস্টমারের সুবিধা-অসুবিধা মাথায় রেখে রান্না করতে হবে। আবার ক্লাউড কিচেনের রান্না সব ধরণের কাস্টমারের জন্য প্রযোজ্য, কিন্তু টিফিন সার্ভিস বিজনেসে টার্গেটেড কাস্টমার মূলত চাকুরীজীবি ও পিজি স্টুডেন্টরা। আজকের আর্টিকেলে পাবেন টিফিন সার্ভিস বিজনেসের জন্য প্রয়োজনীয় টিপস। তাই স্কিপ না করে পুরোটা পড়ে ফেলুন। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের কাজে লাগবে।

ঘরে বসে টিফিন সার্ভিস ব্যবসা কিভাবে করবেন

১. প্ল্যানিং করুনঃ

ঘরে বসে টিফিন সার্ভিস করতে গেলে সবার আগে প্ল্যানিং করে নিবেন। প্ল্যানিংয়ের মধ্যে কোথায় টিফিন সাপ্লাই দিবেন, কোথায় রান্না করবেন, কি কি রান্না করবেন, কতজনের জন্য রান্না করবেন, কিভাবে ডেলিভারি দিবেন সবই পড়বে। সেই সাথে মার্কেট রিসার্চটাও করে ফেলবেন। মার্কেট রিসার্চ আপনাকে চাহিদা অনুযায়ী ব্যবসা প্রসার করতে সাহায্য করবে। যেমন ধরুন আপনার এরিয়ায় হয়তো কোন কর্পোরেট অফিস আছে, ওখানে মিটিং ডে গুলোতে একটু ভারী খাবার বা ফাস্ট ফুডের ডিমান্ড থাকে। সেই অনুযায়ী আপনার মেনু ঠিক করে ফেলবেন এবং রান্না করবেন। প্ল্যানিংয়ের জন্য একটু সময় লাগবে, বিশেষ করে মার্কেট রিসার্চ করার জন্য আপনাকে আশপাশের এরিয়া ঘুরে ঘুরে খাবারের ডিমান্ড বুঝে নিতে হবে।

২. কুকিং স্কিল বাড়ানঃ

টিফিন সার্ভিসে সাধারণত ভাত, মাছ, ডাল, মাছ, মাংস, সবজি সাপ্লাই করা হয়ে থাকে। তবে সবসময় সব জায়গায় এসব খাবার না-ও চলতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনার উচিত বিভিন্ন ধরণের খাবার রান্নায় পারদর্শীতা অর্জন করা। দেশী-বিদেশী সব ধরণের খাবার রান্না করতে পারলে কাস্টমারের সন্তুষ্টি অর্জন ও ব্যবসার প্রসার সম্ভব হবে। আরেকটি বিষয় যেটা মাথায় রাখবেন সেটা হল, বিভিন্ন রেসিপি রান্নার স্কিলের পাশাপাশি হেলদি ফুড রান্না করার চেষ্টা করা। পুষ্টিকর খাদ্য উপকরণ দিয়ে রান্না করা খাবারও অস্বাস্থ্যকর হতে পারে অতিরিক্ত তেল-মশলা ব্যবহারের কারণে। তাই আপনার কাস্টমারদের মধ্যে কারা কম তেল-মশলার খাবার বা হেলদি সালাদ চাচ্ছেন সেটা লিস্ট করে ফেলুন। সেই অনুযায়ী রান্না করার প্র্যাকটিস করুন।

৩. মেনু ঠিক করুনঃ

এবারে মেনু ঠিক করার পালা। প্রতিদিন শুধু সবজি বা মাছ-মাংস রান্না করা যেমন অসম্ভব, তেমনি প্রতিদিন সবজি, মাছ, মাংস সব মিলিয়েও রান্না করাও সময়সাপেক্ষ। সেক্ষেত্রে সাপ্তাহিক মেনু ঠিক করে রান্না করবেন। এতে ঝামেলাও কম হবে, সময়ও অনেক বেঁচে যাবে। সপ্তাহে তিনদিন সবজির আইটেম করতে পারেন, আর বাকি দিনগুলোতে আমিষের আইটেম। এভাবে প্ল্যান করলে আপনার বাজেটও অনুকূলে থাকবে। আর প্রতিদিন যদি সালাদের একটি আইটেম রাখতে পারেন তাহলে ভালো হয়।

৪. প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে ফেলুনঃ

টিফিন সার্ভিসের জন্য সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে পরিবহন খরচ। আপনি কোন একটি ডেলিভারি সিস্টেমের সাথে কথা বলে মাসিক বা কমিশন ভিত্তিতে ডেলিভারি পাঠানোটা নিশ্চিত করলেন। কিন্তু টিফিন দেয়ার জন্য আপনাকে একটু পয়সা খরচ করতে হবে।

টিফিন সার্ভিস দেয়ার জন্য স্টেইনলেস স্টিলের টিফিন বক্স বা ক্যারিয়ারের কোন বিকল্প নেই। এতে খাবার রাখলে ঠিক থাকেও অনেকক্ষণ। প্লাস্টিক বা ওয়ান-টাইম বক্স টেকসই না, গন্তব্যস্থলে যাওয়ার আগেই রাস্তায় পড়ে নষ্ট হয়ে যাবে। আবার লো-কোয়ালিটি স্টিলে খাবার রাখলে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।

এ তো গেল টিফিন ক্যারিয়ারের কথা। রান্না করার জন্য প্রয়োজনীয় যা বাসনকোসন লাগবে তা কিনতে যেন ভুল না হয়। যেহেতু অনেক লোকের খাবার একসাথে রান্না করবেন সেহেতু বড় বড় ডেকচি, কড়াই, চামচ ইত্যাদি কিনে ফেলবেন। সেই সাথে ফুড প্রসেসর, মিক্সার, ব্লেন্ডার কিনে ফেললেও মন্দ হয় না। এতে রান্নায় সময় কম লাগবে।
আর অবশ্যই খাবারের পরিমাণ বুঝে প্রতিদিন বাজার করার চেষ্টা করবেন। ফ্রেশ আইটেম দিয়ে রান্না করলে খাবারের স্বাদ বাড়বে আর নষ্টও হবে না। একবারে অনেক বাজার করে, বাসি আইটেম দিয়ে খাবার রান্না করবেন না।

৫. পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুনঃ

ঘরে বসে রান্না করছেন বলে পরিচ্ছন্নতার দিকে খুব বেশী নজর দিবেন না, সেটা ভাবা কিন্তু ভুল। সামান্য একটু ভুলেও কিন্তু আপনার টিফিন সার্ভিস ব্যবসার বারোটা বেজে যেতে পারে। তাই রান্না করার সময়ে গ্লাভস, হেড ক্যাপ, অ্যাপ্রন, ফেস মাস্ক অবশ্যই ব্যবহার করবেন। রান্নাঘর প্রতিদিন পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখবেন। যেসব বক্সে করে খাবার পাঠাবেন সেগুলোও প্রতিদিন সাবান জলে ভালো করে ধুয়ে নিবেন।
বাইরের ডেলিভারি সার্ভিস দিয়ে খাবার পাঠালে পরিচ্ছন্নতার চেকিং সম্ভব না। কিন্তু যদি নিজেদের লোক দিয়ে খাবার ডেলিভারি করেন, তাহলে খেয়াল রাখুন তাদের পরিধেয় বস্ত্রও যেন পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত থাকে, মুখে মাস্ক থাকে, এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে।

৬. লাইসেন্স ও ইন্স্যুরেন্স করুনঃ

যেকোন বিজনেসের জন্য ইন্স্যুরেন্স খুবই প্রয়োজনীয়। কারণ বিজনেসে যেকোন সময় অঘটন ঘটতে পারে, ইন্স্যুরেন্স সেই ধকল কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। আপনার টিফিন সার্ভিস ব্যবসার জন্যও ইন্স্যুরেন্স করে রাখবেন। এ কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে ভালো কোন লোকাল ইন্স্যুরেন্স এজেন্ট। ইন্স্যুরেন্সের পাশাপাশি ফুড অ্যান্ড সেফটি লাইসেন্সটাও করিয়ে রাখবেন। তবে এখানে একটি ব্যাপার আছে।
ব্যবসার ধরণের উপর নির্ভর করতে পারে লাইসেন্স করা লাগবে কিনা। টিফিন সার্ভিস ব্যবসা থেকে যদি বছরে আপনার আয় ১০-১২ লক্ষ টাকা হয় তাহলে লিগ্যাল লাইসেন্স নেয়া বাধ্যতামূলক। আর লাইসেন্স থাকলে যতটা নিশ্চিন্তে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন, লাইসেন্স ছাড়া ততটা নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন না। তাই বছরে আয় যতটুকুই হোক না কেন, অভিজ্ঞ কারো সাথে এ ব্যাপারে পরামর্শ করে নিবেন।

৭. মার্কেটিংয়ে নজর দিনঃ

টিফিন সার্ভিস ব্যবসার সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে মার্কেটিং ও অ্যাডভারটাইজিং। এক্ষেত্রেও কাস্টমারের ধরণ বুঝে মার্কেটিং করতে হবে। যেহেতু আপনার টার্গেট কাস্টমার থাকবে পিজি স্টুডেন্ট ও চাকুরীজীবি, এবং এরা স্মার্টফোনে বেশী অ্যাক্টিভ থাকে, সেহেতু সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং ও অ্যাডভারটাইজিং করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। চাইলে প্যামফ্লেট বা খবরের কাগজে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেও অ্যাড দিতে পারেন, তবে এতে ব্যয় বেশী এবং কাস্টমার পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।

আরেকটা কাজ যেটা করতে পারেন সেটা হল, টিফিন সার্ভিস অ্যাপ বানিয়ে মার্কেটিং করা। অ্যাপে অপশন রাখবেন মিল প্ল্যান, মিল টাইপ, মিল কোয়ান্টিটি, এবং সাবস্ক্রিপশন। এতে কাস্টমারের কাছে আপনার সার্ভিস পৌঁছানো সহজ হবে আবার কাস্টমারের চাহিদা বুঝতেও সহজ হবে।

স্বচ্ছতা বজায় রাখতে রান্নায় কি কি ব্যবহার করেছেন বা করবেন তা অ্যাপে লিখিত আকারে বা চ্যাটের মাধ্যমে কাস্টমারের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এতে করে আগে থেকে বুঝতে পারবেন আপনার ফুড আইটেমে কাস্টমারের অ্যালার্জি বা অন্য কোন সমস্যা আছে কিনা।

Article Tags:
·
Article Categories:
Food-kitchen-insights

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *